মহম্মদ শামির বিধ্বংসী বোলিং। ঋদ্ধিমান সাহার অসাধারণ কিপিং। ক্যারিবিয়ান সফরে বাংলার দুই ক্রিকেটারই দুর্দান্ত।
ষোলো মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে বল হাতে আগুন ঝরিয়েছেন শামি। চার উইকেট তুলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাদেরই মাঠে ফলো অনে ঠেলে দিয়েছেন। ঋদ্ধি আবার এক ইনিংসে পাঁচ ক্যাচ এক স্টাম্পিংয়ে ছুঁয়ে ফেললেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি ও সৈয়দ কিরমানির রেকর্ড। যা নিয়ে দেশের ক্রিকেটমহল তো বটেই, সরগরম বঙ্গ ক্রিকেটও।
বাংলার অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি বলছেন, ‘‘বাংলার ক্রিকেটে এমন দিন বড় একটা আসে না। তবে এখন থেকে প্রায়ই আসবে।’’ রবিবার ইউরোপ সফর সেরে ফিরে মনোজ বললেন, ‘‘এত দিন পর জাতীয় দলে ফিরে শামি যা পারফরম্যান্স দেখাল, তাতে বিরাট নিশ্চয়ই ভাবছে ওর উপর ভরসা করে ভুল করেনি। আর ঋদ্ধির উপর যে ওর সম্পূর্ণ ভরসা আছে, সে তো বিরাট বরাবরই বলে। ভাল লাগছে যে, ওরাও সেই ভরসার মর্যাদাটা দিতে পারছে। ঋদ্ধি, শামির পারফরম্যান্স বাংলা ক্রিকেটকে আরও এগিয়ে দিল। দেশের ক্রিকেটের কাছে বাংলার গুরুত্ব আরও বেড়ে গেল।’’
বেঙ্গালুরুতে বাংলার যে দল গিয়েছে কর্নাটক ক্রিকেট সংস্থার টুর্নামেন্টে খেলতে, সেই দলও তেতে গিয়েছে শামি-ঋদ্ধির পারফরম্যান্সে। রবিবার সকালে ব্যাট করতে নামতে হয়েছিল বলে আর রাত জেগে ম্যাচ দেখতে পারেননি সুদীপ চট্টোপাধ্যায়। তবে সতীর্থদের পারফরম্যান্স থেকে প্রেরণা নিয়ে রবিবার সেঞ্চুরি (১৩২) হাঁকিয়ে আল্লুড়ের মাঠ ছাড়েন তিনি। সন্ধেয় বলছিলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দুই বন্ধুর পারফরম্যান্স এত ভাল হলে সেটা মোটিভেট করেই। আজ মাঠে নেমেই সেটা বুঝতে পারছিলাম।’’
সুদীপদের দলের প্রতিশ্রুতিমান অলরাউন্ডার ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায়ও উচ্ছ্বসিত। বললেন, ‘‘এগুলোই ভাল খেলার ইচ্ছা দশগুণ বাড়িয়ে দেয়। ওই জায়গায় পৌঁছনোর প্রেরণা দেয়।’’ মঙ্গলবার দলের সঙ্গে যোগ দেবেন মনোজ। ওখানে গিয়ে ঋদ্ধি-শামিদের কথা বলে দলকে উদ্বুদ্ধ করবেন। বললেন, ‘‘অবশ্যই ওদের কথা বলব। তবে আমার ধারণা, এখন থেকে প্রায়ই ওদের রেফারেন্স দিতে হবে। সামনে লম্বা টেস্ট মরসুম। আশা করি সব টেস্টেই এ রকম ভাল খেলবে। পুরো ঘরোয়া মরসুমে আমরা ওদের থেকে প্রেরণা পাব।’’
সদ্যপ্রাক্তন অধিনায়ক লক্ষ্মীরতন শুক্ল মন্ত্রীত্বের কাজ সামলেও শনিবার রাত জেগে শামি-ঋদ্ধির কীর্তি দেখেছেন। বললেন, ‘‘ওরা অন্যদের মতো সেলফি, সোশ্যাল মিডিয়ার ভক্ত নয়, ক্রিকেটের ভক্ত। তাই ওরা আরও ভাল খেলবে। শামি এত দিন পর, এত বড় অস্ত্রোপচারের পর মাঠে ফিরে যা বল করল, তা যেমন অসাধারণ, তেমনই ঋদ্ধির পারফরম্যান্স। আগের চেয়ে যেন দশ গুণ উন্নতি করেছে।’’