লড়াকু: ১০ রানের জন্য সেঞ্চুরি হল না মনোজের। ফাইল চিত্র
রঞ্জি ট্রফির ছ’নম্বর ম্যাচ খেলছে বাংলা। অথচ দলের বেশির ভাগ ব্যাটসম্যানেরই রানের খরা এখনও কাটেনি। বাংলার টিম ম্যানেজমেন্ট বারবার যে কথা বলে আসছে, সেই দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শে তাঁরা কর্ণপাত করছেন বলেও মনে হচ্ছে না। না হলে অন্ধ্রপ্রদেশের বিরুদ্ধে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৩১ রানের মধ্যেই তিন উইকেট হারায় তারা?
শনিবার বিশাখাপত্তনমে ফের এমনই বিপর্যয় নেমে আসে বঙ্গ ব্যাটিংয়ে। এই জায়গা থেকে দলকে বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচালেন সেই মনোজ তিওয়ারি। যিনি আগেও দলের দুঃসময়ে হাল ধরেছেন। উইকেট কামড়ে পড়ে থেকে ১৬৪ বলে ৯০ রানের লড়াকু ইনিংস খেললেন অধিনায়ক। দিনের শেষে ছয় উইকেট হারিয়ে বাংলার রান ১৯৪। শুরুতেই তিন উইকেট হারানোর পরে তরুণ উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান অগ্নিভ পানের সঙ্গে ১১৩ রানের জুটি গড়েন মনোজ। ক্রিজে ১০৬ বল টিকে ছিলেন তরুণ বাঁ হাতি অগ্মিভ। মনোজের সঙ্গে ৩৯ রানের যে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন তিনি, তাতেই খাদের কিনারা থেকে ফিরে আসে বাংলা।
মনোজ বলছেন, স্কোরবোর্ড যে রকম দেখাচ্ছে, উইকেট কিন্তু একেবারেই সে রকম নয়। বিশাখাপত্তনম থেকে ফোনে শনিবার তিনি বলেন, ‘‘ব্যাটসম্যানরা কিছু বাজে শট খেলে আউট হয়েছে। এই উইকেটে ব্যাটসম্যানদের সে রকম অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। সকালের দিকে বল হাল্কা সুইং করেছে। যেটা এই পর্যায়ে প্রত্যেক ম্যাচেই হয়। ওরা একেবারেই মারার জায়গা দেয়নি।’’
শুক্রবার বিশাখাপত্তনমে প্রথম এক ঘণ্টার মধ্যেই প্যাভিলিয়নে ফিরে যান বাংলার দুই ওপেনার। পৃথ্বী রাজের সুইং বুঝতে না পেরে উইকেট ছুড়ে দেন অভিমন্যু ঈশ্বরন (২)। কে ভি শশীকান্তের ইনসুইংয়ে বোল্ড হয়ে ফিরে যান অভিষেক রামন (৬)। ব্যর্থ সুদীপ চট্টোপাধ্যায়ও। ৪৩ বল খেলে মাত্র ৮ রান করে ফিরে যান দলের সহ-অধিনায়ক।
অধিনায়ক জানিয়েছেন, অগ্নিভের সঙ্গে জুটি না গড়লে আরও সমস্যায় পড়ত তাঁর দল। ‘‘অগ্নিভ তরুণ ক্রিকেটার। ওর মধ্যে লড়াই করার ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু সেট হয়ে যাওয়ার পরে আরও কিছুক্ষণ ক্রিজে থাকা উচিত ছিল’’, মত মনোজের। কিন্তু বোলারদের লড়াই করার জন্য প্রথম ইনিংসে কত রান প্রয়োজন? মনোজের উত্তর, ‘‘অন্তত ২৫০ রান করতেই হবে। বাকি যা হবে পুরোটাই বাড়তি। যত সময় যাবে, উইকেট পাটা হতে থাকবে। সেটাই এখন উদ্বেগের মূল বিষয়।’’
গত ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও অলরাউন্ডার হিসেবে খেলানো হয়েছে শাহবাজ আহমেদকে। কিন্তু ১১ রানের বেশি তিনি করতে পারেননি। ক্রিজে রয়েছেন ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায় (২৭) ও প্রদীপ্ত প্রামাণিক (২)। এখন তাঁদের হাতেই নির্ধারণ করছে প্রথম ইনিংসের ভাগ্য। মনোজ মনে করেন, সপ্তম উইকেটের জুটিই এখন তাঁর এক মাত্র ভরসা। বলেন, ‘‘ঋত্বিক ভাল লড়াই করছে। প্রদীপ্তও আত্মবিশ্বাসী। তামিলনাড়ুর বিরুদ্ধে ও-ই আমাদের ব্যাট হাতে জিতিয়েছে। দ্বিতীয় দিনের প্রথম এক ঘণ্টা এই জুটিকে টিকে থাকতেই হবে’’।
কিন্তু এই ম্যাচে হঠাৎ আমির গনিকে বসানো হল কেন? অধিনায়কের উত্তর, ‘‘ওদের দলে ডান হাতি ব্যাটসম্যান বেশি। তাই অতিরিক্ত বাঁ হাতি বোলার খেলানো হচ্ছে। এখন কিন্তু বোলারদেরই ম্যাচটা বাঁচাতে হবে। এই উইকেটে ওরা যে রকম ভাবে বল করেছে, আমাদের বোলারদের থেকেও সেটাই আশা করছি।’’
সংক্ষিপ্ত স্কোর: অন্ধ্রপ্রদেশ বনাম বাংলা, প্রথম দিন। বাংলা ১৯৪-৬ (মনোজ ৯০, অগ্নিভ ৩৯, কে ভি শশীকান্ত ২-৩৭, পৃথ্বী রাজ ২-৪১)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy