অচিন্ত্যর নজরে এখন প্যারিস অলিম্পিক্স। ফাইল ছবি।
অচিন্ত্য শিউলি এবং জেরেমি লালরিনুঙ্গা। কমনওয়েলথ গেমসে ভারোত্তোলনে দু’জনেই সোনা জিতেছেন। অথচ প্যারিস অলিম্পিক্সে যেতে পারবেন তাঁদের এক জন। দুই বন্ধুকে পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে হবে প্যারিসের টিকিট নিশ্চিত করতে।
বার্মিংহামে ৭৩ কেজি বিভাগে সোনা জিতেছেন বাংলার অচিন্ত্য। মণিপুরের জেরেমি সোনা জেতেন ৬৭ কেজি বিভাগে। ইন্টারন্যাশনাল ওয়েটলিফটিং ফেডারেশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, প্যারিস অলিম্পিক্সে পুরুষদের ভারোত্তোলনে ৬৭ কেজি বিভাগ থাকবে না। তাই প্যারিসে যেতে হলে ওজন বাড়িয়ে জেরেমিকে নামতে হবে অচিন্ত্যর ৭৩ কেজি বিভাগে। জেরেমি জানিয়েও দিয়েছেন, ওজন বাড়িয়ে ৭৩ কেজি বিভাগেই নামতে চান প্যারিস অলিম্পিক্সে।
৭৩ কেজি বিভাগে জাতীয় রেকর্ড অচিন্ত্যর দখলে। তাঁকেই এ বার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছেন ঘনিষ্ঠ বন্ধু জেরেমি। কাজটা কঠিন। তবু চেষ্টা করতে চান জেরেমি। তিনি বলেছেন, ‘‘আমার স্বাভাবিক ওজন ৬৫ কেজি। তাই শরীরের ওজন অনেকটা বাড়াতে হবে। বিষয়টা মোটেও সহজ নয়।’’ কমনওয়েলথ গেমসের পর কয়েক দিন দেশে কাটিয়েই জেরেমি চলে গিয়েছেন আমেরিকায়। শুরু করে দিয়েছেন প্রস্তুতি। সেন্ট লুইসে সাড়ে তিন সপ্তাহের একটি প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগ দিয়েছেন। সেখানে মূলত শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ নেবেন জেরেমি।
এমন সমস্যা জেরেমির কাছে নতুন নয়। ২০১৮ সালের যুব অলিম্পিক্সে তাঁর বিভাগ ছিল ৬২ কেজি। কমনওয়েলথ গেমসের জন্য ওজন বাড়িয়ে ৬৭ কেজি বিভাগে নামেন। জেরেমি বলেছেন, ‘‘২০১৯ সাল থেকেই নিজের ওজন বাড়ানোর চেষ্টা করছি। তবু এখনও খুব একটা ওজন বাড়েনি। অন্তত ৭০ কেজি ওজন করতে হবে। খাদ্যতালিকায় পরিবর্তন করতে হবে। অন্য রকম সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করতে হবে। অনুশীলনের ধরন বদলাতে হবে। সব কিছুই করতে হবে নির্দিষ্ট অনুপাতে।’’ এশিয়ান গেমস এবং বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ৬৭ কেজি বিভাগ রয়েছে। অথচ প্যারিসে নেই। বিষয়টা চিন্তায় রাখলেও অলিম্পিক্সকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন জেরেমি।
জাতীয় শিবিরে জেরেমি এবং অচিন্ত্যর কোচ বিজয় শর্মা। তিনি দুই ছাত্রের লড়াই নিয়ে উৎসাহিত। বিজয় বলেছেন, ‘‘জেরেমি এবং অচিন্ত্য একই বিভাগে লড়াই করবে। এটা ভাল দিক। প্রস্তুতিতেই কঠিন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হবে। এতে ওদের মধ্যে কোনও কিছুকে সহজ ভাবে নেওয়ার মানসিকতা তৈরি হবে না।’’ বিজয় আরও বলেছেন, ‘‘ওরা প্রচুর পরিশ্রম করতে পারে। সব সময় নিজেদের মান উন্নত করার চেষ্টা করে। সব সময় পরস্পরকে উৎসাহিত করে। এ বার প্রতিযোগিতা আরও কঠিন। অলিম্পিক্সে পাঁচটি বিভাগ থাকবে। তার কোনও একটায় ওদের যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।’’
এত দিন দু’জনের বিভাগ ছিল আলাদা। সমস্যা হয়নি। নতুন চ্যালেঞ্জ কি গত কয়েক বছরের বন্ধুত্বে প্রভাব ফেলবে? জুনিয়র স্তর থেকেই একে অপরের অভিন্নহৃদয় বন্ধু অচিন্ত্য এবং জেরেমি। জাতীয় শিবিরে সব সময় এক সঙ্গে থাকেন তাঁরা। সেই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এ বার পরিণত হবে ত্রিপাক্ষিক সম্পর্কে। নতুন পক্ষের নাম লড়াই। হার না মানার লড়াই। প্রিয় বন্ধুর প্যারিস অলিম্পিক্সের স্বপ্নভঙ্গ করার লড়াই। যে লড়াই ঘিরে কোচের চোখেও প্যারিসের পদক!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy