Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
দেশে ফিরে কঠিন সার্ভের মুখে লিয়েন্ডার

তরুণদের সুযোগ দিতেই সব টাই খেলি না

বুধবার ভোরে তিনি মুম্বই বিমানবন্দরে। সন্ধ্যায় দিল্লিতে প্র্যাকটিসে। ব্যক্তি একজনই— লিয়েন্ডার পেজ। কে বলবে চার দিন আগেই বিয়াল্লিশের এই ‘তরুণ’ জীবনের ১৭ নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাব জিতে ফিরেছেন?

ডেভিস খেলতে চলে এলেন  লিয়েন্ডার। বুধবার। ছবি: পিটিআই।

ডেভিস খেলতে চলে এলেন লিয়েন্ডার। বুধবার। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৪:২১
Share: Save:

বুধবার ভোরে তিনি মুম্বই বিমানবন্দরে। সন্ধ্যায় দিল্লিতে প্র্যাকটিসে। ব্যক্তি একজনই— লিয়েন্ডার পেজ। কে বলবে চার দিন আগেই বিয়াল্লিশের এই ‘তরুণ’ জীবনের ১৭ নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাব জিতে ফিরেছেন?

এই বয়সেও কতটা চাঙ্গা তিনি, তা লিয়েন্ডারের এই ‘শিডিউল’ দেখেই বোঝা যায়। কিন্তু দেশের টেনিসের আগামী প্রজন্মের কথা যে ভাবা শুরু করে দিয়েছেন দেশের সর্বকালের সেরা টেনিস তারকা, তা তিনি স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন এ দিন দেশে ফিরে।

বছরটা তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে ভাল না কাটলেও কোর্টে দুর্দান্ত কেটেছে। তিনটি গ্র্যান্ড স্ল্যামে মিক্সড ডাবলস খেতাব জিতেছেন। ১৯৬৯-এর পর এই প্রথম সার্কিটে এমন ঘটল। সেই লিয়েন্ডার নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টাই না খেলার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় অনেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন, বয়সের ভার কি আর নিতে পারছেন না তিনি? আগের দিন নন-প্লেইং ক্যাপ্টেন আনন্দ অমৃতরাজ আবার বলে দেন, ‘‘লিয়েন্ডার এলেই তো খেলার সুযোগ পেয়ে যায়। তাই সাকেত মিনেনির জন্য খারাপ লাগছে। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ও ভাল খেলা সত্ত্বেও ও এ বার ওকে সুযোগ দেওয়া যাবে না।’’ যা নিয়ে ডেভিস কাপ শুরুর আগে কিছুটা বিতর্ক বেধেছিল।

সব শুনে এ দিন লিয়েন্ডার বলে দিলেন, ‘‘যে টাইগুলো আমরা সহজেই জিততে পারি, সেগুলোতেও যদি আমি খেলি, তা হলে চার-পাঁচ বছর আরও খেলতে পারি। কিন্তু নতুন খেলোয়াড় তৈরি করাটা খুব জরুরি। তারা যখন তৈরি হয়ে যাবে, ওদের র‌্যাঙ্কিং বেড়ে যাবে, তখন আমাকে সরে যেতেই হবে।’’ তরুণদের সুযোগ দিতেই যে তিনি মাঝে মাঝে সরে দাঁড়ান তা বলছিলেন লি, ‘‘নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টাইয়ে না খেলার সিদ্ধান্তটা খুব ভেবেচিন্তে এই কারণেই নিয়েছিলাম, যাতে একজন তরুণ খেলোয়াড় সুযোগ পায়। ওদের সুযোগ না দিলে ওরা তৈরি হবে কী করে? ওদের তো তৈরি হতে হবে। আমি চাই ওরা আমাকে সরিয়ে দিক।’’

বুধবার কোর্টে নেমে রোহন বোপন্নার সঙ্গে ঘণ্টাখানেক প্র্যাকটিস করার পর বুঝে নিলেন শুক্রবার থেকে চেকদের বিরুদ্ধে ডেভিসের রণক্ষেত্র ঠিক কেমন। প্র্যাকটিসের পর বললেন, ‘‘এই টাইয়ে ফিটনেসটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। এখন রাত আটটাতেই মনে হচ্ছে বেশ আর্দ্রতা রয়েছে। দিল্লির এই গরমে দুপুরে পাঁচ সেটের ম্যাচ খেলতে নামলে তাই কতটা ফিটনেস লাগবে, আন্দাজ করতেই পারছেন। তার উপর কোর্ট বেশ মন্থর। বলও লাফাচ্ছে। সব মিলিয়ে এই টাই জিততে বেশ পরিশ্রম করতে হবে।’’

লিয়েন্ডার পেজের অবশ্য প্রতিকুল অবস্থা থেকে ম্যাচ বার করে নিয়ে আসার অভিজ্ঞতার অভাব নেই। সেই অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার থেকে তুলে আনা পরামর্শ সতীর্থদের দিলেন লিয়েন্ডার, ‘‘শরীরকে তৈরি রাখতে হবে। এটাই সবচেয়ে বড় কথা। ডায়েট, স্ট্রেচিং আর রিকভারিং— এই তিনটে ব্যাপারের উপর জোর দিতেই হবে আমাদের। লম্বা র‌্যালি হবে। সে সব সামলে প্রথম সেট নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে ম্যাচ মোটামুটি তোমার। আর ম্যাচের ফারাক গড়ে দিতে পারে একটা শট। একটা র‌্যালি বা একটা সেটও নয়। এগুলো মাথায় রেখে খেলতে নামতে হবে।’’

উল্টোদিকে রাদেক স্টেপানেক। যাঁর সঙ্গে দুটো ডাবলস গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাব জিতেছেন লি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে তিনি জানিয়ে দিলেন, রাদেকের বিরুদ্ধে ডাবলস ম্যাচ জেতা বেশ কঠিন হয়ে উঠবে। বলেন, ‘‘রাদেক একজন অ্যাথলিট। ওর প্রতি আমার যথেষ্ট শ্রদ্ধা রয়েছে। শনিবারের ম্যাচটা সর্বোচ্চ মানের হতে চলেছে। আমার দেশের কোর্টে আমাকে হারানোর জন্য ও মরিয়া হয়ে উঠবে, কিছুতেই ছেড়ে দেবে না।’’

আজ বাদে কাল ডেভিসের এই কঠিন লড়াইয়ের আগেও অবশ্য তাঁর মাথায় রিও অলিম্পিকের ভাবনা ঘুরপাক খাচ্ছে। এই প্রসঙ্গ তুলতে বললেন, ‘‘রিওর প্রস্তুতি ভালই চলছে। সম্প্রতি রোহনের (বোপান্না) সঙ্গে খেলার পরই বুঝেছি আমরা জুটিতে সাফল্য আনতে পারি। আর হার্ড কোর্ট আমাদের দু’জনেরই প্রিয়। অলিম্পিকে সিঙ্গলসের পর ডাবলসে পদক জিততে পারলে সেটা দারুণ ব্যাপার হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE