আইপিএলের একটা দীর্ঘ মরসুম শেষ হল। বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়া ভারতীয় ক্রিকেটারেরা যথেষ্ট ম্যাচ প্র্যাক্টিসও পেয়ে গেল। এ বার ওদের এক ধরনের ক্রিকেট থেকে অন্য ধরনের ক্রিকেটে মানিয়ে নিতে কোনও সমস্যা হবে না।
এ বারের বিশ্বকাপটা নিয়ে আমি একটু বেশি উত্তেজিত আছি, কারণ ২০ বছর বাদে প্রতিযোগিতাটা ফের হচ্ছে ইংল্যান্ডে। আর ইংল্যান্ডের কথা উঠলেই ভেসে ওঠে ১৯৮৩ সালের সেই স্মরণীয় মুহূর্তের কথা। ভারতের বিশ্বজয়ের ওই স্মৃতি এখনও আমার মনে টাটকা।
বিশ্বকাপ অভিযানে সম্ভবত এ বারই সেরা দল পাঠাচ্ছে ভারত। অনেকে অবশ্য প্রশ্ন তুলছেন, ৫০ ওভারের বিশ্বকাপের আগে কুড়ি ওভারের আইপিএল খেলে কতটা লাভ হবে ভারতীয় ক্রিকেটারদের? কোনও রকম সমস্যা হবে না তো বিশ্বকাপে? আমি বলব, এক ফর্ম্যাট থেকে অন্য ফর্ম্যাটে মানিয়ে নিতে ভারতীয় ক্রিকেটারদের সমস্যা হবে না। ওরা যথেষ্ট অভিজ্ঞ।
এই মুহূর্তে অবশ্য বিশ্বের বেশির ভাগ দলই কোনও না কোনও ভাবে ওয়ান ডে ম্যাচ খেলতে ব্যস্ত। আর ভারত বিশ্বকাপ খেলতে যাবে সোজা আইপিএল খেলে উঠে। তাতে অবশ্য ভারতের কোনও সমস্যা হবে বলে আমার মনে হয় না। ভারতীয় দলের সার্বিক দক্ষতা যথেষ্ট বেশি। ওদের ইতিবাচক থাকতে হবে আর নিজেদের ক্ষমতায় বিশ্বাস রাখতে হবে।
তবে আইপিএলের জেরে একটা ধাক্কা খেতে হতে পারে ভারতকে। চোটের কারণে ছিটকে যেতে হতে পারে কেদার যাদবকে। যদি সত্যি সেটা হয়, তা হলে খুব দুঃখজনক ব্যাপার হবে। গত দু’বছরে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে ও ভারতের সম্পদ হয়ে উঠেছে। যদি যাদব শেষ পর্যন্ত সুস্থ না হয়ে ওঠে, তা হলে ওর জায়গায় আমি অম্বাতি রায়ডুকে দলে নিতাম।
ঋষভ পন্থকে বিশ্বকাপের দলে রাখা উচিত ছিল কি না, এই নিয়ে প্রচুর কথা উঠছে। আমি বিশ্বাস করি, পন্থ অনেক দূর যাবে। ওর প্রতিভা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তবে ওকে আরও শিখতে হবে। অভিজ্ঞতা বাড়লে পন্থ আরও পরিণত হবে। ওকে শিখকে হবে, কী ভাবে ম্যাচ শেষ করে আসতে হয়, কী ভাবে ম্যাচ বাঁচাতে হয় আর কী ভাবে ম্যাচ জেতাতে হয়। যত অভিজ্ঞতা বাড়বে, তত এই জিনিসগুলো শিখে নিতে পারবে পন্থ। ক্রিকেটার হিসেবে আরও উন্নত হবে।
যাই হোক, ভারতীয় দলটার কথায় আসি। আমার মনে হয়, ভারতীয় দলে যথেষ্ট ভারসাম্য আছে। সব রকম পরিস্থিতির সামলানোর জন্য ক্রিকেটার আছে। হ্যাঁ, আইপিএলের মতো একটা দীর্ঘ প্রতিযোগিতা খেলে আসার ফলে ভারতীয় ক্রিকেটারেরা হয়তো একটু ক্লান্ত থাকবে। কিন্তু বিশ্বকাপে খেলতে নামলেই সে সব ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে। নতুন করে তেতে উঠবে ছেলেরা।
সাম্প্রতিক কালে এত ভাল এবং ভারসাম্যযুক্ত ভারতীয় বোলিং আক্রমণ আর দেখিনি। যেখানে গতি আছে, কার্যকরী স্পিন আছে আবার চমকপ্রদ রিস্ট স্পিনও আছে। আমি যদি নির্বাচক হতাম, ভারতীয় দলে বিজয় শঙ্করের জায়গায় রায়ডুকে খেলাতাম। আর প্রথম এগারোয় চার নম্বরে নামাতাম কেদার যাদবকে। আর যাদব খেলতে না পারলে চারে অবশ্যই আসত রায়ডু।
রায়ডুকে নিয়ে আমার ব্যক্তিগত মত যাই হোক না কেন, দিনের শেষে এটা স্বীকার করতেই হবে যে, এই ভারতীয় দলে দক্ষ ক্রিকেটারের কোনও অভাব নেই। অনেকেই বলছেন, ব্যাটিং অর্ডারে প্রথম তিন জনের উপরে ভারত একটু বেশি মাত্রায় নির্ভরশীল। আমি এই ধারণায় বিশ্বাসী নই। দক্ষ ব্যাটসম্যানের অভাব নেই দলে।
বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ওঠা চার দলের মধ্যে যে ভারত থাকবে, এই নিয়ে আমার মনে কোনও সন্দেহ নেই। আমার চার সেমিফাইনালিস্ট হল, ভারত, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা বা নিউজ়িল্যান্ড। (টিসিএম)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy