Advertisement
E-Paper

‘অন্য’ মোরিনহোর সঙ্গে আজ যু্দ্ধ ক্লপের

ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের প্রাক্তন কিংবদন্তি কোচ স্যর অ্যালেক্স ফার্গুসন বলেছিলেন, ‘‘মরসুমে আর যাই হোক না কেন, লিভারপুলকে হারাতেই হবে।’’ লিভারপুল আইকন স্টিভন জেরার তাঁর বাড়িতে ক্যাবিনেট তৈরি করেছিলেন। যেখানে বিশ্ববিখ্যাত সমস্ত ক্লাবের জার্সি সযত্নে রেখে দিতেন।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৬ ০৪:০২

ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের প্রাক্তন কিংবদন্তি কোচ স্যর অ্যালেক্স ফার্গুসন বলেছিলেন, ‘‘মরসুমে আর যাই হোক না কেন, লিভারপুলকে হারাতেই হবে।’’

লিভারপুল আইকন স্টিভন জেরার তাঁর বাড়িতে ক্যাবিনেট তৈরি করেছিলেন। যেখানে বিশ্ববিখ্যাত সমস্ত ক্লাবের জার্সি সযত্নে রেখে দিতেন। কিন্তু তাঁর সেই ক্যাবিনেটে কোনওদিন জায়গা পায়নি ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের জার্সি।

দুই ক্লাবের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আগুন ঠিক এতটাই!

লিভারপুল বনাম ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড মানে তো বাকি লিগ ম্যাচের মতো শুধু তিন পয়েন্টের জন্য লড়াই নয়। বরং ঐতিহাসিক এক ম্যাচ যেখানে একে অপরের প্রতি রাগ ফুটবলের মাধ্যমে বের করে দু’দল।

আজ, সোমবার প্রিমিয়ার লিগে ফের মুখোমুখি হতে চলেছে ইংল্যান্ডের দুই সফলতম ক্লাব। যার আগে সবাই আশা করেছিল যুদ্ধটা হয়তো প্রাক্ ম্যাচ সাংবাদিক সম্মেলন থেকেই শুরু হয়ে যাবে। কারণ দু’দলের ম্যানেজারের নাম যে জোসে মোরিনহো এবং যুরগেন ক্লপ!

কিন্তু বাস্তবে রবিবারের অ্যানফিল্ড স্টেডিয়ামের প্রেসরুম কী দেখল?

মোরিনহো, ইপিএল সংসারের খারাপ ছেলে-র তকমা পাওয়া কোচ বলে দিচ্ছেন, তিনি এই কঠিন লড়াইয়ে নিজেকে পাল্টে ফেলে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড ড্রেসিংরুমের কোরাসের গলা করে ফেলেছেন! দল যেমন, তিনিও তেমন। এবং ইউনাইটেড নাকি এ মরসুমে ভীষণ শৃঙ্খলাপরায়ণ।

ক্লপ, বুন্দেশলিগা থেকেই যে জার্মানকে দলের কোচের চেয়েও বেশি করে মেন্টর বলা হয়ে চলেছে, তাঁর এ দিন লিভারপুলের প্রাক্-ম্যাচ সাংবাদিক সম্মেলনে অপ্রত্যাশিত ভাবে হাসির হল্লা! ‘‘আমি তো গত ক’দিন ধরেই আমার ফুটবলারদের টেনে চলেছি। যাতে ওরা আরও লম্বা হয়,’’ আপাত সিরিয়াস ক্লপের প্রথম কথাতেই এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে হাসির রোল ওঠে। যা থামার পর ক্লপ যোগ করেন, ‘‘ওদের (ইউনাইটেড) শারীরিক ফুটবলের কথা মাথায় রেখেই আগাগোড়া টিমকে তৈরি রেখেছি। স্ট্র্যাটেজি কষছি। বিপক্ষের লম্বা, বড় শরীরের ফুটবলাররা আমাদের ডিফেন্সে যখন হানা দেবে তখন আমার ছেলেদের তো খেলার উচ্চতা বাড়াতে হবে, তাই না?’’

ক্লপ কী বস্তু তা জানেন ‘দ্য স্পেশ্যাল ওয়ান’-ও। ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলে দু’জনের টিমের পাঁচ বারের মুখোমুখিতে মোরিনহো ১-৩ পিছিয়ে। গোলও ক্লপের (১১-৭) টিমের বেশি। মোট পাসের সংখ্যাতে যতই (১৯৯৮-২৬৫৭) পিছিয়ে থাকুন না কেন জার্মান মগজাস্ত্র পর্তুগিজের তুলনায়। সে জন্যই কি না কে জানে, মোরিনহো সোমবারের মেগা ম্যাচের আগে সম্পূর্ণ অন্য কথায় চলে গিয়েছেন। ক্লপ শুধু তাঁর টিমের ফুটবলারদের কাছে নয়, ক্লাব সমর্থকদের কাছেও এক মোটিভেটর। প্লেয়ারদের থেকে তাঁদের নিজেদের সেরাটাই শুধু নয়, তাঁদের সাধ্যের বাইরেও কিছু টেনে বার করে আনতে ওস্তাদ ক্লপ। হয়তো সেটা মনে রেখেই মোরিনহো বলেছেন, ‘‘এ মরসুমে ইউনাইটেডও কিন্তু খুব শৃঙ্খলাবদ্ধ। এই পর্যায়ের বড় ম্যাচের জন্য আমাদের টিমে কোনও সমস্যা নেই।’’

সঙ্গে আরও চমকে দিয়ে মোরিনহোর মতো বিতর্কিত ফুটবল ম্যানেজার যোগ করেন, ‘‘ইপিএলের সংগঠক, ক্লাবগুলোর প্রতিনিধি, রেফারিদের নিয়ে টুর্নামেন্ট শুরুর আগের বৈঠকে যা-যা মাঠে ফুটবলারদের করতে আর না করতে বলে দেওয়া হয়েছে, আমরা সেই টিম যারা সেই সব নির্দেশ মেনে চলে।’’ এমনকী মহাযুদ্ধের রেফারি সম্পর্কেও ইউনাইটেড কোচ মোরিনহোর যেন সশ্রদ্ধা উৎকণ্ঠা প্রকাশ পাচ্ছে! ‘‘ওই টেলর ভদ্রলোকটি কাল মাঠে রেফারিং করতে মনে হয় বেশ চাপে থাকবেন। কিন্তু ইউনাইটেড মাঠ আর সাইডলাইনে সব নিয়ম মেনে চলবে।’’ ঘটনা হল, অ্যান্টনি টেলর থাকেন ম্যাঞ্চেস্টার শহরতলিতে। ইউনাইটেডের হোম গ্রাউন্ড ওল্ড ট্র্যাফোর্ড থেকে মাত্র সাড়ে ছয় কিমি দূরে। যা দেখেশুনে আবার কেউ কেউ মনে করছেন, মোরিনহোর এটা বিপক্ষ এবং রেফারি, দু’তরফের উপরই চাপ সৃষ্টির নতুন খেলা!

বছর দুই আগেই ম্যাঞ্চেস্টার সিটির কাছে লিভারপুলের হারের পর তৎকালীন ম্যানেজার রজার্স তোপ দেগেছিলেন সেই ম্যাচে ম্যাঞ্চেস্টার নিবাসী রেফারি নিয়োগ করার উপর। লিভারপুলের পক্ষে বলা হয়েছিল, ‘‘আশা করি ভবিষ্যতে লিভারপুল-ম্যাঞ্চেস্টার ম্যাচে মাঠে কোনও ম্যা়ঞ্চেস্টারবাসী রেফারি দেখতে হবে না।’’ কিন্তু আবার সেই ছবি!

মোরিনহো-ও কী আশঙ্কা নয় লিভারপুলের কাছে? চেলসির কোচ থাকার সময় লিভারপুলকে হারিয়ে কিংবা হেরে, দু’ক্ষেত্রেই তিনি বিতর্কে জড়িয়েছেন। কার্লিং কাপ ফাইনালে পিছিয়ে থেকে অতিরিক্ত সময় জেতার পরে লিভারপুল বেঞ্চের দিকে তাকিয়ে নিজের ঠোঁটে আঙুল দিয়ে ‘চুপ’ করতে বলেছিলেন। আবার লিভারপুলের কাছে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে গিয়ে বলেছিলেন, ‘‘ওদের গোলটা তো ভুতুড়ে গোল! বল আগেই সাইডলাইন পেরিয়ে গিয়েছিল। স্কোরার হল লাইন্সম্যান!’’

তাই কোন মোরিনহোকে কাল ক্লপের সামনে দেখা যাবে তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে এখন।

Jurgen Klopp Jose Mourinho
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy