অবিশ্বাস্য: নোবল-পোগবা হাতাহাতি। বৃহস্পতিবার। ছবি: রয়টার্স
আরও একটা ম্যাচ খুব খারাপ খেলল ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড। বৃহস্পতিবার তারা ০-০ ড্র করে বসল ‘চিরশত্রু’ ওয়েস্ট হ্যামের সঙ্গে। অবশ্য ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে এ বার ম্যান ইউ দু’নম্বরেই থাকছে। আর ম্যাচ শেষের সাংবাদিক সম্মেলনে এসে জোসে মোরিনহো তাঁর ফুটবলারদের সমালোচনার রাস্তায় হাঁটলেন না।
নিষ্প্রভ ফুটবল খেললেও ম্যাচটা জিততেও পারত ‘রেড ডেভিলস’। একবার লিউক শ-র শট পোস্টে প্রতিহত হয়ে ফিরে এল। আর একবার ফাঁকা গোল পেয়েও পল পোগবা বাইরে হেড করলেন। এই ম্যাচটি নিয়ে শেষ পাঁচটি খেলার তিনটিই ড্র করল ম্যান ইউ। পাশাপাশি রবিবার সাউদাম্পটনকে হারাতে পারলে ম্যাঞ্চেস্টার সিটি দু’নম্বরে থাকা মোরিনহোর ক্লাবের চেয়ে ১৯ পয়েন্ট বেশি পেয়ে চ্যাম্পিয়ন হবে।
মোরিনহো বললেন, ‘‘লিগে আমরা দ্বিতীয় হলাম। এটা কম কৃতিত্বের নয়। অসাধারণ একটা প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে আমরা লিগ শেষ করলাম। সত্যিই দারুণ সব দল খেলল এ বার।’’ যদিও যোগ করলেন, ‘‘এমনটা বলতে পারছি না যে দলের খেলায় আমি পুরোপুরি সন্তুষ্ট। মিথ্যে কথা বলা আমার স্বভাব নয়। তবে যে দিন বুঝলাম চ্যাম্পিয়ন হওয়া অসম্ভব সে দিন থেকেই লক্ষ্য স্থির করেছিলাম, দু’নম্বরে থাকতেই হবে। আজ সেই লক্ষ্যই পূরণ হল।’’
পোগবাদের অবশ্য ইপিএলে আরও একটা খেলা বাকি আছে। রবিবার ওয়াটফোর্ডের বিরুদ্ধে। সঙ্গে রয়েছে ১৯ মে চেলসির বিরুদ্ধে এফএ কাপ ফাইনালও।
ওয়েস্ট হ্যামের মাঠে ম্যান ইউ ভক্তেরা এ দিনও অসুস্থ আলেক্স ফার্গুসনের জন্য সারাক্ষণ গান গাইলেন। গানে বলা হচ্ছিল, ‘‘আমরা সবাই আলেক্স ফার্গুসনকে ভালবাসি।’’ পাশাপাশি ম্যাচের মেজাজে কিন্তু কোনও ভালবাসার চিহ্নই ছিল না। একবার তো রীতিমতো উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হল পোগবা এবং ওয়েস্ট হ্যামের মার্ক নোবলের ঝামেলায়। সেখানে আবার লিউক শ যোগ দিতে কার্যত হাতাহাতির উপক্রম হল। এক মেঠো সংঘাতের পরিণতিতে কার্যত পোগবার গলা ধরে মুখে হাত ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন নোবল। পরে অবশ্য টুইট করে নোবল লেখেন, ‘‘পলের প্রতি আমার কোনও খারাপ অনুভূতি নেই। মাঠে যা হয়েছে তা যেন মাঠেই থাকে।’’ পোগবা নিজেও ম্যাচের পরে বিষয়টি কার্যত হেসে উড়িয়ে দেন। মোরিনহোও এই ঘটনা নিয়ে বিশেষ কিছু বলতে চাননি। তাঁর সংক্ষিপ্ত মন্তব্য, ‘‘ফুটবল ম্যাচে লড়াই থাকেই। ম্যাচের পরে তো দেখলাম ওরা পরস্পরকে আদর করল। সেটাই বা কম কী!’’
এ দিকে খেলা যখন গোলশূন্য ড্রয়ের দিকেই যাচ্ছে তখনও কেন মোরিনহো দলের অন্যতম সেরা ফুটবলার অ্যান্থনি মার্শিয়ালকে নামালেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠল। মোরিনহোর যুক্তি, ‘‘খেলা ৭০-৭৫ মিনিট হয়ে গেলে যখন আপনি জিতছেন না, তখন দেখতে হবে কোনওভাবে যেন ম্যাচটা না হারতে হয়। তাই ওকে নামানোর কথা বিবেচনা করিনি। আর এই পয়েন্টটা আমাদের প্রাপ্য। যখন চ্যাম্পিয়ন হতে পারছি না, তখন তো দু’নম্বরে শেষ করার জন্য ঝাঁপাতেই হবে।’’
প্রসঙ্গত আগের ম্যাচেই ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড হেরে যায় ব্রাইটনের কাছে। সেই ম্যাচের দলে মোরিনহো আটটি পরিবর্তন করলেন বৃহস্পতিবার। শুধু মার্শিয়াল না। তিনি বেঞ্চে বসিয়ে রাখেন মার্কাস র্যাশফোর্ডকেও। আপাতত রোমেলু লুকাকুর চোটও বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মোরিনহোর। এখন দেখার, এফএ কাপ ফাইনালে চেলসির বিরুদ্ধে তাঁকে খেলাতে পারেন কি না ম্যান ইউ ম্যানেজার।
এমনিতে ম্যাচের পরে দারুণ কিছু খুশির মেজাজে ছিলেন না পর্তুগিজ কোচ। এই ক্লাবে প্রথম মরসুমে তিনি ইপিএল শেষ করেন চার নম্বরে। এ বার সেখানে দ্বিতীয় স্থান। বললেন, ‘‘দুই ঘর এগিয়ে যাওয়ার জন্য লাফালাফি করার লোক আমি নই। তাই উৎসব করার কোনও ইচ্ছেই আমার নেই। তবে এত মাস ধরে কঠিন সময় এবং ওঠা-নামার মধ্য দিয়ে ইপিএল খেলতে হয়। তাই দ্বিতীয় স্থানে শেষ করতে পেরেও বেশ ভালই লাগছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy