Advertisement
০৪ মে ২০২৪
KKR

IPL 2022: আইপিএলে কমছে বিদেশি খেলানোর প্রবণতা, বাড়ছে দেশি ক্রিকেটারদের চাহিদা, কেন?

১৪টি আইপিএল কেটে যাওয়ার পরে অবশেষে এই ধারণার বদল এসেছে। এখন আর শুধুমাত্র বিদেশিদের উপরে দলগুলি নির্ভরশীল নয়। গুরুত্ব বাড়ছে দেশীয়দের।

বাড়ছে দেশি ক্রিকেটারদের চাহিদা।

বাড়ছে দেশি ক্রিকেটারদের চাহিদা। ছবি আইপিএল

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২২ ১১:৫৯
Share: Save:

একটা সময় ছিল যখন আইপিএলে বিদেশিদের কেনা নিয়ে মুখিয়ে থাকত দলগুলি। পছন্দের বিদেশিরা দলে এসে যাওয়ার পর আরও সমস্যা। কাকে খেলানো হবে সেটা নিয়ে মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড় হত কোচ, অধিনায়কের। দলের কথা ভেবে কখনও সখনও অপ্রিয় সিদ্ধান্তও নিতে হত। কিন্তু ১৪টি আইপিএল কেটে যাওয়ার পরে অবশেষে এই ধারণায় বদল এসেছে। এখন আর শুধু মাত্র বিদেশিদের উপরে দলগুলি নির্ভরশীল নয়। ক্রমশ গুরুত্ব বাড়ছে দেশীয় ক্রিকেটারদের।

নিয়ম অনুযায়ী কোনও দল একটি ম্যাচে সর্বাধিক চার জন বিদেশি খেলাতে পারে। এখনও পর্যন্ত এ বারের আইপিএলে হয়েছে ২৯টি ম্যাচ। তার মধ্যে অন্তত ১১টি ম্যাচে কোনও একটি দল চার জনের কম বিদেশি নিয়ে খেলেছে। দলে চার বিদেশি না খেলালেও চলে, এই সিদ্ধান্ত নিতে এখন আর দু’বারও ভাবে না দলগুলি। হয়তো পরের দিকে এই প্রবণতা কমবে। কারণ দলগুলি তত দিনে বুঝে যাবে কোন দল তাদের পক্ষে সেরা।

এখনও পর্যন্ত এই আইপিএলে শুধু গুজরাত টাইটান্স প্রতিটি ম্যাচে চার বিদেশি খেলিয়েছে। কিন্তু মুম্বই ইন্ডিয়ান্স বারবার তা বদলেছে। প্রথম ম্যাচে তারা চার বিদেশি খেলিয়েছে। টানা তিন হারের পর তা নেমে আসে দুই বিদেশিতে। পঞ্চম ম্যাচে আবার তিন বিদেশি খেলায়। ফলে সেরা প্রথম একাদশ এখনও খুঁজে পায়নি তারা। চেন্নাই সুপার কিংসে আবার সুযোগ পাচ্ছেন না ডেভন কনওয়ের মতো বিধ্বংসী ক্রিকেটার।

কলকাতা প্রথম ম্যাচে তিন বিদেশি খেলিয়েছে। তবে তখন প্যাট কামিন্স ছিলেন না। ডেভিড ওয়ার্নার, অনরিখ নোখিয়া বা মিচেল মার্শকে না পাওয়ায় দিল্লি প্রথম ম্যাচে দুই বিদেশি খেলায়। কাগিসো রাবাডা না থাকায় একটি ম্যাচে তিন বিদেশি নিয়ে নেমেছিল পঞ্জাব। রাজস্থান মোটামুটি একই বিদেশি খেলিয়ে চলেছে। তবে নেথান এলিস, মিচেল স্যান্টনার, ডোমিনিক ড্রেকস, নুর আহমেদ, রহমানুল্লা গুরবাজ, কাইল মেয়ার্স, রিলি মেরেডিথের মতো অসংখ্য বিদেশিকে দলগুলি ধর্তব্যের মধ্যেই আনছে না। মনে করা হচ্ছে, শুধু মাত্র দল ভরানোর জন্যই যেন তাদের নেওয়া হয়েছে।

আইপিএল মাতানো তারকারা হয় এ বারে নেই, না হয় তাঁরা অবসর নিয়েছেন। এবি ডিভিলিয়ার্স যেমন অবসরে গিয়েছেন, তেমনই ক্রিস গেলকে এ বার কেউ কেনেনি। জফ্রা আর্চার বা বেন স্টোকসকেও এ বার পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে দেশীয় ক্রিকেটারদের কাছে নিজেদের প্রমাণ করার সুযোগ অনেক বেড়েছে। তাঁরা নিজেদের প্রমাণ করার ফলে নিয়মিত সুযোগও পাচ্ছেন। এতেই কমছে বিদেশি ক্রিকেটারদের গ্রহণযোগ্যতা।

কেন এই জিনিস হচ্ছে? বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে, মূলত জোরে বোলিং এবং বড় শট মারার ক্ষমতার জন্য এতদিন চাহিদা ছিল বিদেশিদের। কিন্তু এখনকার সময়ে আয়ুষ বাদোনি, তিলক বর্মা, অভিনব মনোহর বা রাহুল তেওয়াটিয়ারা বুঝিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা কারওর থেকে কম যান না। একার হাতে এঁরা প্রত্যেকে ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা রাখেন।

ভারতের প্রাক্তন কোচ গ্যারি কার্স্টেন এক ওয়েবসাইটে বলেছেন, “আইপিএলের পরিবেশে ভারতীয় ক্রিকেটাররা আগের থেকে নিজেকে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী মনে করছে। এই প্রতিযোগিতাটা আসলে তরুণ ক্রিকেটারদের জন্যেই। বিভিন্ন দলে এখন তরুণ ক্রিকেটাররা গিয়ে প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটাচ্ছে। চাপে থাকলেও ওরা পিছপা হচ্ছে না।”

অনেক দল আবার জানিয়েছে, দলে দরকারি বিদেশি না থাকার কারণেই খেলানো হচ্ছে না। নিলামে যাঁরা থাকেন, তাঁরা মূলত পরিসংখ্যানের উপর ভিত্তি করে বিদেশি নির্বাচনের চেষ্টা করেন। কিন্তু সব ক্ষেত্রে তা কাজে লাগে না। এখানেও তাই হচ্ছে। আরও একটি কারণ রয়েছে। প্রতিযোগিতার প্রথম দিকে কোনও দেশের ক্রিকেটারকে হয়তো পাওয়া যায়নি। তাঁর জায়গায় কোনও ভারতীয় ভাল খেলে দিলেন। এ বার স্রেফ নামের জেরে সেই বিদেশি ক্রিকেটার আর দলে ঢুকতে পারছেন না। তাঁকে প্রতিভার প্রমাণ দিতে হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

KKR SRH Rajasthan Royals IPL 2022
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE