Advertisement
E-Paper

বাংলাকে লড়াইয়ে ফেরাচ্ছেন মনোজ-সুদীপ

মনোজ তিওয়ারি-সুদীপ চট্টোপাধ্যায় জুটিই এখন বাংলার লাইফলাইন। তাঁদের ব্যাট চললে বৃহস্পতিবার হয়তো নাগপুরে বাংলা শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৪:২৪
‘পাঁচ-পাঁচটা উইকেট নিয়েছি!’ দিনের শেষে এ ভাবেই নিজের ছবি টুইট করলেন অশোক দিন্দা।

‘পাঁচ-পাঁচটা উইকেট নিয়েছি!’ দিনের শেষে এ ভাবেই নিজের ছবি টুইট করলেন অশোক দিন্দা।

মনোজ তিওয়ারি-সুদীপ চট্টোপাধ্যায় জুটিই এখন বাংলার লাইফলাইন।

তাঁদের ব্যাট চললে বৃহস্পতিবার হয়তো নাগপুরে বাংলা শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারবে।

আর না পারলে? আইসিইউ-তে ছটফটানি। ভরসা ভেন্টিলেটর।

‘যবতক বল্লা চলতা হ্যায়, তবতক ঠাট হ্যায়, অগর বল্লা রুক গয়া তো...’ যুবরাজ সিংহর এই কথাগুলো এখন মনোজরা টের পাচ্ছেন হয়তো।

চব্বিশ ঘণ্টা আগের মহাধসের আতঙ্ক সামলে যাঁরা দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪২-এর পার্টনারশিপ গড়ে রঞ্জি ট্রফিতে বাংলার ক্ষীণ আশা জিইয়ে রেখেছেন।

প্রথম ইনিংসে ১৩০ রানে পিছিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয় দিনের শেষে মনোজদের এই পাল্টা আক্রমণে বাংলা ১৯৮-৩। বিপক্ষের চেয়ে ৬৮ রানে এগিয়ে। হাতে সাত উইকেট।

সাত সকালেই জ্বলে উঠলেন অশোক দিন্দা। যা আগেই চেয়েছিল বাংলা। তবে ঝড় নয়, দিন্দার এই স্পেলকে ঝোড়ো হাওয়া বলা যেতে পারে। মুম্বইকে ১৬ ওভার খেলতে দিয়ে ও আরও ৬৫ রান তুলতে দিয়ে দিন্দা পাঁচটার মধ্যে চারটেই পেলেন। আগের দিন শ্রেয়াস আয়ারের উইকেটের পর তাঁর বাকি চার শিকার মুম্বইয়ের টেল এন্ডাররা। জ্বলে ওঠার সময়টা একটু এগিয়ে এলে মুম্বইকে বোধহয় এতদূর (২২৯) পৌঁছতে হত না।

দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেও ধাক্কা খেয়েছিল বাংলা। ১৭ রানে দু’উইকেট চলে যায় তাদের। ৫৬-য় তিন। অশনি সঙ্কেত দেখার মুখে হাল ধরেন মনোজ ও সুদীপ। প্রথম জন বোলারদের শাসনের দায়িত্ব নিলেন এগারোটা চার ও একটা ছয় মেরে। ৬৯-এর স্ট্রাইক রেটে ৮৫ তুলে। পরের জন তাঁকে সাপোর্ট দিয়ে গেলেন সমানে। ১৭৭ বলে ৬৭ রান করে। দু’জনেরই উইকেটে টিকে থাকার লড়াই। বৃহস্পতিবার প্রথম সেশনে এই লড়াইটা টিকে থাকলে বাংলা ঘুরে দাঁড়িয়ে পড়বে বলেই বিশ্বাস ক্যাপ্টেন মনোজের।

সন্ধ্যায় নাগপুর থেকে ফোনে বলছিলেন, ‘‘কাল সকালটা খুব-খুব গুরুত্বপূর্ণ আমাদের কাছে। প্রথম সেশনটা টিকে যেতে পারলে আমরা ম্যাচে ফিরে আসব। তার পর বোলারদের দায়িত্ব।’’

এই ম্যাচের প্রথম দু’দিনের সকাল কিন্তু অন্য কথা বলছে। প্রথম সকালে পড়েছিল তিন উইকেট। দ্বিতীয় সকালে পাঁচ। বুধবার সকালে আগের দিনের অপরাজিত জুটি ভাঙেন মুকেশ কুমার। এর পর লোয়ার অর্ডারের দায়িত্ব নিয়ে নেন দিন্দা। এই মরসুমে ৩৪ উইকেট হল তাঁর। ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে ২২তম পাঁচ উইকেট। সাড়ে তিনশোর মাইলস্টোন থেকে মাত্র চার
উইকেট দূরে।

আগের দু’দিনের মতো তৃতীয় দিন সকালটাও যদি পেসারদের হয়, তা হলে বাংলার কপালে অশেষ দুঃখ। সেটা পরিষ্কার। কিন্তু সেটা এড়াতে মরিয়া বাংলা। মনোজ বলছেন, ‘‘সেটা হতে দেওয়া যাবে না। আমি ক্যাপ্টেন হিসেবে সবসময়ই পজিটিভ থাকতে চাই। আমি তো ২২০-২৩০-এর লিডের কথা ভাবছি। এই উইকেটে চতুর্থ ইনিংসে এই রান তাড়া করে জেতা মুশকিল হবে।’’

নাগপুরের এই উইকেটে প্রথম দু’দিনই দু’দলের ব্যাটসম্যানরা সব মিলিয়ে সারা দিনে তুললেন ২৬৩ করে। প্রথম দিন পড়েছিল ১৫ উইকেট। দ্বিতীয় দিন আট উইকেট।

ব্যাট করার পক্ষে উইকেটটা ক্রমশ সড়গড় হয়ে উঠছে বলে দাবি মনোজের। বললেন, ‘‘কিছুটা তো সহজ হয়েছেই উইকেটটা। তবে ওরা যে কোনও উইকেটে ভাল বল করতে জানে। প্রথম দিনও অসাধারণ বোলিং করেছে ওরা। আজও করেছে। এই বোলিং সামলে বড় রান করাটা কঠিন। আমরা তো কাল চেষ্টা করবই লিডটা যতটা পারি বাড়ানোর। কিন্তু জেতা-হারা নির্ভর করছে আমাদের বোলারদের উপরই।’’

বাংলাকে ভেন্টিলেটর থেকে দূরে রাখা অবশ্য এখন নির্ভর করছে ক্যাপ্টেনের ‘বল্লা’-র উপরই। যতক্ষণ চলবে, বাংলা বাঁচবে। না চললে..।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলা ৯৯ ও ১৯৮-৩ (মনোজ ৮৫ ন.আ, সুদীপ ৬৭ ন.আ, ধবল ২-৪৩)। মুম্বই ২২৯ (কৌস্তুভ ৭৮, দিন্দা ৫-৮৮)।

Ashoke Dinda Bengal Ranji Trophy Manoj Tiwary
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy