Advertisement
E-Paper

চোট অভাবের বাধা লাফিয়ে পার

বাড়িতে অভাব নিত্যসঙ্গী। বাবার ছোট ব্যবসার আয় পরিবারের একমাত্র রোজগার। অভাব জয় করলেও চোট সমস্যা এড়ানো যায়নি। কিন্তু এত প্রতিকূলতাও আটকে রাখতে পারেনি তাপসের সাফল্য।

রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৬ ০৮:২৫
অনুশীলনে তাপস। নিজস্ব চিত্র।

অনুশীলনে তাপস। নিজস্ব চিত্র।

বাড়িতে অভাব নিত্যসঙ্গী। বাবার ছোট ব্যবসার আয় পরিবারের একমাত্র রোজগার। অভাব জয় করলেও চোট সমস্যা এড়ানো যায়নি। কিন্তু এত প্রতিকূলতাও আটকে রাখতে পারেনি তাপসের সাফল্য। রাজ্য অ্যাথলেটিক মিটে অনূর্দ্ধ ২০ বিভাগে সেরা নির্বাচিত হয়েছে ময়নাগুড়ির লক্ষীর হাটের বাসিন্দা স্কুল ছাত্র তাপস রায়।

বোলবাড়ি নীলকান্ত পাল হাইস্কুলের ছাত্র তাপস সামনের বার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। লঙ জাম্প করতে গিয়ে কোমরে চোট পেয়েছে সে। কিন্তু সেই চোটের চিকিৎসা করার আর্থিক সামর্থ্য নেই তার পরিবারের। তা সত্ত্বেও চোট নিয়েই একনিষ্ঠ ভাবে অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছে তাপস। গত সপ্তাহে কলকাতায় অনুষ্ঠিত রাজ্য এ্যাথলেটিক মিটে অনূর্ধ্ব ২০ বিভাগে সেরা স্বর্ণপদক প্রাপ্ত তাপসের প্রথম সাফল্য এসেছিল কয়েক বছর আগেই। ২০০৯ সালে বার্ষিক স্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষক রাজীব ভট্টাচার্যের নজরে আসে সে। ২০১০-এ রাজ্য অ্যাথলেটিক মিটে লংজাম্পে সোনা পায় সে। তারপর টানা ২০১৫ সাল পর্যন্ত একই বিভাগে সেরার পদ দখলে ছিল তার। এ বছরই প্রথম যোগ দিয়ে ওই একই বিভাগে অনূর্ধ্ব ২০ বিভাগে সোনা পেল সে। রাজ্য স্কুল গেমসেও সে বরাবর তার ইভেন্টে প্রথম হয়েছে। জাতীয় স্তরে ২০১০ সালে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত পঞ্চায়েত যুব ক্রীড়া খেল প্রতিযোগিতায় অনূর্দ্ধ ১৬ বিভাগে লঙজাম্পে তৃতীয় হয় তাপস। ২০১৫ সালে কালিকটে অনুষ্ঠিত জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অনূর্দ্ধ ২০ বিভাগে দ্বিতীয় হয় সে। এ বছর রাঁচিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতাতেও তৃতীয় স্থান ছিল তাপসের দখলে। এখন তাপস রয়েছে কলকাতায় সাইয়ের ক্যাম্পে। প্রতিযোগিতা শেষে বাড়ি ফিরে তাপসের আক্ষেপ, “কোমরের ব্যাথাটা না থাকলে আরও ভালও ফল করতে পারতাম।” পাঁচ মাস আগে কলকাতায় অনুশীলন করতে গিয়ে তার কোমরে চোট লাগে। চিকিৎসক ওষুধ দিলেও তা কমেনি। একাধিক পরীক্ষা করে আরও ভাল চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলা হলেও আর্থিক কারণে তা আর হয়ে ওঠেনি।

তাপসের বাবা সদানন্দ রায় বলেন, “আমরা যে রকম পরিবারের লোক সেখান থেকে এইসব খেলাধুলা করা মানায় না। খেলতে গেলে চোট লাগবেই। চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকলে ভাল খেলোয়াড় তৈরি হতে পারবে না।।” তাপসের কোচ স্কুলের ক্রীড়াশিক্ষক রাজীব ভট্টাচার্য বলেন, “তাপসের চোট লাগলে আমরা সহৃদয় ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এর আগে চিকিৎসা করিয়েছি।’’ তাপসের মতো সফল অ্যাথলিটরা যাতে সবসময় ফিট থাকে তার জন্য জেলা ক্রীড়া সংস্থা এবং জেলা স্কুল ক্রীড়া সংস্থার উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত বলে জানান তিনি।

জলপাইগুড়ি জেলা ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক ভোলা মণ্ডল বলেন, “প্রতিটি খেলোয়াড়ের বিমা করে দিলে সমস্যা মেটে। আমরা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’’ এর আগে উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা কোনও কারণে সফল হয়নি বলে জানান তিনি।

তাপসের প্রতিবেশীরা চাইছেন এলাকার বিধায়ক, সাংসদরা যেন এগিয়ে আসেন তার সাহায্যে।

state athelitic champion poverty
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy