ছবি: রয়টার্স।
একরাশ ক্ষোভ নিয়ে মেসুত ওজ়িল রবিবার ঘোষণা করলেন জার্মানির হয়ে আর মাঠে নামবেন না। রবিবার রাতে এই চরম সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলেন তিনি। এক দীর্ঘ বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন, জার্মান ফুটবল সংস্থা তাঁর সঙ্গে যে ব্যবহার করেছে, তার পরে সে দেশের জার্সি গায়ে মাঠে নামা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। এ ছাড়াও তিনি অভিযোগ করেন, বিশ্বকাপে জার্মানির অপ্রত্যাশিত হারের জন্যও তাঁকেই দায়ী করা হয়েছে। বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘‘দল জিতলে আমি জার্মান আর দল হারলে আমি অনুপ্রবেশকারী। বারবার আমাকে এই কথা শুনতে হয়েছে।’’
তুরস্কের সঙ্গে জার্মানির কূটনৈতিক সম্পর্ক ভাল না হওয়ায় সমস্যায় পড়তে হয়েছিল ওজ়িল ও ইলখাই গুন্ডোয়ানকে। রাশিয়া বিশ্বকাপ শুরুর আগে গত মে মাসে লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে এসেছিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এর্দোগান। সেখানে উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ পান ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলছেন এমন দুই তুরস্কজাত জার্মান ফুটবলার মেসুত ওজ়িল ও ইলখাই গুন্ডোয়ান। দু’জনে তুরস্কের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ছবিও তোলেন। যে ঘটনার জেরে বিপরীত প্রতিক্রিয়া হয় পুরো জার্মানিতে।
ওজ়িলদের সমর্থন করেননি অনেক জার্মানই। ওজ়িলরা জার্মানির হয়ে খেলতে নেমে এই ঘটনার জন্য প্রচণ্ড কটূক্তিও শুনতে হয় তাঁদের। গুন্ডোয়ান বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলেও ওজ়িল এত দিন মুখ খোলেননি। রবিবারই প্রথম আর্সেনালের এই মিডফিল্ডার দীর্ঘ বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেন আর জার্মানির হয়ে খেলবেন না।
তার আগে ওজ়িল তাঁর টুইটারে লেখেন, ‘‘তুরস্কের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আমার ছবি তোলার সঙ্গে রাজনীতি বা নির্বাচন প্রক্রিয়ার কোনও সম্পর্ক নেই।’’ তা হলে কেন এই কাজ করেছিলেন তারও ব্যাখ্যা করেছেন ওজ়িল। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমার দু’টি হৃদয়। একটি জার্মান। অন্যটি তুরস্কের। মনে রাখবেন ওই অনুষ্ঠানে যাওয়ার অর্থ ছিল আমার পরিবারের আদি বাসভূমিকে সম্মান জানানো।’’ সঙ্গে তুরস্কের প্রতি নিজের দুর্বলতার কথাও গোপন করেননি ওজ়িল, ‘‘ছোটবেলায় আমার মা আমাকে শিখিয়েছিলেন কখনও ভুলে যেও না তোমার উৎস কোথায়। আমার কাছে সেই শিক্ষার মূল্য আজও একই রকম গুরুত্বপূর্ণ।’’
এ দিন বিবৃতিতে জানান, ‘‘দলের পোলান্ডজাত খেলোয়াড়দের তো কখনও জার্মান-পোলিশ বলা হয় না। আমাদের কেন জার্মান-তূর্কি বলা হয়! কারণ, আমরা অন্য ধর্মের বলে?’’ ওজ়িল আরও জানিয়েছেন, তুরস্ক প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করার সেই দিনটায় তাঁদের মধ্যে শুধুই ফুটবল নিয়ে কথা হয়েছিল। কিন্তু জার্মানরা এখনও তাঁর প্রতি সদয় নয়। এই মানসিকতা তৈরি হওয়ার কারণ তুরস্কে তাঁদের সেই ছবি নিয়ে নির্বাচনী প্রচারের কাজে লাগানো হয়েছিল। তাই তাঁদের বেশি সমালোচনা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy