Advertisement
E-Paper

ম-জি-দ, ম-জি-দ শব্দে কেঁপে উঠল মধ্যরাতের বিমানবন্দর

তেহরান থেকে দোহা হয়ে দমদম বিমানবন্দরে রবিবার মধ্যরাতে যখন পৌঁছন ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন ১২ নম্বর জার্সিধারী, তখন অন্য ছবি দেখলেন ষাট অতিক্রম করা মজিদ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৯ ১৪:৫৬
পুলিশি নিরাপত্তায় মজিদ। — নিজস্ব চিত্র।

পুলিশি নিরাপত্তায় মজিদ। — নিজস্ব চিত্র।

তিনি এলেন, দেখলেন এবং জয় করে নিলেন।

ফুটবল পায়ে ঠিক যে ভাবে কলকাতার মন জিতে নিয়েছিলেন এক সময়ে, রবিবার ভোররাতেও ঠিক সে ভাবেই শহরের মন জিতে নিলেন মজিদ বাসকর। আশির দশকের ‘বেতাজ বাদশা’কে একবার দেখার জন্য, তাঁকে একবার ছোঁয়ার জন্য মধ্যরাতেও বিমানবন্দরে ছিল জনপ্লাবন। প্রায় দু’যুগের বেশি সময় আগে এ রকমই এক মধ্যরাতে দমদম বিমানবন্দর থেকে ইরানে যাওয়ার বিমান ধরেছিলেন। সে দিনের বিমানবন্দর ছিল শুনশান। কাকপক্ষী টের পায়নি সে দিন। শহর ছেড়ে নীরবে-নিভৃতে চলে গিয়েছিলেন মজিদ।

তেহরান থেকে দোহা হয়ে দমদম বিমানবন্দরে শনিবার মধ্যরাতে যখন পৌঁছন ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন ১২ নম্বর জার্সিধারী, তখন অন্য ছবি দেখলেন ষাট অতিক্রম করা মজিদ। সাদা টি শার্ট, ঘিয়ে রংয়ের ট্রাউজার, আর মাথা ভর্তি সাদা চুলের মজিদকে দেখে লাল-হলুদ সমর্থকদের আবেগ আর বাঁধ মানেনি। ম-জি-দ, ম-জি-দ শব্দব্রহ্মে কেঁপে ওঠে মধ্যরাতের বিমানবন্দর।

আরও পড়ুন: ইস্টবেঙ্গলের শতবর্ষে যোগ দিতে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিলেন বাদশা

বিমানবন্দরের বাইরে অপেক্ষারত সমর্থকদের দেখে তাঁদের উদ্দেশে মজিদ মৃদু হাত নাড়েন। মুখে হাল্কা হাসি। তাতে বাঁধনহারা হন সমর্থকরা। রবিবার সকালে মজিদ বলছিলেন, ‘‘বিমানবন্দরে সাংঘাতিক ভিড় ছিল। আমার নাম ধরে সবাই ডাকছিল। এত ভিড় ছিল যে আমরা বিমানবন্দর থেকে বেরোতেই পারছিলাম না। পুলিশ আমাদের যথেষ্ট নিরাপত্তা দিয়েছে। ওই ভিড় ঠেলে আমাদের পক্ষে যাওয়া সম্ভব ছিল না। আমরা ফের বিমানবন্দরের ভিতরে ঢুকে পড়ি। তার পর অন্য একটা পথ দিয়ে আমাদের বিমানবন্দরের বাইরে আনা হয়। আজ সকালে হোটেলে এসে পৌঁছেছি।” ভোর পাঁচটা নাগাদ হোটেলে পৌঁছন মজিদ এবং তাঁর সঙ্গীরা।

একদিন তাঁর পা ময়দানে কত ফুলই না ফুটিয়েছে। খেলার শেষে তাঁর নামে জয়ধ্বনি উঠত। এত বছর পরে পুরনো শহরে ফিরে সেই পরিচিত শব্দ ফের শুনতে পেলেন। কেমন লাগছে কলকাতা? যেমনটা দেখে গিয়েছিলেন, এখনও কি ঠিক সে রকমটাই রয়েছে? মজিদ প্রথমে বললেন, “আগের মতোই তো রয়েছে দেখছি।’’ তার পরে নিজেকে সামলে নিয়ে বললেন, ‘‘দেখুন, আজ সকালে আমি হোটেলে ঢুকেছি। তার পর থেকে হোটেলবন্দি। বাইরে যাওয়া হয়নি। তাই কী ভাবে বলি আগের মতোই রয়েছে কি না শহর।’’

এক সময়ের বন্ধু জামশেদ নাসিরি আর তিনি এক সঙ্গে আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চলে এসেছিলেন ইস্টবেঙ্গলে খেলতে। কলকাতা ছেড়ে যাওয়ার পরে জামশিদের সঙ্গে দীর্ঘ দিন দেখা হয়নি মজিদের। দূরভাষে তাঁদের কথা হলেও মুখোমুখি সাক্ষাৎ হয়নি। প্রায় দু’যুগের বেশি সময় পরে আবার দুই বন্ধুর দেখা হবে। মজিদ হাসতে হাসতে বলছেন, “আমরা খুব অল্প সময়ের জন্য কলকাতায় এসেছি। অনেক অনুষ্ঠান রয়েছে। সবক’টি অনুষ্ঠানেই তো উপস্থিত থাকতে হবে। জামশিদ আসবে। ও আমার ছোটভাইয়ের মতো। একটা অনুষ্ঠানে নিয়ে যাওয়া হবে আমাকে। আমাদের দ্রুত তৈরি হতে হবে।’’

শহরে পা রেখেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন বাদশা।

Majid Bishkar Iranian Footballer East Bengal Centenary
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy