পাঁচশো কিলো লাড্ডু।
পাঁচশো টি শার্ট।
পাঁচশো বেলুন।
পাঁচশো নিয়ে ভারতীয় শিবিরের উদ্দীপ্ত বার্তা।
মঙ্গলবারের গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে যদি কেউ কয়েক ঘণ্টা কাটাতেন, ঘণ্টাপিছু অন্তত একটা করে খবর তাঁর কানে ঢুকতই ঢুকত। এমনিতেই এখন শহরের যে কোনও রাস্তাঘাট, অলি-গলিতে ঢুকে পড়লে নানাবিধ হোর্ডিং-বিজ্ঞাপনের পাশে একটা পোস্টার নিয়মিত চোখে পড়বে। বিরাট কোহালির ফ্লাইং কিসের ছবির ঠিক তলায় উত্তরপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থার ডিরেক্টর রাজীব শুক্লর হাসি-হাসি মুখ। নীচে ভারতের পাঁচশো নম্বর টেস্ট কানপুরে আয়োজন করার জন্য বিশেষ ধন্যবাদ-জ্ঞাপন।
স্টেডিয়ামে ঢুকে পড়লে তো কথাই নেই। কোথাও কানে আসবে ভারতীয় কোচ অনিল কুম্বলের উদাত্ত হুঙ্কার, “সেই উনিশশো বত্রিশ থেকে প্রত্যেক ভারতীয় টিম দেশের ক্রিকেটের মানকে উঁচু থেকে আরও উঁচুতে নিয়ে গিয়েছে। কথা দিচ্ছি, আগামী পাঁচ-দশ বছরে এই টিম ভারতীয় ক্রিকেটের মান আরও উন্নত করার চেষ্টা করবে। এই টেস্টটা কেন, সিরিজটাই জিততে হবে,” কোথাও বা দেখতে পাওয়া যাবে আসন্ন টেস্ট-উৎসবের নেশায় আগাম আচ্ছন্ন হয়ে থাকা ক্রিকেট কর্তাকে। যিনি নামতা পড়ার মতো হিসেব দিয়ে দেবেন, টি-শার্টের সঙ্গে পাঁচশো কিলো লাড্ডু বিতরণ হবে গ্যালারিতে... বেলুন উড়বে... স্পেশ্যাল কয়েন দিয়ে টস... নিমন্ত্রিত প্রাক্তন ভারত অধিনায়কদের মধ্যে সচিন তেন্ডুলকর, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের কনফার্মেশন চলে এসেছে...।
ক্রিকেটের আদর্শ মেহফিল বললেও অত্যুক্তি হয় না। শোনা গেল, সিরিজের ব্রডকাস্টারদের তরফেও কিছু প্ল্যানিং আছে। যেমন একটা শোয়ে পাঁচশো টেস্টের স্মরণীয় কিছু মুহূর্ত দিয়ে একটা প্যাকেজ করার ভাবনা। সমস্যাটা বরং অন্য জায়গায়। ভারতীয় শিবিরে। চতুর্দিকে ক্রিকেট-উৎসবের সুখকর আবহেও বিষাদ এবং প্রশ্নের মেঘ সেখানে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে।
ইশান্ত শর্মাকে নিয়ে বিষাদ। শিখর ধবনকে নিয়ে প্রশ্ন।
ভারতীয় পেস ব্যাটারির সবচেয়ে অভিজ্ঞ সদস্যের যে চিকুনগুনিয়া হয়েছে, জানা ছিল। নতুন খবরটা হল, চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত ইশান্ত কানপুর টেস্ট খেলতে পারছেন না। টিমের সঙ্গে কানপুরে আসেনওনি ইশান্ত, এবং কলকাতায় দ্বিতীয় টেস্টেও যে নামছেন, তারও কোনও নিশ্চয়তা এখন পর্যন্ত নেই।
ইশান্ত অসুস্থ। শিখর আবার ফর্ম নিয়ে জর্জরিত। এ দিন ভারতীয় নেটে প্রথম দিকে কোথাও পাওয়াই গেল না দিল্লির বাঁ হাতি ডাকসাইটে ওপেনারকে। কেএল রাহুল, অজিঙ্ক রাহানে, বিরাট কোহালিরা নেট সেশন শেষ করে যাওয়ার পর নেটে ঢুকলেন শিখর। রবিচন্দ্রন অশ্বিন-অমিত মিশ্রদের সঙ্গে। প্রথম দিকে শুধু তাঁকে থ্রো ডাউন আর ফিল্ডিং প্র্যাকটিস করতেই দেখা গেল। আর টিমের নেট সেশন যদি কোনও ইঙ্গিত হয়, তা হলে সিরিজের প্রথম টেস্টে মুরলী বিজয়ের সঙ্গে লোকেশ রাহুল ওপেনিংয়ে গেলে অবাক হওয়ার থাকবে না।