Advertisement
E-Paper

‘লাইন ও লেংথ শুধরেই সফল ইশান্তরা’

ওভালে নাটকীয় ঘটনা কিছু কম নেই। একটা কাহিনি মনে পড়ে যাচ্ছে। ডব্লিউ জি গ্রেস যখন ওভালে ব্যাট করতেন, তখন টিকিটের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হত। আবার গ্রেস যখন ফিল্ডিং করতেন, সেই দাম কমে যেত।

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:২৯
দুরন্ত: ইশান্ত শর্মা ও যশপ্রীত বুমরার দাপটে বিপর্যস্ত ইংল্যান্ড। ছবি: রয়টার্স।

দুরন্ত: ইশান্ত শর্মা ও যশপ্রীত বুমরার দাপটে বিপর্যস্ত ইংল্যান্ড। ছবি: রয়টার্স।

ইংল্যান্ড ১৯৮-৭

এই সেই ওভাল, যেখানে জীবনের শেষ টেস্টে আর চার রান করলে ডন ব্র্যাডম্যানের গড় একশো হয়ে যেত। এই সেই ওভাল, যেখানে জীবনের শেষ টেস্ট খেলতে নেমে সেঞ্চুরির দিকে এগোচ্ছিলেন অ্যালেস্টেয়ার কুক। কিন্তু যশপ্রীত বুমরার একটা বলে থেমে গেল তাঁর ইনিংস।

ওভালে নাটকীয় ঘটনা কিছু কম নেই। একটা কাহিনি মনে পড়ে যাচ্ছে। ডব্লিউ জি গ্রেস যখন ওভালে ব্যাট করতেন, তখন টিকিটের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হত। আবার গ্রেস যখন ফিল্ডিং করতেন, সেই দাম কমে যেত।

এই ওভালে আমাদের সুনীল গাওস্করের ডাবল সেঞ্চুরি আছে। নানা কীর্তির এই মাঠে তাই মনে হচ্ছিল, কুকও হয়তো একটা কিছু করে দেখাবেন। কিন্তু শেষ টেস্টের প্রথম দিনটা কুকের হয়েও হল না। শুক্রবার চা বিরতির পরে ভারতীয় পেসাররা আগুনে বল করায়।

চা বিরতিতে ইংল্যান্ডের স্কোর ছিল এক উইকেটে ১২৩। এই সিরিজে সব চেয়ে ভাল স্কোর। তখন মনে হচ্ছিল, বড় রান তুলে দেবে জো রুটের দল। কিন্তু চা বিরতির পরে বুমরা, ইশান্ত শর্মা এবং রবীন্দ্র জাডেজা মিলে একটা সময় ৪৮ রানের মধ্যে ইংল্যান্ডের ছয় উইকেট তুলে নিলেন। ১৩৩-১ থেকে স্কোর দাঁড়ায় ১৮১-৭। দিনের শেষে ইংল্যান্ড সাত উইকেটে ১৯৮। চা বিরতির পরে উঠল ৭৫ রান। ছয় উইকেটের মধ্যে ইশান্ত নিলেন তিনটি, বুমরা দু’টি এবং জাডেজা একটি।

কী এমন হল যাতে ভারতীয় বোলাররা এমন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলেন? এই টেস্টে আবার টস হেরেছিলেন বিরাট কোহালি। এই নিয়ে টানা পাঁচ বার। যা এক কথায় অবিশ্বাস্য। শুরুর দু’ঘণ্টায় ভারতীয় ক্রিকেটারদের শরীরী ভাষাও আমার ভাল লাগছিল না। পেসাররা ময়দানের ভাষায় একটু ‘ছোট’ বল করছিলেন। মানে, শর্ট ফেলছিলেন। লাইনেও গণ্ডগোল হচ্ছিল। ব্যাটসম্যানরা হয় ছেড়ে দিচ্ছিলেন, নয় তো খেলার জন্য সময় পেয়ে যাচ্ছিলেন। লাঞ্চের পর থেকেই কিন্তু ছবিটা বদলে যেতে থাকে। ওই সময় মহম্মদ শামি ন’ওভারের একটা স্পেল করলেন, যা অনেক দিন মনে থাকবে। উইকেট না পেলেও ওই সময় মইন আলি-কে এগারো বার পরাস্ত করেছিলেন শামি। বাকিরাও ঠিক জায়গায় বল ফেলতে লাগলেন।

ফলটা পাওয়া যেতে লাগল চা বিরতির পর থেকে। বুমরা-ইশান্তের গতি আর সুইংয়ের হদিশ পাচ্ছিলেন না ব্যাটসম্যানরা। বুমরার সেই ছোট আউটসুইং বাঁ হাতি কুকের ক্ষেত্রে সামান্য ঢুকে আসে। ইংল্যান্ড ওপেনারের ব্যাটের কানায় লেগে বল স্টাম্প ছিটকে দেয়। ওই ওভারের পঞ্চম বল ইনসুইং। যা এ বার রুটের পা পেয়ে যায় উইকেটের সামনে। এর পর দুরন্ত ইশান্ত শর্মা অফস্টাম্প লাইনে আক্রমণ করে তিনটি উইকেট তুলে নেন। পেসারদের দাপটের মাঝে ঠিক লাইনে বল করে বেন স্টোকসকে ফিরিয়ে দেন রবীন্দ্র জাডেজা। বাঁ হাতি স্পিনার শুরুতে কিটন জেনিংসকে ফেরালেও মিডল-লেগ লাইনে বল করছিলেন। সেই লাইন অফ-মি়ডলে নিয়ে আসার পরেই ফের সাফল্য। চা বিরতির পরে জাডেজার বলে এলবি়ডব্লিউ স্টোকস।

তবে আর অশ্বিনের জায়গায় দলে আসা জাডেজার প্রধান কাজটা ছিল রান আটকানো। সেটা এই বাঁ-হাতি স্পিনার ঠিকঠাক করে গিয়েছেন। ইংল্যান্ড প্রথম দিকে উইকেট না হারালেও রান সে রকম তুলতে পারেনি। ফলে একবার উইকেট পড়তে শুরু করার পরে চাপটা বেড়ে যায় ইংল্যান্ডের ওপর।

ভারতকে একটা বিষয় সতর্ক থাকতে হবে। এই টেস্টে এখন পর্যন্ত ২৫ রান বাই হয়েছে। উইকেটকিপার ঋষভ পন্থকে আরও উন্নতি করতে হবে। আমরা যে রকম অল্প রানের ব্যবধানে টেস্ট হারছি, তাতে এই সব রান গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়।

Cricket Test India England India vs England Ishant Sharma Jaspreet Bumrah
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy