Advertisement
E-Paper

কোচের ধমকে কাজ হল! ঘুরে দাঁড়ালেন বোলারেরা, ঘুরে দাঁড়াল ভারতও, তৃতীয় ম্যাচে জিতে সিরিজ়ে এগিয়ে গেলেন সূর্যেরা

ভারতীয় বোলারেরা ছন্দে ফিরতেই বদলে গেল খেলার ছবি। ধর্মশালায় একটিও ওয়াইড, নো করেননি অর্শদীপ সিংহেরা। বোলিং জয়ের ভিত গড়ে দেয়। হাসতে হাসতে রান তাড়া করেন ব্যাটাররা।।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ২২:১৬
cricket

অর্শদীপ সিংহ (বাঁ দিকে) ও হর্ষিত রানা। নতুন বলে দক্ষিণ আফ্রিকার ভিত নড়িয়ে দিলেন ভারতের দুই পেসার। ছবি: পিটিআই।

নতুন বলে ভারতীয় পেসারেরা ছন্দে ফিরতেই জয়ে ফিরল ভারত। মুল্লানপুরে অর্শদীপ সিংহ, জসপ্রীত বুমরাহকে দেখে মনে হচ্ছিল, পাড়ার স্তরের বোলার। অর্শদীপ এক ওভারে সাতটি ওয়াইড দেওয়ায় রেগে গিয়েছিলেন কোচ গৌতম গম্ভীর। নিশ্চয়ই পরে ধমকও দিয়েছিলেন। তাতেই কাজ হল। ধর্মশালায় চেনা অর্শদীপকে চোখে পড়ল। বুমরাহ না খেললেও হর্ষিত রানা নতুন বলে উইকেট নিলেন। একটিও ওয়াইড, নো করেনি ভারত। বোলারদের দাপটে ১১৭ রানে আটকে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই রান তাড়া করতে বেশি সমস্যা হয়নি ভারতের। ২৫ বল বাকি থাকতে ৭ উইকেটে ম্যাচ জিতে সিরিজ়ে ২-১ এগিয়ে গেল ভারত।

ভারত জিতলেও কোচ গম্ভীরের জোড়া চিন্তা কিন্তু রয়েই গেল। শুভমন গিল ও সূর্যকুমার যাদবের ফর্ম ফিরল না। ধর্মশালাতেও শূন্য রানে আউট হতে পারতেন শুভমন। রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান। শেষ পর্যন্ত ২৮ বলে ২৮ রান করে আউট হন তিনি। তার মধ্যে পাঁচটি চার মারেন। অর্থাৎ, বাকি ৮ রান করতে ২৩ বল নিয়েছেন শুভমন। তাঁকে দেখে বোঝা গেল, ফর্মে নেই। অনেক বলের লাইন মিস্‌ করছেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ যত এগিয়ে আসছে তত শুভমন ও গম্ভীরের উপর চাপ বাড়ছে। তিনি রানে না ফিরলে কিন্তু প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে কোচকে। সূর্য দু’টি চার মারলেও ১১ বলে ১২ রান করে আউট হলেন। যে শটে তিনি আগে চোখ বন্ধ করে ছক্কা মারতেন, সেই শট এখন তাঁকে সমস্যায় ফেলছে। বার বার একই শট মারতে গিয়ে আউট হচ্ছেন।

cricket

ধর্মশালায় দলে দু’টি বদল করেছিল ভারত। বুমরাহের বদলে হর্ষিত ও অক্ষর পটেলের বদলে কুলদীপ যাদব দলে ঢোকেন। বুমরাহ ব্যক্তিগত কারণে মুম্বইয়ে নিজের বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। অক্ষর অসুস্থ। তাই জোড়া বদল করতে বাধ্য হয়েছে ভারত। সেই বদল কাজে লাগল। হর্ষিত শুরুটা করলেন। শেষ করলেন কুলদীপ।

পর পর দু’ম্যাচে টস জিতলেন সূর্যকুমার যাদব। এই দৃশ্য সচরাচর দেখা যায় না। আগের ম্যাচে টস জিতে প্রথমে বল করেও হেরেছিল ভারত। তার পরেও এই ম্যাচে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন সূর্য। এ বার সিদ্ধান্ত কাজে লাগে। ইনিংসের চতুর্থ বলেই রিজ় হেনড্রিক্সকে আউট করেন অর্শদীপ। আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউ নিয়ে সফল হয় ভারত। পরের ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকাকে বড় ধাক্কা দেন হর্ষিত। আগের ম্যাচে ৯০ রান করা কুইন্টন ডি’ককে আউট করেন তিনি। এডেন মার্করাম ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ছয় ব্যাটারের কেউ দুই অঙ্কে পৌঁছোতে পারেননি। ডেওয়াল্ড ব্রেভিসকে ফেরান হর্ষিত। ট্রিস্টান স্টাবসের উইকেট নেন হার্দিক পাণ্ড্য। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১০০ উইকেটের মালিক হলেন তিনি। কর্বিন বশকে আউট করেন শিবম দুবে। ৪৪ রানে ৫ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

অপর প্রান্তে পর পর উইকেট পড়লেও এক দিকে ছিলেন অধিনায়ক মার্করাম। কিন্তু সঙ্গী পাননি তিনি। ডোনোভান ফেরেইরার সঙ্গে ছোট জুটি গড়েন তিনি। ফেরেইরাকে ফেরান বরুণ চক্রবর্তী। মার্কো জানসেনকেও আউট করেন ভারতীয় স্পিনার। বাধ্য হয়ে শেষ দিকে রান তোলার দায়িত্ব নিজের কাঁধেই তুলে নেন মার্করাম। অর্ধশতরান করেন তিনি। তাঁর ব্যাটেই দলের রান ১০০ পার হয়। ৬১ রানের মাথায় মার্করামকে আউট করেন অর্শদীপ।

দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস শেষ করেন কুলদীপ। ২০তম ওভারে জোড়া উইকেট নেন তিনি। এই ম্যাচে ভারতের প্রত্যেক বোলার উইকেট নিয়েছেন। অর্শদীপ, হর্ষিত, বরুণ ও কুলদীপ ২ করে এবং হার্দিক ও শিবম ১ করে উইকেট নেন। ২০ ওভারে ১১৭ রানে অল আউট হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। আগের ম্যাচে ২২ রান অতিরিক্ত দিয়েছিল ভারত। তার মধ্যে ছিল ১৬ ওয়াইড। এই ম্যাচে অতিরিক্ত হিসাবে তিন রান দিয়েছেন অর্শদীপেরা। একটিও ওয়াইড, নো করেননি তাঁরা। এই নিয়ন্ত্রিত বোলিং জিতিয়েছে দলকে।

ম্যাচে ফিরতে হলে ভারতকেও শুরুতে ধাক্কা দিতে হত মার্করামদের। কিন্তু অভিষেক তা হতে দিলেন না। লুঙ্গি এনগিডির প্রথম বলেই ছক্কা মারলেন তিনি। অপর ওপেনার শুভমন চাপে থাকায় অভিষেক হাত খোলা শুরু করেন। তাঁর ব্যাটে প্রথম দু’ওভারে ৩২ রান তোলে ভারত। সেখানেই খেলার ফয়সালা হয়ে যায়।

শুভমন এই ম্যাচেও শূন্য রানে আউট হতে পারতেন। জানসেনের বল তাঁর প্যাডে লাগলে আম্পায়ার আউট দেন। রিভিউ নেন শুভমন। দেখা যায়, প্যাডে লাগার আগে বল ব্যাটে লেগেছে। বেঁচে যান তিনি। জীবন কাজে লাগান ভারতের সহ-অধিনায়ক। কয়েকটি বড় শট খেলেন তিনি। অভিষেক ব্যাট চালিয়ে যাচ্ছিলেন। পাওয়ার প্লে কাজে লাগাচ্ছিলেন। ওপেনিং জুটি ভাঙেন বশ। ১৮ বলে ৩৫ রান করে আউট হন অভিষেক। তিনটি চার ও তিনটি ছক্কা মারেন। তাতে অবশ্য ভারতের রান তাড়ায় সমস্যা হয়নি। পাওয়ার প্লে-তে ১ উইকেট হারিয়ে ৬৮ রান করে তারা।

অভিষেক আউট হওয়ার পর শুভমনের সঙ্গে জুটি বাঁধেন তিলক বর্মা। কিন্তু রান তোলার গতি কমে যায় ভারতের। তাতে অবশ্য জিততে সমস্যা হয়নি। কারণ, তত ক্ষণে জরুরি রান রেট ওভার প্রতি ৪ রানে নেমে যাওয়ায় চাপ ছিল না তাঁদের উপর। কিন্তু তার পরেও সমস্যা হয় শুভমনের। ছন্দ পাচ্ছিলেন না তিনি। পাঁচটি চার মারেন। কিন্তু স্কোরবোর্ড চালু রাখতে পারলেন না। ২৮ বলে ২৮ রান করে জানসেনের বলে বোল্ড হলেন।

সূর্য চাইলে শেষ পর্যন্ত খেলতে পারতেন। কিন্তু আবার একটি খারাপ শট মেরে আউট হলেন তিনি। আবার শুরুতেই হাওয়ায় শট খেলার চেষ্টা করলেন। উইকেট দিয়ে আসতে হল। হতাশ হবেন সূর্য। খেলা শেষ করতে পারলে আত্মবিশ্বাস বাড়ত। শেষ পর্যন্ত ১৫.৫ ওভারে শেষ হয় খেলা। তিলক ২৫ ও শিবম দুবে ১০ রানে অপরাজিত থাকেন।

India vs South Africa 2025 Suryakumar Yadav
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy