Advertisement
E-Paper

‘পারতাম না এ ভাবে ফিরে আসতে’, কার্তিকের অবসরে চোখের জল ধরে রাখতে পারলেন না স্ত্রী দীপিকা

নিজে খেলোয়াড়। দেশকে বহু আন্তর্জাতিক পদক এনে দিয়েছেন। ক্রিকেটের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ স্বামী কার্তিকের মাধ্যমে। সদ্য অবসর নেওয়া স্বামীকেই নিজের অনুপ্রেরণা বলছেন দীপিকা।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২৪ ১৫:১৫
Picture of Dinesh Karthik and Dipika Pallikal

(বাঁ দিকে) দীনেশ কার্তিক এবং দীপিকা পাল্লিকেল। ছবি: এক্স (টুইটার)।

আর দেখা যাবে না ক্রিকেটার দীনেশ কার্তিককে। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে আইপিএল এলিমিনেটর ছিল তাঁর শেষ ম্যাচ। আগেই অবসরের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছিলেন অভিজ্ঞ উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। কার্তিকের অবসরের পর আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন তাঁর স্ত্রী দীপিকা পাল্লিকেল। চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। দেশের অন্যতম সেরা মহিলা স্কোয়াশ খেলোয়াড় বলেছেন, কার্তিকই তাঁর লড়াইয়ের অনুপ্রেরণা।

ক্রিকেটের প্রতি কার্তিকের অধ্যাবসায় এবং একাগ্রতা শিক্ষণীয়। তাঁর হার না মানা মানসিকতা অন্যদেরও সাহসী করে তোলে। স্বামীর ২০ বছরের ক্রিকেটজীবন শেষে উপলব্ধি দীপিকার। ভারতের ক্রীড়াজগতে দীপিকা নিজেও কম বড় নাম নন। দেশকে একাধিক আন্তর্জাতিক পদক এনে দিয়েছেন তিনি। এক সময় দেশের এক নম্বর মহিলা স্কোয়াশ খেলোয়াড় বলেছেন, ‘‘কিছু জিনিস আছে যেগুলো বোঝা যায়। সেগুলোই জীবনে ঘটে। ২০১৩ সালে আমাদের আলাপ। তখনই মনে হয়েছিল, দু’জনে এক সঙ্গে জীবন কাটাতে পারি। আমাদের অনুমান পরে সঠিক প্রমাণ হয়েছিল।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘মেনে নিতে কোনও অসুবিধা নেই, একটা জিনিস আমি ওর কাছ থেকেই শিখেছি। বিশেষ করে যখন ভাল খেলতে পারত না। দল থেকে বাদ পড়লে দু’তিন দিন হয়তো একটু হতাশ দেখাত। তার পরেই আবার উঠে দাঁড়াত। ফর্ম ফিরে পাওয়ার চেষ্টা শুরু করে দিত। আমার তো মনে হয়, ওর মতো বার বার বাদ পড়লে অনেকেই খেলা ছেড়ে দিত। আমি নিজেও হয়তো পারতাম না এ ভাবে প্রতি বার ফিরে আসতে। আমিও খেলি। দু’জনের খেলায় হয়তো কোনও মিল নেই। তবু বলছি, পারতাম না। একটা সময়ের পর হাল ছেড়ে দিতাম। মরণ-বাঁচন পরিস্থিতিতে কার্তিকের এই নাছোড় মানসিকতা সত্যিই শেখার মতো।’’

দীপিকা এক জন খেলোয়াড় হিসাবে স্বামীর কাছ থেকে শিখেছেন অনেক। খেলার প্রতি কতটা ভালবাসা, আবেগ থাকলে নিজেকে এত বার নতুন করে তৈরি করা যায়, তার সেরা উদাহরণ নিজের স্বামীকেই মনে করেন দীপিকা। আরসিবিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দেশের অন্যতম সেরা স্কোয়াশ খেলোয়াড় বলেছেন, ‘‘১০ বছর আমরা এক সঙ্গে আছি। পরস্পরকে চিনি। সামনে থেকে দেখেছি, প্রতি দু’বছর অন্তর নিজেকে খেলোয়াড় হিসাবে বদলে ফেলার চেষ্টা করত। স্ত্রী হিসাবেও আমি ওর পরিবর্তনটা বুঝতে পারতাম। শেষ চার-পাঁচ বছর ক্রিকেটকে শুধু উপভোগ করতে চেয়েছে সব সময়। এই পরিবর্তনে অভিষেক নায়ারের (কলকাতা নাইট রাইডার্সের সহকারী কোচ) বড় ভূমিকা রয়েছে। নায়ারের সঙ্গে আলাপ হওয়ার পর থেকে কার্তিক শুধু ক্রিকেটার হিসাবেই নয়, মানুষ হিসাবেও অনেক পরিণত হয়েছে। নতুন ভাবে গড়ে উঠেছে।’’

বেঙ্গালুরু ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেছেন দীপিকা। আইপিএলে কার্তিকের শেষ ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘আরসিবিতে প্রথম বছর থেকেই প্রচুর সুযোগ পেয়েছে ও। এমন একটা ভূমিকা ওকে দেওয়া হয়েছিল, যে ভূমিকায় নানা ভাবে নিজেকে মেলে ধরার সুযোগ ছিল। পাশে সঠিক কয়েক জন মানুষকেও পেয়েছিল।’’

স্বামীর ক্রিকেটজীবন নিয়ে গর্বিত শুনিয়েছে দীপিকাকে। তিনি বলেছেন, ‘‘ক্রিকেটার হিসাবে আজ যে জায়গায় পৌঁছেছে, সেটা ওরই কৃতিত্ব। জায়গাটা ওকে অর্জন করতে হয়েছে। যে কোনও খেলোয়াড়ের জন্যই এটা গুরুত্বপূর্ণ। অবসর নেওয়া সহজ নয়। কারণ ছোট থেকে এক জন খেলোয়াড়ের সব কিছুই তার খেলার সঙ্গে যুক্ত। খেলা ছাড়া তার ‌ভাবনায় কিছু থাকে না। সেটাই তার জীবন। এ ক্ষেত্রেও কার্তিক একটু ব্যতিক্রম। জীবনের এক পর্যায় থেকে অন্য পর্যায়ে সহজে পা রাখতে পারে। মানিয়ে নিতে পারে। ক্রিকেটার হিসাবে যা করেছে, তাতে ও নিজে গর্বিত হতেই পারে। পরিবারের সবাইকে গর্বিত করেছে। আমি তো ভীষণ গর্বিত।’’

দেশের হয়ে টানা খেলার সুযোগ হয়নি কার্তিকের। তাঁর সেরা সময়ের একটা বড় অংশ জুড়ে ছিলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। স্বভাবতই ধারাবাহিক ভাবে জাতীয় দলের হয়ে খেলার সুযোগ হয়নি কেকেআরের প্রাক্তন অধিনায়কের। দেশের হয়ে ২৬টি টেস্ট, ৯৪টি এক দিনের ম্যাচ এবং ৬০টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন কার্তিক। উইকেটরক্ষক-ব্যাটারের ঝুলিতে রয়েছে ২৫৭টি আইপিএল ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতাও।

IPL 2024 Dinesh karthik Dipika Pallikal RCB retirement
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy