Advertisement
E-Paper

সুনীল দলে ফেরায় অনেক চাপমুক্ত, মেনে নিচ্ছেন মনবীর

বিশ্বকাপ ও এএফসি এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে ‘ই’ গ্রুপে পাঁচ ম্যাচে তিন পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছে ভারত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২১ ০৪:৩২
মহড়া: কাতারে স্তিমাচের তত্ত্বাবধানে প্রস্তুতি শুরু সুনীলদের। এআইএফএফ

মহড়া: কাতারে স্তিমাচের তত্ত্বাবধানে প্রস্তুতি শুরু সুনীলদের। এআইএফএফ

আগামী বছর কাতার বিশ্বকাপে খেলার সম্ভাবনা শেষ হয়ে গেলেও ২০২৩ সালে চিনে এশিয়ান কাপের মূলপর্বে যোগ্যতা অর্জনের আশা এখনও বেঁচে রয়েছে ভারতীয় দলের। দীর্ঘ টানাপড়েনের পরে বুধবার রাতে কাতারের রাজধানী দোহায় পৌঁছন সুনীল ছেত্রীরা। এক দিনের নিভৃতবাস পর্ব কাটিয়ে শুক্রবার থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন কোচ
ইগর স্তিমাচ।

বিশ্বকাপ ও এএফসি এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে ‘ই’ গ্রুপে পাঁচ ম্যাচে তিন পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছে ভারত। একটিও ম্যাচ জেতেননি সুনীলরা। হেরেছেন দু’টিতে। ড্র করেছেন তিনটি ম্যাচে। এখনও বাকি রয়েছে তিনটি ম্যাচ। ভারতের প্রথম খেলা কাতারের বিরুদ্ধে ৩ জুন। দ্বিতীয় ম্যাচ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ৭ জুন। শেষ ম্যাচে ১৫ জুন ভারতের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। এই তিনটি ম্যাচের ফলের উপরে নির্ভর করছে এএফসি কাপের ভাগ্য। ভারত কি পারবে লক্ষ্যে পৌঁছতে?

লড়াই কঠিন হলেও ওমানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ফ্রেন্ডলিতে অনবদ্য গোল করে ভারতের ত্রাতা হয়ে ওঠা মনবীর সিংহ কিন্তু আত্মবিশ্বাসী। দোহা থেকে আনন্দবাজারের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি বললেন, “২০২৩ সালে চিনে এএফসি এশিয়ান কাপের মূলপর্বে যোগ্যতা অর্জন করতে না পারার কোনও কারণ নেই। আমরা যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী। তবে এই মুহূর্তে ধাপে ধাপে এগোতে চাই। আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য বাকি তিন ম্যাচ থেকে যত বেশি সম্ভব পয়েন্ট অর্জন করা। যাতে প্লে-অফ খেলতে না হয়।”

করোনায় আক্রান্ত হয়ে ওমান এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিরুদ্ধে ম্যাচের ঠিক আগে জাতীয় দল থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন সুনীল। অধিনায়কের প্রত্যাবর্তনে উচ্ছ্বসিত মনবীর। বললেন, “সুনীল পাজি জাতীয় দলে ফিরে আসায় দারুণ আনন্দ হচ্ছে। আমার চাপও অনেক কমে গিয়েছে। দুবাইয়ে যখন ওমান এবং আমিরশাহির বিরুদ্ধে খেলেছিলাম, তখন সুনীল পাজি ছিল না। ফলে আমার উপরে অনেক বেশি দায়িত্ব এসে পড়েছিল। সুনীল পাজি আমার মতো তরুণদের কাছে শুধু নয়, অগ্রজদের কাছেও অনুপ্রেরণা।” এখানেই শেষ নয়। আরও বললেন, “বিপক্ষের গোলের সামনে আশ্চর্যজনক ভাবে মাথা ঠান্ডা রাখতে পারে। এই ক্ষমতা খুব কম স্ট্রাইকারেরই রয়েছে। ফুটবল এবং দলের প্রতি দায়বদ্ধতার কোনও তুলনাই হয় না। প্রতি মুহূর্তে ওর কাছ থেকে শেখার চেষ্টা করি।”

গত ২৯ মার্চ সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ফ্রেন্ডলির পরে আর ম্যাচ খেলেননি মনবীর। করোনার দ্বিতীয় প্রবাহের ধাক্কায় ভেস্তে যায় ভারতীয় দলের প্রস্তুতি শিবির ও এএফসি কাপের খেলা। কিন্তু এক দিনের জন্যও অনুশীলন বন্ধ করেননি প্রতিশ্রুতিমান স্ট্রাইকার। ফিরে যান নিজের গ্রাম পঞ্জাবের জ়ালন্ধর জেলায় আদমপুরের কাছে ‘ডাউলিকে দূরে’-তে। মনবীর বলছিলেন, “জাতীয় দলের এবং আমার ক্লাব এটিকে-মোহনবাগানের ফিজিক্যাল ট্রেনার প্রত্যেকের জন্য আলাদা অনুশীলন সূচি তৈরি করে দিয়েছিলেন। সেই অনুযায়ী গ্রামের বাড়িতেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিলাম। তা ছাড়া, করোনার দ্বিতীয় প্রবাহ তখনও এতটা ভয়ঙ্কর রূপ নেয়নি। তাই গ্রামের মাঠে স্থানীয় ফুটবলারদের সঙ্গেও নিয়মিত অনুশীলন করতাম।”যোগ করলেন, “ওমান এবং সংযুক্ত আমিরশাহির বিরুদ্ধে ম্যাচ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। আমাকে অনেক বেশি শক্তিশালী করে তুলেছে। ওমানের বিরুদ্ধে গোল আত্মবিশ্বাসও
বাড়িয়ে দিয়েছে।”

মনবীরের বাবা কুলদীপ সিংহও স্ট্রাইকার ছিলেন। নব্বইয়ের দশকে তাঁকে নেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ঝাঁপিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু পঞ্জাব রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদের চাকরি ছাড়ার ঝুঁকি নিতে পারেননি তিনি। ২০১৪ সালে ট্রান্সফর্মার মেরামত করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন কুলদীপ। প্রাণে বাঁচলেও শরীরের নিম্নাংশ সম্পূর্ণ অসাড় হয়ে গিয়েছে। তার পর থেকেই কার্যত শয্যাশায়ী কুলদীপ। প্রবল অসুস্থতা সত্ত্বেও ছেলেকে নিয়মিত পরামর্শ দেন, অনুপ্রাণিত করেন। মনবীর বলছিলেন, “বাবার জন্যই আমি এই জায়গায় পৌঁছেতে পেরেছি। উনি শিখিয়েছেন লড়াই করতে। প্রতিবন্ধকতা যতই আসুক, এগিয়ে যেতে হবে। থামলে চলবে না। বাবাকে গর্বিত করাই আমার জীবনের
প্রধান লক্ষ্য।”

আরও পড়ুন:

AIFF Indian Football Team
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy