Advertisement
E-Paper

নতুন লিগ করার হুঙ্কার দিল বাংলা

আইএসএলে খেলা নিয়ে কলকাতার দুই প্রধানের সঙ্গে ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল পটেলের সভা আজ শনিবার দুপুরে মুম্বইতে। সেই সভার আঠারো ঘণ্টা আগে ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের পাশে দাঁড়িয়ে ধুন্ধুমার যুদ্ধে নেমে পড়ল আইএফএ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৭ ০৪:১০

আইএসএলে খেলা নিয়ে কলকাতার দুই প্রধানের সঙ্গে ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল পটেলের সভা আজ শনিবার দুপুরে মুম্বইতে।

সেই সভার আঠারো ঘণ্টা আগে ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের পাশে দাঁড়িয়ে ধুন্ধুমার যুদ্ধে নেমে পড়ল আইএফএ। রীতিমতো অঙ্ক কষে শুরু হয়ে গেল পাল্টা চাপের খেলাও। ফেডারেশন ও আইএসএল কর্তৃপক্ষকে লক্ষ্য করে রীতিমতো হুমকির সুরে রাজ্য ফুটবল সংস্থার সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায় শুক্রবার বলে দিলেন, ‘‘ফুটবলকে শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। আইএসএলে খেলার জন্য যে সব শর্ত দুই প্রধানের উপর চাপানোর চেষ্টা হচ্ছে সেটা মেনে নেওয়া যায় না। এখন না হলেও পরে মহমেডানের উপরও এটা চাপানো হতে পারে। এতে বাংলার ফুটবল শেষ হয়ে যাবে। যদি সেটা হয় তা হলে প্রয়োজনে পাল্টা লিগ করব। সেখানে যে সব ক্লাব এই ব্যবস্থার শিকার হবে তাদের সবাই খেলবে।’’

সরাসরি না বললেও তিনি ইঙ্গিত দেন, আইজল, শিলং-সহ বেশ কয়েকটি ক্লাবের সঙ্গে এ ব্যাপারে প্রাথমিক কথা হয়েছে তাঁর। মুম্বইতে ঘাঁটি গেড়ে থাকা দুই প্রধানের কর্তারাও সরাসরি কোনও মন্তব্য না করলেও বুঝিয়ে দিয়েছেন, আইএফএ-র পাল্টা লিগ করলে তাতে সম্মতি আছে।

ভারতীয় ফুটবলে বহু চমকপ্রদ ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু পাল্টা লিগের কথা কোনও সংস্থা ঘোষণা করছে তা কখনও হয়নি। ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন, হকিতে লিগ, পাল্টা লিগ হয়েছে আগে। ফুটবলে যদি এরকম হয় তা হলে সেটা হবে প্রথমবার।

বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, মুম্বইতে সভা করতে যাওয়ার আগে আইএফএ কর্তাদের সঙ্গে শেষ যে সভা হয়েছিল দুই প্রধানের, সেখানেই এ ব্যাপারে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছিল। সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন আইএফএ প্রেসিডেন্ট ও ফেডারেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট সুব্রত দত্ত-ও। তিনি কি এই পাল্টা লিগের ভাবনায় সম্মতি জানিয়েছেন? আইএফএ সচিব বলেন, ‘‘উনি সব জানেন। বাংলার ফুটবলের কোনও ক্ষতি উনিও মানতে নারাজ।’’

সেই সভাতেই ঠিক হয়েছে দুই প্রধানকে আইএসএলে খেলতে না দিলে পাল্টা যে লিগ হবে সেই খেলাগুলি ফেলা হবে আতলেতিকো দে কলকাতার ম্যাচ চলার দিনগুলোতেই। কিন্তু এতে তো এটিকে-র সঙ্গেও আপনাদের বিরোধ বাধবে? উৎপলবাবু তা মানেননি। বলে দেন, ‘‘এক শহর এক টিম, এই নিয়ম পাল্টানো দরকার। লন্ডনের মতো শহর থেকে তো প্রিমিয়ার লিগের ন’টি ক্লাব খেলে। সময়ের সঙ্গে নিয়ম হয়, তা বদলও হয়। প্রয়োজনে এটিকের মালিকের সঙ্গেও কথা বলব আমরা। বাংলার ফুটবলকে বাঁচানোর জন্য আমরা মুখ্যমন্ত্রী, ক্রীড়ামন্ত্রীর সঙ্গেও সবাই মিলে কথা বলব।’’

তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, এটা করলে ফেডারেশন তো আপনার উপর তো ব্যবস্থা নিতে পারে। তাতে দমে না গিয়ে উৎপলের মন্তব্য, ‘‘যা হবার হবে। আইএফএ-র জন্ম কিন্তু এআইএফএফের আগে। এটা মাথায় রাখবেন। তবে আমি আশা করব কাল (শনিবার) মুম্বইয়ের সভায় হয়তো একটা সমঝোতা সূত্র বেরোবে।’’

উৎপলবাবুর পাল্টা লিগের তত্ব কতটা ফলপ্রসু হবে বা আদৌ বাস্তবে সম্ভব কি না তা সময় বলবে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, আইএফএ কেন দুই প্রধানের পাশে দাঁড়িয়ে এই নজিরবিহীন ঝুঁকিপূর্ণ যুদ্ধে নামল? আসলে কর্পোরেট জগতের লোক উৎপলবাবু জানেন, ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের অস্তিত্ব না থাকলে বাংলার ফুটবল শেষ হয়ে যাবে। শেষ হয়ে যাবে এ রাজ্যে ফুটবলের জনপ্রিয়তা। ‘‘একশো বছর ছুঁতে চাওয়া বা পেরিয়ে যাওয়া দুটো ক্লাবের নাম, জার্সির রং, লোগো বদলানোর চেষ্টা চলছে। এতে তো ক্লাবগুলোর অস্তিত্বও বিপন্ন হয়ে যাবে। সেটা কোনও মতেই করতে দেব না,’’ বলে দিলেন আইএফএ সচিব।

দুই প্রধানের সঙ্গে জোট গড়ে আইএফএ-র পাল্টা চাপের ‘বল’ আইএসএলের কোর্টে শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে পড়ে সেটাই দেখার। একইসঙ্গে দেখার আইএফএ-র এই হুঙ্কারে শেষমেশ প্রস্তাবিত লিগের ভাগ্য কী দাঁড়ায়।

ISL East Bengal Mohun Bagan Football
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy