Advertisement
E-Paper

বিশ্বকাপ জিতলেও মাইকেল ক্লার্ককে ওয়ান ডে থেকে বাদ দেবে অস্ট্রেলিয়া

সিডনি ক্রিকেট মাঠের মেম্বার্স গ্যালারির কোনায় একটা বসার জায়গা আছে। তার ঠিক পিছনেই স্টিভ ওয়র মূর্তি। শনিবার সেই বসার জায়গাটা দেখিয়ে নিউ সাউথ ওয়েলস ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের এক কর্তা বললেন, “মূর্তিটা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, এই বসার জায়গাটা ততটাই।” কেন? না, দু’হাজার তিনের বিশ্বকাপ অধিনায়কত্ব থেকে খারিজ হয়ে এখানেই হতভম্বের মতো একা বসেছিলেন স্টিভ।

গৌতম ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৫ ০৩:১২

সিডনি ক্রিকেট মাঠের মেম্বার্স গ্যালারির কোনায় একটা বসার জায়গা আছে। তার ঠিক পিছনেই স্টিভ ওয়র মূর্তি।

শনিবার সেই বসার জায়গাটা দেখিয়ে নিউ সাউথ ওয়েলস ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের এক কর্তা বললেন, “মূর্তিটা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, এই বসার জায়গাটা ততটাই।” কেন? না, দু’হাজার তিনের বিশ্বকাপ অধিনায়কত্ব থেকে খারিজ হয়ে এখানেই হতভম্বের মতো একা বসেছিলেন স্টিভ। ভাবতেই পারেননি আগের বিশ্বকাপের জয়ী নেতা তিনি। তাঁকে একটা ত্রিদেশীয় সিরিজ জিততে না পারার জন্য এমন নির্মম ভাবে ছেঁটে ফেলা হতে পারে!

কিন্তু অস্ট্রেলীয় নির্বাচকেরা বহু যুগ ধরে এমনই। তাঁদের বিচারের একমাত্র মাপকাঠি হল রুক্ষ ব্যবহারিক পরিস্থিতি। কোনও সেন্টিমেন্ট তার সঙ্গে জড়িত নেই। অস্ট্রেলীয় নির্বাচকদের সম্পর্কে একটা জনপ্রিয় অভিব্যক্তি আছে— ট্যাপ অন দ্য শোল্ডার। মানে কাঁধে আস্তে টোকা।

ওই টোকাটা যাকে দেওয়া হচ্ছে বুঝতে হবে তার কেরিয়ার শেষ হয়ে গেল। ওই টোকাটা প্রতীকী যে, এ বার তুমি আসতে পারো। তোমার সার্ভিসের জন্য ধন্যবাদ।

অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটমহলের ধারণা, বর্তমান অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্কের জন্য ওই টোকাটা অপেক্ষা করে নেই। এ জন্য নেই যে তিনি অপরিহার্য, মনে করলে ভুল করা হবে। টোকাটা নেই কারণ সেই ভদ্রতাটাও নাকি তাঁর বেলা অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট বোর্ড করবে না। ক্লার্ককে এমনিতেই ছেঁটে ফেলা হবে ওয়ান ডে অধিনায়কত্ব থেকে।

আর সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর হল, বিশ্বকাপ জিতলেও।

শনিবার বিকেলে এসসিজি মাঠে মার্টিন গাপ্টিলের ডাবল সেঞ্চুরির চেয়ে বেশি আলোচনার বিষয় এটাই ছিল— ক্লার্কের জীবনের শেষ দু’টো ওয়ান ডে ম্যাচ। দ্রুতই একজন অবশ্য শুধরে দিলেন—“দু’টো কোথায়? ইন্ডিয়া ম্যাচ হেরে গেলে তো বিষ্যুদবারই ক্লার্কের শেষ ওয়ান ডে।”

অস্ট্রেলিয়ান নির্বাচক, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া এমনকী কোচ ডারেন লেম্যানের সঙ্গেও সম্পর্ক ভাল যাচ্ছে না ক্লার্কের। এঁরা সব ব্যাপারে ক্লার্কের বশ্যতা স্বীকার করে নিতে মোটেও রাজি নন। অস্ট্রেলিয়ান বোর্ডে কোনও শ্রীনিবাসনও নেই যে ক্যাপ্টেনকে সবার ওপরে এমন লাইসেন্স দিয়ে রেখেছেন। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া ও সবের ধার দিয়েই যায় না। তারা নিছক রান দেখে না। ফিটনেস দেখে।

রডনি মার্শের নেতৃত্বে নির্বাচকেরা মনে করছেন, ওয়ান ডে চালিয়ে যাওয়ার মতো ফিটনেস আর ক্লার্কের নেই। তিনি টেস্ট ক্রিকেটে নেতা থাকতে পারেন। কিন্তু ওয়ান ডে টিমে তাঁর আর জায়গা নেই। তা ছাড়া পরের বিশ্বকাপের প্ল্যানিং এখন থেকেই শুরু করতে চান নির্বাচকেরা।

শুনে খুব আশ্চর্য লাগল। কারণ দিন তিন-চার আগেই ক্লার্ক সবিস্তারে বলেছেন আরও কয়েক বছর ওয়ান ডে খেলতে চান। খুব উপভোগ করছেন, সেটাও বলেছেন। এর পর কী ভাবে এত দিনের অধিনায়ককে দরজা দেখাবে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া?

স্থানীয় ক্রিকেটমহলের মতে ক্লার্ক ওটা বলে নির্বাচকদের ওপর চাপ তৈরি করতে চাইছেন কিন্তু তিনি নিজেই জানেন কোনও কাজ হবে না। তাই মানসিক প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিগ ব্যাশ খেলার। একটা টিমের ম্যানেজারকে তিনি নিজেই নাকি দিন কয়েক আগে ফোন করে খেলার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন।

সেটিংটা অবিশ্বাস্য। টিম এত ভাল খেলে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে। অধিনায়ক হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট সারিয়ে এমন চমকপ্রদ কামব্যাক করেছেন। ক্রিকেটবিশ্বের গরিষ্ঠ শতাংশ লোক তাদেরই ফেভারিট ধরে নিয়েছে। ক্লার্ক ওয়ান ডে ক্রিকেটের হিসেবেও টেস্টের মতোই অনবদ্য। ২৪৩ ওয়ান ডে ম্যাচে প্রায় আট হাজার রান করে ফেলেছেন ৪৪ অ্যাভারেজ রেখে। সঙ্গে ৫৭ উইকেট।

কিন্তু নির্বাচকেরা তাৎক্ষণিক ফর্ম দেখছেন। ইতিহাসে বরাবরের মতোই তাঁদের কোনও আগ্রহ নেই। এই সময়ের সবচেয়ে অবিশ্বাস্য ছবিটা তৈরি হবে যদি বিশ্বকাপ হাতে তোলার পরেও ক্লার্ককে ছেঁটে ফেলা হয়!

michael clarke world cup 2015 sydney gautam bhattacharya Australia Cricket
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy