Advertisement
E-Paper

বঙ্গ বোলারদের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিলেন মনোজ-সুদীপ

এক দিন আগেই ৯৯-এ অল আউট হওয়ার পর চারশো প্লাসের পাহাড়। এমন ভাবে উঠে দাঁড়ানো বঙ্গ ক্রিকেটে শেষ কবে ঘটেছে, মনে করতে পারছেন না অনেকেই। তাও কি না মুম্বইয়ের মতো দলের বিরুদ্ধে! যারা আবার গত বারের চ্যাম্পিয়নও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:২১

এক দিন আগেই ৯৯-এ অল আউট হওয়ার পর চারশো প্লাসের পাহাড়।

এমন ভাবে উঠে দাঁড়ানো বঙ্গ ক্রিকেটে শেষ কবে ঘটেছে, মনে করতে পারছেন না অনেকেই। তাও কি না মুম্বইয়ের মতো দলের বিরুদ্ধে! যারা আবার গত বারের চ্যাম্পিয়নও।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শার্দূল ঠাকুর-ধবল কুলকার্নিদের প্রবল চাপে রেখে মুম্বইয়ের সামনে তিনশোরও বেশি রানের দেওয়াল তুলে দিলেন মনোজ তিওয়ারি-সুদীপ চট্টোপাধ্যায়রা। মনোজের ১৬৯ ও সুদীপের ১৩০-এর জুগলবন্দি আর তাঁদের ২৭১ পার্টনারশিপ যে ভাবে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিল, তাতে মুম্বই যতটা না চাপে পড়ল, তার চেয়েও বোধহয় বেশি চাপে পড়লেন বাংলার বোলাররা!

অসাধ্য সাধনের অর্ধেকটা করেই দিয়েছেন মনোজরা। বাকি অর্ধেকের দায়িত্ব এ বার তাঁদের কাঁধে। ৩০৩-এর লিড হাতে। সঙ্গে দুটো উইকেট। বাংলা শুক্রবার সকালেই যদি ডিক্লেয়ার করে দেয়, তা হলে ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে সাড়ে তিনশো উইকেটের সামনে থাকা অশোক দিন্দা আর টেস্ট ক্রিকেট খেলা প্রজ্ঞান ওঝা কি মুম্বইকে অল আউট করতে পারবেন?

বাংলার ক্যাপ্টেন মনোজ তিওয়ারি নাগপুর থেকে ফোনে বলেন, ‘‘বোলাররা ঠিক জায়গায় বল রাখতে পারলে সম্ভব। বোলারদের সেটা বোঝানো হয়েছে। দিনের শেষে ওরা উইকেটের অবস্থাও দেখে নিয়েছে। বাকিটা ওদের উপর। আমি যথেষ্ট আশাবাদী। এই ম্যাচ জিতলে আমাদের নক আউটে যাওয়া কেউ আটকাতে পারবে না।’’

এ দিকে ইডেন ক্লাব হাউসে বসে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও আশায়। সন্ধ্যায় তিনি বলেন, ‘‘ভাল বল করতে হবে। উল্টোদিকের টিমটা মুম্বই বলেই মনে হচ্ছে ম্যাচ এখন ফিফটি-ফিফটি। তবে এই জায়গায় ম্যাচটা নিয়ে আসার কৃতিত্ব সুদীপ-মনোজদের। এটাই বা কম কী?’’

রঞ্জি ট্রফির নক আউটে ওঠা আর মুম্বইকে হারানোর কাজটা সোজা হবে, এমন ভাবাও ঠিক নয়। তা ভাবছেনও না বাংলার ক্যাপ্টেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘জানি, সোজা না। কিন্তু আমরা যদি নিজেদের প্ল্যান অনুযায়ী খেলতে পারি, তা হলে সম্ভব। যাকে বলে মুশকিল হ্যায়, নামুমকিন নেহি।’’

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে প্ল্যান অনুযায়ী খেলেই মুম্বই বোলারদের নাভিশ্বাস তুলে দিয়েছিলেন মনোজ ও সুদীপ। দু’দিন খেলা হয়ে যাওয়ার পর উইকেটের আতঙ্কটা এখন অনেকটাই কমে গিয়েছে বলে জানিয়ে দিলেন সুদীপ। এ দিন সন্ধ্যায় নাগপুরে টিম হোটেল থেকে ফোনে তিনি বলেন, ‘‘আমরা সকালে প্ল্যান করেছিলাম উইকেটে টিকে থাকব। ঝুঁকি নেব না। বা চালিয়ে খেলারও চেষ্টা করব না। অনেক সময় আছে হাতে। সেই সময়টাকে কাজে লাগাব। সেই প্ল্যান অনুযায়ীই ব্যাট করে গেলাম।’’ সুদীপের এই নিখুঁত অ্যাকশন প্ল্যান মেনে খেলায় মুগ্ধ মনোজ বললেন, ‘‘সুদীপ যে ভাবে সাপোর্ট দিয়েছে, তার কোনও তুলনাই হয় না, অসাধারণ। বড় পার্টনারশিপ তো এ ভাবেই হয়।’’ ক্রিজে সুদীপ যেমন থাকলেন প্রায় সওয়া আট ঘণ্টা, মনোজ ছিলেন প্রায় পৌনে আট ঘণ্টা। দু’জনের কাছেই তাঁদের এই সেঞ্চুরি স্পেশ্যাল।

অভিষেক নায়ারের বলে সুদীপ এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে যাওয়ার সময়ই বাংলার ১৯৭-এর লিড ছিল। আগের দিন মনোজ যে ২২০-২৩০-এর লিডের কথা বলেছিলেন, সেই লিডটা দলকে দিয়েই তিনি রান আউট হয়ে ফিরে যান। শেষ দিকে প্রজ্ঞান ওঝার ৩০ এই পরিস্থিতিতে কাজে এল। ব্যাটে না হয় অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগালেন প্রজ্ঞান। এ বার বোলিংয়েও তাঁর আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা বাংলার প্লাস পয়েন্ট হয়ে উঠলে ভাল।

যদিও ভারতীয় ক্রিকেট মহলে অনেকেই বলে থাকেন মুম্বই এখন আর সেই মুম্বই নেই। কিন্তু এ বারের রঞ্জিতে তাদের অপরাজিত দৌড় আর এই ম্যাচে প্রথম ইনিংসে বাংলার ব্যাটিংয়ে তাদের ধস নামানো দেখে কিন্তু তা মনে হওয়ার উপায় নেই। মুম্বই এখন বাংলার ছোড়া চ্যালেঞ্জ কী ভাবে সামলায় সেটাই দেখার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলা ৯৯ ও ৪৩৩-৮ (মনোজ ১৬৯ ও সুদীপ ১৩০, ধবল ৪-১০৮)

মুম্বই ২২৯

Manoj Tiwari Sudip Chatterjee Bengal Ranji Trophy Cricket
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy