Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

রাত দু’টোয় খেলব কেন, প্রশ্ন তুললেন কুল্টার নাইল

বুধবার রাতে ইশাঙ্ক জাগ্গি যখন জয়ের শেষ রানটা নিলেন, তখন ঘড়িতে রাত ১.২৭। রাত দেড়টার সময় ক্রিকেট! ভারতবর্ষে কখনও ঘটেছে বলে তো মনে করা যাচ্ছে না।

রাজীব ঘোষ
বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৭ ০৪:১৮
Share: Save:

বুধবার রাতে ইশাঙ্ক জাগ্গি যখন জয়ের শেষ রানটা নিলেন, তখন ঘড়িতে রাত ১.২৭। রাত দেড়টার সময় ক্রিকেট! ভারতবর্ষে কখনও ঘটেছে বলে তো মনে করা যাচ্ছে না।

খেলা কখন শুরু হবে, তার অপেক্ষা করতে করতে নেথান কুল্টার নাইল তো ড্রেসিংরুমে ঘুমিয়েই পড়েছিলেন বলে জানালেন। বুধবার রাত প্রায় দু’টো নাগাদ সাংবাদিক বৈঠকে এসে বললেন, ‘‘রাত দু’টোর সময় মাঠে নেমে খেলতে হবে? এটা সম্ভব না। আমার তো ফের মাঠে নামার কোনও ইচ্ছাই ছিল না। খুব ঘুম পাচ্ছিল, আমি ঘুমিয়েও পড়েছিলাম। দলের অন্যদের হুল্লোড়ে বারবার ঘুম ভেঙে যাচ্ছিল আমার।’’

কথাগুলো মজার ছলে বললেও অন্য মাত্রা পেয়ে যাচ্ছে যেহেতু অনেকেই এত রাতে খেলা শেষ করা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। চিন্নাস্বামীতে হাজির ছিলেন বোর্ড সচিব অমিতাভ চৌধুরী। তাঁর সামনেই নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে যে, আইপিএলের মতো জনপ্রিয় এবং টুর্নামেন্টে প্লে-অফ থেকে রিজার্ভ ডে কেন রাখা হবে না? সুনীল গাওস্করও এর পক্ষে সওয়াল করেছেন। কুল্টার নাইলের বক্তব্য সেই বিতর্কে ঘি ঢেলেছে।

চিন্নাস্বামীর ভিআইপি স্ট্যান্ডে বুধবার মাঝ রাত পর্যন্ত ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলেন শাহরুখ খান। দলের জয় না দেখে তিনি কোথাও নড়েননি। ম্যাচের পর গভীর রাতে কেকেআরের মালিকও টুইট করেন, ‘‘দল জেতায় খুব ভাল লাগছে। কিন্তু প্লে-অফের ম্যাচগুলোতে একটা করে বাড়তি দিন থাকা খুব দরকার।’’ সোশ্যাল মিডিয়াতেও এ নিয়ে বুধবার রাত থেকে তোলপাড় শুরু হয়। বৃষ্টির জন্য খেলা না হওয়ায় কেকেআর যদি হেরে যেত, তা হলে সোশ্যাল মিডিয়াতেও হয়তো তুমুল ঝড় উঠত। একমাত্র রবিবারের ফাইনালে রিজার্ভ ডে থাকছে।

আরও পড়ুন:মুম্বইয়ের অতীত রেকর্ড এখন কিন্তু অতীতই

বুধবার রাতে খেলা শেষ করে টিম হোটেলে ফিরে নাইটদের যে যাঁর ঘরে ঢুকতে প্রায় রাত তিনটে বেজে যায়। দলের নির্ভরযোগ্য পেসার উমেশ যাদবই এ কথা জানান। তিনিও এত রাতে ক্রিকেট মাঠে নেমে অবাক। বলেন, ‘‘আমি জীবনে কখনও রাত দু’টোয় খেলা শেষ করে মাঠ থেকে বেরোইনি। রাত তিনটেয় হোটেলে ঢুকিনি কখনও। কিন্তু কী করা যাবে, কাল যা পরিস্থিতি হয়েছিল, তাতে আমাদের তো কিছুই করার ছিল না।’’

শুক্রবার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে কোয়ালিফায়ার টু-তে নামছে শাহরুখের নাইট রাইডার্স। বেঙ্গালুরুতে যদি ফের ঝড়-বৃষ্টি হানা দেয়, একই পরিস্থিতির সামনে পড়তে চলেছে কেকেআর। যদি ম্যাচ কোনও কারণে ভেস্তে যায়, অসহায় ভাবে বিদায় নিতে হবে নাইটদের। কারণ, গ্রুপ পর্বের পরে পয়েন্ট টেবলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ছিল গম্ভীরদের ওপরে।

উধাও হিউজ আতঙ্ক: ক্রিকেট বল মারণাস্ত্র হয়ে উঠলে যে কী হয়, তা বুঝতে পেরেছিলেন ফিল হিউজ। আর হেলমেটে ক্রিকেট বলের ঝনঝনানিও যে কম মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে না, তা বুঝেছেন নেথান কুল্টার নাইল। ইডেনে পুণে সুপারজায়ান্টের বিরুদ্ধে ব্যাট করতে নেমে সপ্তাহ দু’য়েক আগে ড্যান ক্রিস্টিয়ানের একটা শর্ট বল সজোরে আছড়ে পড়ে তাঁর হেলমেটের গ্রিলে। ‘‘পরে বুঝতে পারি, মাথায় সমস্যা হচ্ছে। মাঝে মাঝেই মাথা ঘুরে যাচ্ছে, চোখে অন্ধকার দেখছি। ক্রমশ আতঙ্কও ঘিরে ধরে আমাকে,’’ বেঙ্গালুরুতে মাঝরাতে ম্যাচ জিতে সাংবাদিকদের বলেন নেথান। আরও বললেন, ‘‘আমার খেলার কথা ছিল না এই ম্যাচে। কিন্তু বুধবার সকালে ঘুম থেকে উঠে মনে হল, ভালই তো লাগছে। শরীরে সমস্যা নেই। তাই টিম ম্যানেজমেন্টকে জানিয়ে দিলাম, আমি খেলছি।’’ শুধু তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরার পুরস্কার জেতাই নয়। ফলো থ্রু-তে বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ক্রিস জর্ডানের অসাধারণ ক্যাচও নিলেন নেথান। ঘটনা হচ্ছে, বুধবারের ম্যাচের আগের দিন পর্যন্তও ব্যাট হাতে নেটে ঢুকতে ভয় পাচ্ছিলেন তিনি। সেই তিনি যে সানরাইজার্সের ব্যাটিংয়ে ধস নামিয়ে দেবেন, কে ভেবেছিল!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE