প্রথমার্ধের খেলা দেখে বোঝা যায়নি ইউনাইটেড স্পোর্টস পরের অর্ধে এইভাবে আত্মসমর্পণ করবে মহমেডানের কাছে। মহমেডানকেও প্রথমার্ধে দেখে অবশ্য মনে হয়নি যে তাঁরা ম্যাচ জিততে পারে।
প্রথমার্ধে পুরো ম্যাচের রাশ নিজেদের হাতে রেখেও স্রেফ অনভিজ্ঞতা আর মহমেডানের বড় চেহারার দুই বিদেশির কাছে আটকে গেল তারা। ম্যাচের পরে ইউনাইটেড কোচ সত্যব্রত ভৌমিক স্বীকারও করে নেন দুই বিদেশিই পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন বলে। ম্যাচের ফল মহমেডানের পক্ষে ২-০। দু’টি গোলের পিছনেই অবদান রয়েছে সমিদি আদেলেজার। সারা মাঠ জুড়ে দাপিয়ে খেললেন আদেলেজা। তাঁর এই ফর্ম ধরে রাখতে পারলে অনেক দলের পক্ষেই ভোগান্তি রয়েছে। এদিন মাঠে উপস্থিত ছিলেন বেশ কয়েকটি দল। মহমেডান আক্রমণ রুখতে তাঁরা এখন থেকেই ছক কষা শুরু করে দেবেন নিশ্চিত।
ম্যাচের পর মহমেডান কোচ অনন্ত ঘোষ অবশ্য দলের খেলায় খুশি বলে জানালেন। তিনি বলেন, “ইউনাইটেড বেশ ভাল খেলেছে। ক্ষমতার বাইরে গিয়ে তাঁরা লড়াই দিয়েছে।” প্রথমার্ধে তাঁর ছেলেরা কেন ভাল খেলতে পারেনি? তাঁর উত্তরে তিনি অবশ্য প্রথম ম্যাচের জড়তাকে অজুহাত হিসেবে খাড়া করছেন। তবে শারীরিক সক্ষমতায় তাঁর ছেলেরা যে খানিকটা বেশি সুবিধা আদায় করে নিতে পেরেছে তা তিনি মেনে নেন। ইউনাইটেড কোচ ম্যাচের ফলে হতাশ হলেও, তিনি আশাবাদী পরের ম্যাচগুলোতে আরও ভাল ফল করবে তাঁর ছেলেরা। তিনি বলেন, “প্রথমার্ধে ছেলেরা অপেক্ষাকৃত ভাল খেলেছে। মহমেডান আমাদের সঙ্গে পেরে না ওঠায় লং বলে খেলার উপরে জোর দিয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে।” সেখানেই তাঁর তরুণরা পিছিয়ে পড়ে। বলে তিনি মনে করছেন। তবে এর আগে বড় দলে দীর্ঘদিন খেলা অসীম বিশ্বাস ও রাকেশ মাসিদের দায়িত্ববোধের অভাবে তিনি যে ক্ষুব্ধ, তা হাবেভাবে বুঝিয়ে দেন। তিনি বলেন, “এরপর তো আমাকে আমাকেই মাঠে নামতে হবে।”
এদিন খেলার শুরু থেকেই আক্রমণ শানান ইউনাইটেড খেলোয়াড়রা। একের পর এক আক্রমণে মহমেডানের রক্ষণকে খুঁজেই পাওয়া যায়নি। প্রথমার্ধে মহমেডান গোলরক্ষক রাজু গঙ্গোপাধ্যায় ছাড়া আর কারও ব্যস্ততা চোখে পড়েনি। রক্ষণে সুখদেব, সুনীলরা ব্যর্থ। বারবার আক্রমণ একার হাতে সামলাতে গিয়ে মাঠের মধ্যে ক্ষোভে ফেটে পড়তে দেখা যায় গোলরক্ষক রাজুকে। তবে একাধিকবার সুযোগ তৈরি করেও তা গোলে পরিণত করতে পারেননি ইউনাইটেড খেলোয়াড়রা। অসীম একটা সহজ সুযোগ মিস করেন। তবে পরের অর্ধে অবশ্য খেলার মিনিট পাঁচ পর থেকেই ম্যাচ ধরে নেন মহমেডানের খেলোয়াড়রা। সমিদ আদেলাজা ও ড্যানিয়েল বিদেমি নিজেদের মধ্যে লম্বা পাস খেলে গিয়ে বিদেমির শট জালে রাখতে কোনও ভুল হয়নি। দ্বিতীয়ার্ধে তখন পাঁচ মিনিট হয়েছে। এই অর্ধের ৭৫ মিনিটের মাথায় ফের আদেলাজার তৈরি বলে ৩০ গজ দূর থেকে জোরালো শট মারেন ফুলচাঁদ। ডান পায়ের শট বাঁক নিয়ে গোলে ঢুকে যায়। এ ক্ষেত্রে ইউনাইটেডের গোলরক্ষক শুভম সেনের কিছু করার ছিল না। এদিন সকালে এই মাঠেই প্রথম খেলায় চানমারি ফুটবল ক্লাব ৪-১ গোলে কেনকার স্পোর্টসকে হারিয়ে দেয়।