Advertisement
E-Paper

কুকদের ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে দাঁড় করাল শামিরা

মোহালির পিচে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল ইংল্যান্ড। টস জেতার অ্যাডভান্টেজ পেয়েও দুই ইনিংসেই ওরা নিজেরা নিজেদের কাজটা অসম্ভব কঠিন করে তুলল।

রবি শাস্ত্রী

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৪:৩২
শামিদের দাপটে এক দিন আগেই টেস্ট জয়।

শামিদের দাপটে এক দিন আগেই টেস্ট জয়।

মোহালির পিচে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল ইংল্যান্ড। টস জেতার অ্যাডভান্টেজ পেয়েও দুই ইনিংসেই ওরা নিজেরা নিজেদের কাজটা অসম্ভব কঠিন করে তুলল।

টেস্টের প্রথম দিন অ্যালিস্টার কুকের দু’টো ক্যাচ ছাড়াও আরও দু’টো ক্যাচ ফস্কেছিল ভারতীয় ফিল্ডাররা। কিন্তু অতগুলো প্রাণ পাওয়ার সুযোগ যদি কোনও ব্যাটিং সাইড নিতে না পারে, তা হলে তো তাদের যন্ত্রণাকক্ষে সময় কাটাতেই হবে। ইংল্যান্ডেরও ঠিক তাই হল। ওই পরিমাণ সুযোগ পাওয়ার পরেও যদি মোহালির মতো পিচে বোর্ডে ৩৫০-এর কম ওঠে, তার খেসারত তো দিতেই হয়।

ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের ভুলত্রুটি থাকলেও তাতে ভারতীয় বোলারদের কৃতিত্ব কিন্তু এতটুকু কমে না। বিরাট কোহালির পাঁচ বোলারই ধূর্ত শিকারির দক্ষতায় নিজেদের শিকারের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। ভারতের স্পিন ত্রয়ী এক দিকে রহস্যময় মায়াজাল বুনে ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের বোকা বানিয়ে উইকেট নিয়ে গেল। অন্য দিকে, শামি-উমেশ যাদব জুটিকে দেখে মনে হচ্ছিল যেন রক্তের স্বাদ পাওয়া বাঘ। বিশেষ করে বাংলার সুলতান শেষ দিনে বোলিংটা অসাধারণ করে গেল।

মোহালির লড়াইটা অবশ্য প্রথম দিন থেকেই হারতে শুরু করেছিল ইংল্যান্ড। একমাত্র দ্বিতীয় দিন চা-বিরতির পর ইংল্যান্ডের জন্য আশার একটা জানলা খুলেছিল বলা চলে। যখন ভারত নিজেদের ইনিংসের শুরুটা ভাল করার পর দুমদাম কয়েকটা উইকেট হারিয়ে বসেছিল। যেটাকে আমি শুধু অসতর্ক ব্যাটিং বলব না, বলব নিজেদের প্রয়োগ করতে না পেরে রীতিমতো খারাপ ব্যাটিং। রাহানেকে ওর ঠান্ডা মাথার স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে দেখলাম না। আর অভিষেক টেস্টে করুণ নায়ার ক্যাপ্টেনের ডাকে সাড়া দিয়ে এতটাই বেশি এগিয়ে এসেছিল যে ফিরতে গিয়ে ডাইভ দিয়েও সময়ে ক্রিজে পৌঁছতে পারল না। অসাধারণ একটা থ্রো-এ আউট হল। তবে এটাও বলতেই হবে, বিরাট যে কলটা দিয়েছিল, সেটায় রান হওয়ার কোনও সম্ভাবনা ছিল না। একটা জিনিস লক্ষ্য করছি। এই সিরিজে এখনও পর্যন্ত ভারতের টপ অর্ডার কিন্তু অস্বাভাবিক রকমের আতঙ্কগ্রস্ত দেখাচ্ছে।

বাড়িতে ফিরে রিল্যাক্স মুডে সেলফি টুইট করলেন বিরাট কোহালি।

তবে তারিফ করতেই হবে টেল এন্ডারদের। গত দুই মরসুমে ভারতীয় লোয়ার অর্ডারের যা পারফরম্যান্স, সে সবই এই সিরিজি ছাপিয়ে গিয়েছে আমাদের টেল এন্ডাররা। একই ইনিংসে দলের সাত, আট আর ন’নম্বর ব্যাটসম্যানের হাফ সেঞ্চুরি করার নজির ক্রিকেটে বিরল। নিজের দুই স্পিন সতীর্থ, অশ্বিন আর জয়ন্তকে সঙ্গে নিয়ে ইংল্যান্ড বোলিংকে একদম ফালাফালা করে দিল রবীন্দ্র জাডেজা। প্রথমে অশ্বিন, তার পর জাডেজা ওদের বোলারদের নির্মম ভাবে শাসন করল। দেখে মনে হচ্ছিল হাতে অন্তত একশো রান কম নিয়ে লড়াইয়ের নামা ইংল্যান্ড বোলারদের কেউ যেন ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। এর পর দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামার সময়ই ইংল্যান্ডকে দেখে মনে হচ্ছিল যেন কোনও পরাজিত বাহিনী। তৃতীয় দিন দুপুরের মধ্যে চার উইকেট হারানোর পরেই ওরা বুঝে গিয়েছিল, হার অবশ্যম্ভাবী।

ভারত যে এই সিরিজটা হারছে না, সেটা এখন সবাই জানেন। তবে সামনের দুই টেস্টে বিরাট কোহালিদের সামনে নিজেদের আরও জমাট আর উন্নত দল হিসাবে তুলে ধরার সুযোগ থাকছে। ভারতের চাই একটা জমাট ওপেনিং পার্টনারশিপ। বিশেষ করে মুরলী বিজয়কে কিন্তু ভাল কিছু করে দেখাতে হবে। এ ছাড়া মিডল অর্ডারকে আরও দায়িত্ব নিতে হবে। ওরা বেশির ভাগ কাজটাই টেল এন্ডারদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছে। আমার মনে হয় দল নির্বাচনেও আরও বেশি বিচক্ষণতা দেখানো দরকার। সব মিলিয়ে আপাতত ভারতের জন্য এটা উৎসবের মুহূর্ত।

Mohammed Shami India vs England Virat Kohli
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy