Advertisement
০১ মে ২০২৪
Royal Challengers Bangalore vs Gujarat Titans

কোহলিকে ছাপিয়ে নায়ক শুভমন! আইপিএলে স্বপ্ন শেষ বেঙ্গালুরুর, মুম্বইকে প্লে-অফে তুলল গুজরাত

শতরান করে আরসিবিকে লড়াই করার জায়গায় পৌঁছে দিয়েছিলেন বিরাট কোহলি। রান তাড়া করতে নেমে কোহলির হাসি মুছে দিলেন শুভমন গিল। পাল্টা শতরান করে জিতিয়ে দিলেন গুজরাত টাইটান্সকে।

virat kohli

কোহলির হাসি মিলিয়ে দিলেন শুভমন গিল। পাল্টা শতরান করে গুজরাতকে জেতালেন তিনি। — ফাইল চিত্র

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২২ মে ২০২৩ ০০:০৮
Share: Save:

শতরান করে আরসিবিকে লড়াই করার জায়গায় পৌঁছে দিয়েছিলেন বিরাট কোহলি। রান তাড়া করতে নেমে কোহলির হাসি মুছে দিলেন শুভমন গিল। পাল্টা শতরান করে জিতিয়ে দিলেন গুজরাত টাইটান্সকে। হার্দিক পাণ্ড্যের দল জেতায় ১৬ পয়েন্ট নিয়ে প্লে-অফে উঠে গেল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। আরসিবির আইপিএল অভিযান শেষ হয়ে গেল রবিবার। আগে ব্যাট করে ১৯৭-৫ তুলেছিল বেঙ্গালুরু। জবাবে ছয় মেরে দলকে জেতালেন এবং শতরান করলেন শুভমন। ৬ উইকেটে জিতল গুজরাত।

এর আগে আইপিএলে কখনও একটি ম্যাচে দু’টি আলাদা দলের হয়ে দু’জন শতরান করেননি। এই মরসুমে দু’বার তা দেখা গেল। হায়দরাবাদ বনাম গুজরাত ম্যাচে হেনরিখ ক্লাসেন এবং শুভমন শতরান করেছিলেন। এ বার শুভমন আবার শতরান পেলেন। কোহলির মতো তিনিও পর পর দু’টি ম্যাচে শতরান করলেন। অর্থাৎ শতরানের জবাব শতরানেই। কোহলিকে ছাপিয়ে বেঙ্গালুরুতে নায়ক হয়ে উঠলেন শুভমন।

আইপিএলের অন্যতম সেরা ম্যাচ দেখা গেল রবিবার। মুম্বই এবং বেঙ্গালুরুর মধ্যে কে প্লে-অফের চতুর্থ স্থান দখল করবে তাই নিয়ে লড়াই ছিল। আগের ম্যাচে মুম্বই জেতায় তারা প্লে-অফের দিকে এক পা বাড়িয়েই রেখেছিল। বেঙ্গালুরুকে জিততেই হত। কোহলির শতরানে তারা লড়াকু স্কোরও খাড়া করেছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না।

১৯৮ রান বেঙ্গালুরুর মাঠে খুব বড় স্কোর ছিল না। কিন্তু লড়াই করার মতো ছিল নিঃসন্দেহে। তবে গুজরাতের ব্যাটিং অর্ডার এতটাই শক্তিশালী এবং আরসিবির বোলিং বিভাগ এতটাই ভঙ্গুর যে শুরু থেকেই অসমান লড়াই চলছিল। ঋদ্ধিমান সাহা কম রানে আউট হলেও গুজরাত ঘাবড়ায়নি। তিন নম্বরে নামা বিজয় শঙ্কর জুটি বাঁধলেন শুভমনের সঙ্গে। দু’জনে মিলে দ্বিতীয় উইকেটে ১২৩ রান তুললেন। ওখানেই বেঙ্গালুরুর হাত থেকে ম্যাচ বেরিয়ে গিয়েছিল।

তবে দাসুন শনাকা এবং ডেভিড মিলার পর পর ফিরে যাওয়ায় এবং রান তোলার গতি কিছুটা কমে যাওয়ায় সামান্য আশা জেগেছিল বেঙ্গালুরুর মনে। কিন্তু তা মিলিয়ে গেল শুভমনের সৌজন্যে। একার হাতে ম্যাচটা শেষ করে এলেন তিনি। প্রথম ইনিংসের কোহলির যে রকম দর্শনীয় ব্যাটিং দেখা গিয়েছিল, সে রকমই খেললেন শুভমন। আগাগোড়া বোলারদের বিরুদ্ধে দাপট, দর্শনীয় সব শট।

তার আগে আইপিএলে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে শতরান করেন বিরাট কোহলি। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের পর এ বার গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে। রবিবার গুজরাতের বিরুদ্ধে তাঁর শতরান আসে ৬০ বলে। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে দলকে ভদ্রস্থ রানে পৌঁছে দেন। স্ত্রী অনুষ্কা শর্মার সামনে ৬১ বলে অপরাজিত ১০১ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।

আরসিবির ইনিংসের আগাগোড়া দেখা গেল কোহলির আস্ফালন। আগের ম্যাচে শতরান এসেছিল রান তাড়া করতে গিয়ে। এই ম্যাচে শুরুতেই টসে হেরে ধাক্কা খায় আরসিবি। স্কোরবোর্ডে বড় রান তুলতে হবে এই চ্যালেঞ্জ কাঁধে নিয়ে খেলতে নেমে কোহলি আবার বুঝিয়ে দেন, তিনি শক্ত ধাতুতে গড়া। গুজরাত দলে মহম্মদ শামি, রশিদ খান রয়েছেন, যাঁরা বেগনি টুপির লড়াইয়ে প্রথম দুই স্থানে। সেই দলের বিরুদ্ধেই বোলারদের নিয়ে ছেলেখেলা করেন কোহলি। মাঠের এমন কোনও জায়গা নেই যেখানে তিনি শট মারেননি। অনবদ্য ফ্লিক, পুল, স্কোয়্যার কাট সবেতেই সমান স্বচ্ছন্দ।

মরণবাঁচন ম্যাচ। প্লে-অফে উঠতে গেলে জিততেই হবে। এই অবস্থায় দলের বাকি ব্যাটাররা যখন সবাই ব্যর্থ, তখন রক্ষাকর্তা হয়ে এগিয়ে আসেন সেই কোহলিই। এমনিতে গোটা প্রতিযোগিতায় এত দিন পর্যন্ত মাত্র আড়াই খানা ব্যাটারের উপর ভরসা করে এগিয়ে এসেছে আরসিবি। কোহলি এবং ফাফ ডুপ্লেসি ওপেনিং জুটিতে দলের অর্ধেকেরও বেশি রান করেছেন। কয়েকটি ম্যাচে অবদান রেখেছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েলও। এ ছাড়া আরসিবির হয়ে গোটা মরসুমে বলার মতো অবদান আর কারও নেই। গত বার তবু রজত পাটীদার ছিলেন। এ বার তিনি ছিটকে যাওয়ায় মিডল অর্ডারে ভরসা দেওয়ার মতো কেউ ছিলেন না। দীনেশ কার্তিক, মহিপাল লোমরোররা কোন ম্যাচে খেলবেন কেউ জানে না। তার ফল ভুগতে হল।

গুজরাতের বিরুদ্ধে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমেছিল শুরুটা ভাল করেছিল আরসিবি। বিরাট এবং ফাফ মিলে পাওয়ার প্লে-র ৬ ওভারে ৬২ রান তুলে দেন। তবে অন্যান্য দিনের মতো শতরানের জুটি আর হয়নি। দলের ৬৭ রানের মাথায় ফেরেন ফাফ। ১৯ বলে ২৮ রান করেন তিনি।

তিনে নামেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। একটি চার এবং একটি ছয় মেরে শুরুটা ভালই করেছিলেন। তিনি অতিরিক্ত আগ্রাসী হওয়ার ফল ভুগতে হল তাঁকে। রশিদ খানের গুগলিতে ঠকে গিয়ে বোল্ড হলেন। এর পর বেঙ্গালুরু শিবিরে কেবল আসা-যাওয়ার পালা। মহিপাল লোমরোর এক রানে ফিরলেন। দীনেশ কার্তিক প্রথম বলেই আউট। মাঝে একটু মারকুটে ব্যাটিং করে গেলেন মাইকেল ব্রেসওয়েল (২৬)। শেষের দিকে কোহলির সঙ্গে জুটি বেঁধে কিছুটা অবদান রাখলেন অনুজ রাওয়াত (২৩)। কিন্তু বেঙ্গালুরু তাতেও জিততে পারল না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE