Advertisement
E-Paper

যুব বিশ্বকাপের মঞ্চে সাফাইকর্মীর ছেলে রহিম আলি

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই দু’কামরার ছোট্ট বাড়িটি লোকে লোকারণ্য। ছেলেছোকরা থেকে ছাপোষা মহিলা—একে একে সবাই এসে অভিনন্দন জানিয়ে যাচ্ছেন। কালই তো ভারতের মাঠে নামার কথা। সতীর্থদের সঙ্গে পা মেলাতে দেখা যাবে বছর সতেরোর রহিম আলিকেও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৭ ২১:৪৭
রহিম আলি। ছবি: সংগৃহীত।

রহিম আলি। ছবি: সংগৃহীত।

ঘরের ছেলে বিশ্ব ফুটবলের মঞ্চে। অনুর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে ছেলেটাও অংশ নিচ্ছে দলেরই সঙ্গে। ইছাপুরের মায়াপল্লীতে তাই সাজ সাজ রব। উচ্ছ্বাস বেলাগাম!

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই দু’কামরার ছোট্ট বাড়িটি লোকে লোকারণ্য। ছেলেছোকরা থেকে ছাপোষা মহিলা—একে একে সবাই এসে অভিনন্দন জানিয়ে যাচ্ছেন। কালই তো ভারতের মাঠে নামার কথা। সতীর্থদের সঙ্গে পা মেলাতে দেখা যাবে বছর সতেরোর রহিম আলিকেও।

আরও পড়ুন: প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এমসিসি-র ক্রিকেট কমিটিতে সাকিব

নেহাতই দিন আনি-দিন খাই পরিবারের ছেলে রহিম আলি। বাবা মহম্মদ রফিক ব্যারাকপুর মিউনিসিপ্যালিটির জঞ্জাল টেনে নিয়ে যাওয়ার গাড়ি চালান। মা সীমা বিবি লোকের আগে পরিচারিকার কাজ করতেন। সম্প্রতি ইছাপুর রাইফেল ফ্যাক্টরির কাছে খাবারের দোকান খুলেছেন তিনি। তবে ছেলের বিশ্বকাপ খেলার আনন্দে দোকানটি বন্ধ রেখেছেন। হাতে যে সময় খুব কম! ছেলের খেলা দেখতে হবে না! দু’কামরার ছোট্ট বাড়ির একটি ঘরে ছেলের যাবতীয় পুরস্কার সাজিয়ে উচ্ছ্বসিত সীমা বিবি জানালেন, ছেলের জন্যই এই বাড়ি করতে পেরেছেন তাঁরা। ছেলের কথা বলতে গিয়ে বারে বারেই আবেগতাড়িত হয়ে পড়ছিলেন তিনি। চোখের জল মুছে বললেন, ‘‘ছেলেই আমাদের সমাজে পরিচিতি এনে দিয়েছে। আমরা গর্বিত।’’

ছেলের সব পুরস্কার সাজিয়ে বসেছেন রহিমের গর্বিত বাবা মা।

আরও পড়ুন: যুব বিশ্বকাপের খুঁটিনাটি এক নজরে

দেখুন ভিডিও:

গত পাঁচ বছর ধরে মোহনবাগানের জুনিয়র টিমের হয়ে খেলছেন রহিম আলি। দাদা বছর কুড়ির আকবর আলির হাতেই ফুটবলের হাতেখড়ি। আকবর খেপ খেলা প্লেয়ার। কিন্তু ভাইকে কখনও খেপ খেলতে দেননি। তাঁর বাবা মহম্মদ রফিকের কথায়, ‘‘আগে ছেলেকে কী ভাবে মানুষ করব ভাবতাম। এখনও টিভির পর্দায় ছেলেকে দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারি না।’’ আজ, সকালেই মাজারে গিয়ে মানত করে এসেছেন তাঁরা। মন্দিরে পুজোও দিয়েছেন। মনেপ্রাণে চান, সতীর্থদের গোলের বল বাড়ানোর পাশাপাশি ছেলে গোলও করুক। যতই ব্যস্ততা থাক, ছেলের মাঠে নামার দিনগুলিতে টিভির পর্দাতেই চোখ রাখতে চান তিনি।

মায়াপল্লীর ছোট্ট বাড়িটিতে রহিমকে অভিনন্দন জানাতে আজ ভিড় জমিয়েছিলেন অনেকেই। পাশের বাড়ির অঞ্জু সাউ বললেন, ‘‘শুধু আমরা বড়রা নই, পাড়ার সব কচি কাঁচারাও রহিমের জন্য গর্বিত। ছোটদের নিয়েও মাঠে খেলতে নামত সে। আমরা সবাই রহিমের সাফল্য কামনা করছি।’’

আজ রহিমের মা-বাবার গর্ব করার দিন। ছেলে বিশ্বকাপের আসরে। দেশের ফুটবল-পাগলদের মুখে মুখে ফিরছে রহিমের নাম। দেশের সম্মান রাখার দায়িত্বও যে রহিমের উপরেই!

Football FIFA U-17 World Cup Rahim Ali রহিম আলি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy