Advertisement
E-Paper

লোঢা সংস্কার নিয়ে অন্তর্দ্বন্দ্ব

ঝামেলা বেধেছে মূলত দু’টি সংস্কার নিয়ে। শ্রীনি-বিরোধীরা চাইছে, ৭০ বছর পেরিয়ে গেলে সংস্থা ছেড়ে চলে যাওয়ার নিয়ম নিয়ে আপত্তি না তোলা হোক। এই দলে ক্রিকেট প্রশাসনে সবেমাত্র আসা কর্তারা বেশি আছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৭ ০৪:১৩

লোঢা কমিটির সুপারিশ মানা, না-মানা নিয়ে ভারতীয় বোর্ডের মধ্যেই শুরু হয়েছে অন্তর্কলহ। এক দিকে এন শ্রীনিবাসন এবং তাঁর অনুরাগীরা। এঁরা লোঢা কমিটির তাৎপর্যপূর্ণ সংস্কারগুলি মানতে চাইছেন না। অন্য দিকে শ্রীনি-বিরোধী কর্তাদের গোষ্ঠী। সংখ্যালঘু হলেও এই গোষ্ঠী চাইছে লোঢা সংস্কার মেনে নেওয়া হোক। সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্‌সের সমর্থন পাচ্ছে এই গোষ্ঠী।

ঝামেলা বেধেছে মূলত দু’টি সংস্কার নিয়ে। শ্রীনি-বিরোধীরা চাইছে, ৭০ বছর পেরিয়ে গেলে সংস্থা ছেড়ে চলে যাওয়ার নিয়ম নিয়ে আপত্তি না তোলা হোক। এই দলে ক্রিকেট প্রশাসনে সবেমাত্র আসা কর্তারা বেশি আছেন। শ্রীনিবাসন বা নিরঞ্জন শাহের মতো পুরনো প্রভাবশালী কর্তারা বিদায় নিলে তাঁদের সুবিধে। শ্রীনি যা শুনে পাল্টা দাবি তুলেছেন, তা হলে এক রাজ্যের এক ভোটের নিয়মও মেনে নেওয়া হোক। এই সংস্কার হলে মহারাষ্ট্র জোরাল ধাক্কা খাবে। সব চেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে মুম্বই কারণ, তাদের পাকাপাকি ভোটদানের অধিকার চলে যাবে। মহারাষ্ট্রে মোট তিনটি পূর্ণ সদস্য রয়েছে বোর্ডের। মুম্বই, মহারাষ্ট্র এবং বিদর্ভ। লোঢা সংস্কার কার্যকর হলে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে প্রত্যেক বার একটি রাজ্য সংস্থা ভোট দিতে পারবে। তবে রঞ্জিতে তিনটি রাজ্যই খেলতে পারবে আলাদা আলাদা দল হিসেবে। এই সংস্কার কার্যকর হলে শ্রীনির সুবিধে কারণ তাঁর ভোটব্যাঙ্কে মহারাষ্ট্র খুব জোরাল ভাবে নেই।

গত সপ্তাহে হওয়া বোর্ডের বিশেষ সাধারণ সভায় সংস্কার নিয়ে দু’পক্ষের ঝামেলা প্রথম প্রকাশ্যে আসে। শ্রীনি জানতে পেরে সাধারণ সভায় প্রচণ্ড আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। তার পরেই সাত সদস্যের কমিটি তৈরি হয় লোঢা সুপারিশের কোনগুলি মানা হবে না, তার তালিকা চূড়ান্ত করার জন্য। এই কমিটি এক বার নিজেদের মধ্যে টেলিকনফারেন্সও করেছে। কিন্তু এমনই ডামাডোল চলছে যে, ঐক্যমত্য হতে পারেনি কমিটি।

আরও পড়ুন:বেনজির বিতর্কে ইনজামাম

সেখানেও পরিষ্কার বিভাজন দেখা দিয়েছে এবং অতীতের সব হিসাবনিকাশ ওলটপালট হচ্ছে। এক সময় শ্রীনির একান্ত অনুগামী এবং এখনকার বোর্ড সচিব অমিতাভ চৌধুরি চলে গিয়েছেন শ্রীনির উল্টো দিকে। তিনি চান লোঢা সংস্কার মেনে নেওয়া হোক। আবার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, যাঁর সঙ্গে শ্রীনির অতীতে কখনওই খুব ভাল সম্পর্ক ছিল না, তিনি লোঢা সংস্কার নিয়ে শ্রীনির দিকে থাকলেও থাকতে পারেন বলে ইঙ্গিত মিলেছে।

লোঢা সংস্কার পুরোপুরি মেনে নিতে হলে সৌরভের সিএবি প্রেসিডেন্ট হিসেবে মেয়াদ জুলাইয়েই শেষ হয়ে যাবে। তখন তাঁকে ‘কুলিং অফ’-এ চলে যেতে হবে। সিএবি-তে পদাধিকারী হিসেবে তাঁর তিন বছর হয়ে যাচ্ছে। এর পর তিন বছর তিনি সংস্থার কোনও পদে থাকতে পারবেন না। শোনা যাচ্ছে বোর্ডে উচ্চ পদ পেতে পারেন সৌরভ এবং নিয়ম মতো, সিএবি-তে মেয়াদ শেষ করে বোর্ডে যেতে আইনি বাধা নেই। কিন্তু সৌরভের বোর্ডের আসনে উত্তরন নির্ভর করে থাকবে নানা সমীকরণের ওপর। আপাতত যেটা আকর্ষণীয়, তা হচ্ছে শ্রীনি এবং তাঁর কাছাকাছি এসে পড়া। বিশ্বস্ত সূত্রে খবর, গত সপ্তাহে বোর্ডের বিশেষ সাধারণ সভাতেও শ্রীনির বিরোধিতা তো করেনইনি সৌরভ, উল্টে তাঁর সুর ছিল সমর্থনেরই।

সাত সদস্যের কমিটি পর্যন্ত এ নিয়ে জট ছাড়াতে ব্যর্থ হয়েছে। কমিটির সদস্যদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় এবং চিঠি চালাচালিও হয়েছে। আগামী ১২ জুলাই ফের বিশেষ সাধারণ সভা ডেকেছে বোর্ড এবং সেখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা। সেই সভায় যদি আগের দিনের মতো ফের শ্রীনির রাজ চলে, তা হলে লোঢা সংস্কার নিয়ে যুদ্ধের মেজাজ অক্ষুণ্ণ থাকবে। তার পর এটাই দেখার যে, ১৪ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট তাদের রায়ে কী আদেশ দেয়।

Intersection Lodha Committee N. Srinivasan Rajendra Mal Lodha Cricket BCCI
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy