একটা সময় ছিল, যখন ভারতের হাতে পেসার বলতে ছিল একটা কপিল দেব, একটা জাভাগাল শ্রীনাথ বা একটা জাহির খান। নিজেদের সেরা সময় এই পেসাররা কখনও সে ভাবে জুটি বেঁধে খেলতে পারেননি ভারতের হয়ে। কিন্তু এখন ছবিটা বদলেছে বলে মনে করেন ইশান্ত শর্মা। এই পেসার বলে দিচ্ছেন, এখন ভারতের হাতে অন্তত আট থেকে ন’জন ফর্মে থাকা পেসার আছে। যে কারণে ভারতের বোলিং আক্রমণ যে কোনও পরিবেশের জন্য এখন তৈরি।
বিরাট কোহালির এই দলে ইশান্তই হলেন সব চেয়ে অভিজ্ঞ বোলার। ৮২ টেস্ট খেলে এই পেসারের সংগ্রহ ২৩৮ উইকেট। পয়লা অগস্ট থেকে শুরু ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে ইশান্তেরই ভারতীয় বোলিংকে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা। তার আগে তিনি ইংল্যান্ডের এক সংবাদপত্রে বলেছেন, ‘‘আগে সবাই বলত, ভারত নাকি দ্রুত গতির বোলার তৈরি করতে পারে না। এখন আমাদের হাতে আট থেকে ন’জন ভাল দ্রুত গতির বোলার আছে, যারা ভারতের হয়ে টেস্ট খেলতে তৈরি। আমাদের হাতে এখন যে বোলিং আক্রমণ আছে, তাতে আমরা ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজ জিততেই পারি।’’
ভারতীয় পেস আক্রমণের প্রশংসা শোনা গিয়েছে এক প্রাক্তন ক্রিকেটারের মুখেও। তিনি জাহির খান। জাহির বলেছেন, ‘‘ভুবনেশ্বর কুমার এবং যশপ্রীত বুমরা ফিটনেস সংক্রান্ত সমস্যায় হয়তো প্রথম দিকে খেলতে পারবে না। কিন্তু আমাদের হাতে আরও ভাল ভাল পেসার আছে। যেমন, ইশান্ত, উমেশ যাদব, মহম্মদ শামি। আমি নিশ্চিত, ওরাও ভাল করবে।’’
আকর্ষণ: ইংল্যান্ডে খোশমেজাজে অনুষ্কা-বিরাট। ছবি: টুইটার
একটা সময় বলা হত, ভারতে পেসার হয়ে কোনও লাভ নেই। তার চেয়ে স্পিনার হলে লাভ হবে। যা নিয়ে ইশান্ত একটু মজা করে বলেছেন, ‘‘পেসার হওয়ার সিদ্ধান্তটা আমার নিজেরই। তাই স্পিনার না হয়ে পেসার হওয়ার জন্য আমি কাউকে দায়ী করতে পারি না।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘স্বাভাবিক ভাবেই জোরে বল করতে গেলে শরীরের ওপর ধকলটা বেশি পড়ে। কিন্তু ব্যাপারটা খুব উপভোগ্যও। ফাস্ট বোলিং এক জনের চারিত্রিক দৃঢ়তা, এক জনের শক্তি, এক জনের দক্ষতার চূড়ান্ত পরীক্ষা নেয়। ভারতে জন্মেও এক জন দ্রুত গতির বোলার হতে পেরে আমি খুশি।’’
চার বছর আগে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে লর্ডস টেস্ট জয়ে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন ইশান্ত। দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৮ রানে সাত উইকেট নিয়ে। ইংল্যান্ডে বল করার সুযোগ পেলে তিনি যে খুশিই হন, তা পরিষ্কার ইশান্তের কথায়। বলছিলেন, ‘‘ইংল্যান্ডের আবহাওয়া খুবই ভাল। এখানে লম্বা স্পেল করতে কোনও সমস্যা হয় না। পরিবেশও পেসারদের অনুকূলে থাকে। পিচ থেকেও সাহায্য পাওয়া যায়।’’
মুম্বইয়ে এক বিয়ের অনুষ্ঠানে স্ত্রী সাক্ষী ও মেয়ে জিভাকে নিয়ে ধোনি। ছবি: পিটিআই।
ইশান্ত স্বীকার করছেন, যখন ক্রিকেট খেলা শুরু করেছিলেন, ট্রেনিং বা ফিটনেস সংক্রান্ত ব্যাপারে খুব একটা ওয়াকিবহাল ছিলেন না। ‘‘আমার বিশেষ ধারণা ছিল না এই ট্রেনিংয়ের ব্যাপার নিয়ে। কিন্তু এখন আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর সঙ্গে সঙ্গে, ফিটনেস নিয়ে অনেক কিছু জেনেছি। এখন আমরা অনেক ফিট। এটা বুঝেছি, দেশের হয়ে দীর্ঘদিন ধরে খেলে যেতে হলে সব রকম পরিশ্রমই করতে হবে। শুধু ব্যাট বা বল করলে হবে না। জিমে যেতে হবে, দৌড়তে হবে, ডায়েট ঠিক করতে হবে। একটা পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যেতে হবে,’’ বলেন তিনি।
সামনের মাসেই তিরিশে পা দেবেন ইশান্ত। তার আগে এই পেসার জানিয়ে রাখছেন, যে কোনও চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার জন্য তিনি তৈরি।