Advertisement
E-Paper

Rinku Singh: শত প্রতিকূলতা কাটিয়ে স্বপ্নপূরণের পথে রিঙ্কু

১৫ বলে ৪০ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে জেতানোর মরিয়া চেষ্টা করেছেন তিনি।

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২২ ০৭:০৬
আলোচনায়: আইপিএলে নজর কেড়েছে রিঙ্কুর লড়াই। ফাইল চিত্র

আলোচনায়: আইপিএলে নজর কেড়েছে রিঙ্কুর লড়াই। ফাইল চিত্র

ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন ছোটবেলা থেকেই। কিন্তু অভাবের সংসারে ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখাও বিলাশিতা। রিঙ্কু সিংহ তবুও স্বপ্ন দেখেছেন, সেই স্বপ্ন সত্যি করার যাবতীয় চেষ্টাও করেছেন। রিঙ্কুর বাবা লোকের বাড়িতে সিলিন্ডার বণ্টন করতেন। অভাবের সংসারে কিছুটা সাহায্য করার জন্য এক সময় তাঁকে কোচিং ক্যাম্প পরিষ্কার রাখার দায়িত্বও দেওয়া হয়েছিল। লজ্জায় সেই চাকরি করতে পারেননি রিঙ্কু। স্বপ্ন ছিল ক্রিকেটার হওয়ার। যা অনেকটাই সত্যি হয়েছে বুধবারের ডি ওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে।

১৫ বলে ৪০ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে জেতানোর মরিয়া চেষ্টা করেছেন তিনি। কিন্তু এভিন লুইসের অবিশ্বাস্য ক্যাচ তাঁর ও কেকেআরের সাফল্যের মাঝে কাঁটা হয়ে দাঁড়ায়। ম্যাচ হারলেও মন জয় করে মাঠ ছেড়েছেন রিঙ্কু। তাঁর লড়াই শ্রেয়স আয়ারকেও বলতে বাধ্য করেছে, ‘‘হেরেও দুঃখিত নই।’’

শেষ পাঁচ বছর ধরে নাইট পরিবারে রয়েছেন রিঙ্কু। ২০২২ মরসুমের আগে ১০ ম্যাচে তাঁর মোট রান ছিল ৭৭। এ বার তিনি সাত ম্যাচ খেলে করেছেন ১৭৪ রান। গত বছর বিজয় হজারে ট্রফি খেলতে গিয়ে হাঁটুতে চোট পান রিঙ্কু। ছেলেকে কষ্ট পেতে দেখে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন তাঁর বাবা। নাইটদের ওয়েবসাইট কেকেআর ডট ইনকে এক সাক্ষাৎকারে রিঙ্কু বলেছেন, ‘‘গত বছর জীবনের অন্যতম কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছি। রান নিতে গিয়ে মাটিতে পড়ে যাওয়ার পরেই মনে হয়েছিল, আইপিএল হয়তো খেলা হবে না। দীর্ঘদিন বিশ্রাম নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় আমাকে। বলে দেওয়া হয়, হাঁটুতে অস্ত্রোপচারও হবে। সাত মাস বাইরে থাকতে হয়েছিল।’’

চোট পাওয়ায় ২০২১ আইপিএলের প্রথম পর্বে থাকতে পারেননি রিঙ্কু। সেই সময় তাঁর পরিবারের সদস্যেরাও ভেঙে পড়েছিলেন। রিঙ্কু বললেন, ‘‘২-৩ দিনের জন্য মুখে খাওয়ার তোলেনি বাবা। বর্তমানে আমিই সংসার চালাই। তাই চোট পাওয়ার পরে বাবা ভেবেছিলেন, আমার ক্রিকেট জীবন অনেক বড় ধাক্কা খেলো। চোট পাওয়ার পাশাপাশি বাবাকে ভেঙে পড়তে দেখে আমার মনের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। প্রচণ্ড কষ্ট হতে শুরু করে। প্রতিজ্ঞা করি, যতটা দ্রুত সম্ভব, চোট সারিয়ে
ফিরে আসবই।’’

কেকেআরই তাঁর অস্ত্রোপচারের দায়িত্ব নেয়। রিঙ্কু বললেন, ‘‘কমলেশ স্যর (দলের ফিজ়িয়ো) বললেন, কেকেআর আমাকে সাহায্য করতে চায়। তারাই আমার অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করে দেয়।’’ যোগ করেন, ‘‘আইপিএলের প্রথম পর্ব টিভিতে বসে দেখতে হতো। প্রত্যেককে মাঠে দেখে আমার খুব কষ্ট হতো।’’

কেকেআরের সহকারী কোচ অভিষেক নায়ারও রিঙ্কুর সাফল্যের নেপথ্যে বড় ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘চোট পাওয়ার পরে রিঙ্কু একেবারে অন্য রকম হয়ে যায়। আগের চেয়ে অনেক শান্ত। ও মনে-প্রাণে নাইট শিবিরে ফিরতে চেয়েছিল। যা ও পেরেছে।’’

ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন ঘটে রিঙ্কুর। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৬৪.০৮ গড়ে রান করেন তিনি। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে গড় ছিল ৫০.৫০। রিঙ্কু ভাবতেই পারেননি কেকেআর তাঁকে ফের দলে নেবে। বললেন, ‘‘রানা (নীতীশ) বলেছিল কেকেআর আমার জন্য ঝাঁপাবে। এই দলটাকে মন থেকে খুব ভালবাসি। ওরা আমাকে ২০১৮ সালে ৮০ লক্ষ টাকায় নেওয়ার পরে জীবনের সব কষ্ট দূর হয়ে গিয়েছিল। আমার বাবা মাত্র ১০-১২ হাজার টাকা আয় করতেন মাসে। সেখানে কেকেআর প্রথম বার আমাকে নেয় ৮০ লক্ষ টাকায়। দ্বিতীয় বার নেয় ৫৫ লক্ষ টাকায়। আমার জীবন বদলে দিয়েছে এই দলটি।’’

তিনি আরও বলেছেন, ‘‘কেকেআরে থাকা পাঁচটি বছর আমার জীবনের সেরা সময়। ঠিক মতো পারফর্ম করতে না পারলেও আমার উপর থেকে আস্থা হারায়নি দলটি। এই মনোভাবই আমাকে আরও লড়াই করার সাহস দিয়েছিল। কেকেআর আমার পাশে না দাঁড়ালে এই ইনিংসও খেলা হত না।’’

Rinku Singh KKR IPL 2022
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy