Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
kidambi srikanth

কোভিডের ভুয়ো ফল বিভ্রান্তিকর, তোপ শ্রীকান্তের

নখিয়া প্রথমে ‘পজ়িটিভ’ আসেন, যে কারণে ম্যাচ খেলতে পারেননি। দু’দিন পরেই আবার জানানো হয়, তাঁর কোভিড হয়নি।

সরব: কোভিডের সময়ে কর্তাদের বার্তা শ্রীকান্তের ।

সরব: কোভিডের সময়ে কর্তাদের বার্তা শ্রীকান্তের । ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২১ ০৭:০২
Share: Save:

অলিম্পিক্সের আগে প্রস্তুতির স্বাধীনতাটাই কেড়ে নিয়েছে কোভিড-১৯ অতিমারি, বলে মনে করছেন কিদম্বি শ্রীকান্ত। সারাক্ষণ কোভিড পরীক্ষা করিয়ে যাওয়া, জৈব সুরক্ষার মধ্যে পড়ে থাকা— এ সবের প্রভাবও সাংঘাতিক ভাবে পড়ছে বলে তিনি মনে করেন।

ভারতীয় পুরুষ ব্যাডমিন্টনে সেরা মুখ কিদম্বি বলে দিচ্ছেন, ‘‘আগের মতো কোনও কিছুই আর সহজ, স্বাভাবিক নেই। জৈব সুরক্ষা বলয়ই এখন আমাদের জীবন।’’ তাঁর মতে, সব চেয়ে সমস্যায় ফেলছে ভুয়ো কোভিড পরীক্ষার ফল। দেখা যাচ্ছে, একাধিক খেলায় প্রথমে হয়তো ‘পজ়িটিভ’ আসছেন কিন্তু পরে তাঁর নমুনায় ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যাডমিন্টনে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে হয়েছে, এমনকি আইপিএলের মতো ধনী এবং জনপ্রিয় টি-টোয়েন্টি লিগে দিল্লি ক্যাপিটালসের বোলার অনরিখ নখিয়ার কোভিড পরীক্ষার ফল নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। নখিয়া প্রথমে ‘পজ়িটিভ’ আসেন, যে কারণে ম্যাচ খেলতে পারেননি। দু’দিন পরেই আবার জানানো হয়, তাঁর কোভিড হয়নি।

‘‘পজ়িটিভ ফল হাতে পেলে কিছু বোঝারও উপায় নেই কারণ, কেউ জানে না এটা ভুয়ো ফল কি না। তাই পরিস্থিতি সত্যিই খুব কঠিন,’’ সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলছেন শ্রীকান্ত। এ বছরের শুরুতে তাইল্যান্ড ওপেনে খেলতে গিয়ে কোভিড পরীক্ষার সময় রক্তাক্ত হয়ে ওঠে তাঁর নাক। সেই ছবি তিনি ভক্তদের সামনে তুলেও ধরেছিলেন। এর পরে তাইল্যান্ডেই ফের অন্য প্রতিযোগিতায় ব্যাঙ্ককের হোটেলের ঘরে তাঁকে এক সপ্তাহ বন্দি থাকতে হয় কারণ তাঁর ঘরে থাকা সঙ্গী বি সাই প্রণীতের করোনা ধরা পড়ে। কিন্তু সেই পরীক্ষার ফল ভুয়ো বলে জানা যায়। তার ফলে দু’জনকেই ভোগান্তির শিকার হতে হয়। শ্রীকান্ত বলছেন, ‘‘আমার মনে হয় নিজেদের ইচ্ছা মতো, সুবিধা মতো সময়ে ট্রেনিং করার স্বাধীনতাটাই আমরা হারিয়েছি কোভিডের কারণে। এর আগে আমার সুবিধা মতো সময়ে জিমে যেতে পারতাম। এখন যে সময়ে আমাকে যেতে বলা হবে, শুধু সেই সময়টাতেই যেতে পারব। আগের মতো প্রস্তুতি সারাই যাচ্ছে না।’’ যোগ করছেন, ‘‘তাইল্যান্ডে বেশি ম্যাচই খেলতে পারিনি। ওয়ার্ল্ড ট্যুর ফাইনাল্‌স খেললাম কোনও প্রস্তুতি ছাড়াই। অল ইংল্যান্ডে গিয়েই কয়েক জনের করোনা ধরা পড়ল। তাই অনুশীলনই করতে পারলাম না।’’

তা হলে এই পরিস্থিতিতে খেলোয়াড়েরা লড়াই করবেন কী ভাবে? শ্রীকান্ত বলছেন, ‘‘এ সব নিয়ে বেশি ভেবেও লাভ হবে না। যেটা তোমার হাতে আছে, তা নিয়েই শুধু ভাবা যেতে পারে। আমাদের মানিয়ে নিতেই হবে। আগামী ছ’সাত মাস এ ভাবেই চলবে বলে মনে হয়।’’ শেষ তিনটি যোগ্যতামান পর্বের প্রতিযোগিতায় ভাল খেলে তিনি অলিম্পিক্সের ছাড়পত্র আদায় করে নিতে চান। তবে বিশ্ব ব্যাডমিন্টন সংস্থার কাছে আর্জি জানাচ্ছেন, কোভিডের এই সময়টাতে খেলোয়াড়দের খাওয়াদাওয়ার বিষয়ের দিকে নজর দিতে। ‘‘খাবার নিয়ে বিশ্ব ব্যাডমিন্টন সংস্থার ভাবা উচিত। হয়তো সকলকে তাদের পছন্দ মতো খাবার দেওয়া যাবে না। কিন্তু খাদ্য পদের সংখ্যা আর একটু বাড়ানো যেতেই পারে। যাতে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় খেলতে এসে ঠিকঠাক খাবার পায় সকলে। এ ব্যাপারে আর একটু যত্ন আশা করা যেতেই পারে। অল ইংল্যান্ডে প্রথম কয়েক দিন যখন আমাদের বাইরে যেতে দেওয়া হচ্ছিল না, তখন খুব বেশি পছন্দ ছিল না। ভাত পাইনি আমরা।’’ সামনে লক্ষ্য এখন তিনটি যোগ্যতামান পর্বের প্রতিযোগিতায় ভাল খেলা। যার প্রথমটা নয়াদিল্লিতে ইন্ডিয়া ওপেন। ১১-১৬ মে হবে। ‘‘এখন আর মাত্র তিনটিই অলিম্পিক যোগ্যতামান প্রতিযোগিতা রয়েছে। আশা করছি, এই তিনটি প্রতিযোগিতা হবে,’’ বলছেন তিনি। ২০১৯-এ ইন্ডিয়া ওপেনে ফাইনালে উঠে হেরে যান তিনি। কিন্তু শ্রীকান্ত জানেন না, এই মুহূর্তে কী ভাবে র‌্যাঙ্কিং প্রথা চলছে। তাই কোনও অঙ্কের মধ্যে না গিয়ে বলে ফেলছেন, ‘‘আমার লক্ষ্য, এই তিনটি প্রতিযোগিতায় ভাল খেলা। যদি আমি ভাল করতে পারি, তা হলে অলিম্পিক্সে যাওয়া আটকাবে না।’’ যা পরিস্থিতি, টোকিয়োর ছাড়পত্র পেতে গেলে এই তিনটি প্রতিযোগিতায় সেমিফাইনাল, কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছতে হবে শ্রীকান্তকে। তাঁর সাম্প্রতিক ফল বলছে, সেই কাজ মোটেও সহজ হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

badminton kidambi srikanth India Team
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE