বিশাল প্যান্ডেল বাধা হয়ে গিয়েছে মাঠে। সেখানেই বাগান রত্ন-সহ নানা পুরস্কার দেওয়ার কথা ছিল ২৯ জুলাই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হচ্ছে না। স্থগিত হয়ে যেতে চলেছে পুরো অনুষ্ঠান। সোমবার সরকারি ঘোষণা।
প্রস্তুতির একেবারে শেষ মুহূর্তে এসে কেন হঠাৎ গতবারের মতোই স্থগিত হয়ে যাচ্ছে রত্ন প্রদান অনুষ্ঠান। ক্লাব সূত্রের খবর, মূলত ১২৫ বছরের অনুষ্ঠানকে আরও জাঁকজমকপূর্ণ করার জন্যই বাগান দিবসের মূল অনুষ্ঠানকে মিলিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত। পুজোর আগেই যা একসঙ্গে করতে চাইছেন সবুজ-মেরুন কর্তারা। শনিবার রাতে এক শীর্ষ কর্তা বললেন, ‘‘আমরা ১২৫ বছরের অনুষ্ঠানকে বড় আকারে করতে চাইছি। সে জন্যই রত্ন-সহ বাগান দিবসের অনুষ্ঠানটা করতে চাই নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামেই।’’ তবে নিয়মরক্ষার জন্য ওই দিনের নির্ধারিত খেলাগুলি অবশ্য হবে।
গতবার ঘোষনা করেও ‘রত্ন’ দেওয়া হয়নি অরুময় নৈগমকে। দেওয়া হয়নি অন্য পুরস্কারও। বন্ধ ছিল সব অনুষ্ঠান। বলা হয়েছিল ১২৫-র অনুষ্ঠান করে পরে তা দেওয়া হবে। বছর ঘুরে গেলেও তা হয়নি। প্রতিশ্রুতিই থেকে গিয়েছে। এ বার প্রয়াত করুণা ভট্টাচার্যকে ‘বাগান-রত্ন’ এবং আই লিগ জয়ীদেরও পুরস্কার দেওয়ার কথা ছিল। তা-ও স্থগিত হয়ে গেল। বাগানের এক শীর্ষ কর্তা অবশ্য জোর দিয়ে বললেন, ‘‘সোমবার আমরা নতুন তারিখ জানিয়ে দেব। এ বার বড় করে অনুষ্ঠান হবেই এবং সেটা পুজোর আগেই।’’
এ দিকে ইস্টবেঙ্গল যে দিন কল্যাণীতে প্রস্তুতি ম্যাচে সাত গোলে জিতল, ঠিক সে দিনই মোহনবাগান কোচ সঞ্জয় সেন বলে দিলেন, ‘‘ডার্বির চেয়ে আমার কাছে লিগ জয় বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ডার্বি জিতলাম আর কলকাতা লিগ পেলাম না সেটা চাই না। চ্যাম্পিয়ন হওয়াটাই আসল।’’
বাগানে এখনও পুরোদমে বল নিয়ে অনুশীলন শুরু হয়নি। কাতসুমি ছাড়া কোনও বিদেশি আসননি। ভিসা সমস্যা মিটে যাওয়ায় সামনের সপ্তাহে পুরো দমে বল নিয়ে মাঠে নামবেন ঠিক করেছেন সঞ্জয়। শনিবার তিনি বলে দিলেন, ‘‘দিন সাতেক গুস্তাভোকে দেখতে পাব। তখন প্র্যাক্টিস ম্যাচ খেলব ভেবে রেখেছি।’’
লাল-হলুদ কোচ বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য অবশ্য প্রস্তুতি ম্যাচ খেলা শুরু করে দিয়েছেন। এ দিন যেমন স্থানীয় গয়েশরপুরের একটি টিমের সঙ্গে খেললেন অর্ণব মণ্ডলরা। শক্তিতে অনেক কমজোরি হলেও ম্যাচে প্রচুর গোল হল। কোরিয়ার নতুন বিদেশি ডু ডংকে স্ট্রাইকারে খেলাচ্ছেন বিশ্বজিৎ। তিনি আবার গোল পেলেন। অন্য স্ট্রাইকার জিতেন মুর্মু অবশ্য জোড়া গোল করে নিজেকে চেনালেন। যা দেখে লাল-হলুদ কোচের মন্তব্য, ‘‘ফিটনেসে সামান্য সমস্যা আছে। রক্ষণ নিয়েও সমস্যা আছে। তবে কলকাতা লিগের আগে আরও সময় আছে। আমার যেটা ভাল লাগছে তা হল প্রত্যেক ফুটবলারই প্রচণ্ড পরিশ্রম করছে। গোল করার চেষ্টা করছে। গোল পাচ্ছেও।’’ মঙ্গলবার প্রিমিয়ার লিগ ‘বি’-এর ক্লাব ভবানীপুরের সঙ্গে। সে দিন ডু ডং-দের অবস্থা আরও কিছুটা বুঝতে পারবেন লাল-হলুদ কোচ।
ইস্টবেঙ্গল তিন বিদেশিকে ইতিমধ্যেই সই করিয়েছে। মোহনবাগান কাতসুমি এবং গুস্তাভো ছাড়া কাউকে এখনও সই করায়নি। সনি নর্ডির সঙ্গে পাকা কথা হলেও তাঁকে সই করানো হয়নি এখনও। এই অবস্থায় ইস্টবেঙ্গলের ছেঁটে ফেলা ডুডু ওমাগবেমি খেলতে চাইছেন সবুজ-মেরুন জার্সিতে। নাইজিরিয়ান ফুটবলারটির কোনও ক্লাব নেই। অবস্থা এখন এতটাই খারাপ যে ডুডুর এজেন্ট কার্যত হত্যে দিয়ে পড়ে রয়েছেন বাগান তাঁবুতে। আর তাতে প্রচণ্ড বিরক্ত সঞ্জয় সেন। এ দিন তিনি বললেন, ‘‘ডুডুর এজেন্ট বারবার ফোন করছে। আমি ওদের বলে দিয়েছি সমস্যা আছে এখন কিছু হবে না।’’
স্পনসর ঝামেলা এখনও মেটেনি বাগানে। ঝুলিয়ে রেখেছেন ইউ এস এল কর্তারা। সময় চাইছেন। নতুন কয়েকটি কোম্পানির সঙ্গে বাগান কর্তারা কথাবার্তা চালালেও পুরনো স্পনসররা কিছু না জানানোয় তা চূড়ান্ত হচ্ছে না। এই অবস্থায় কর্তারা তীব্র সমস্যায়। ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার গুস্তাভো ভিসা পেয়ে গিযেছেন। কিন্তু তাঁকে এখনও টিকিট পাঠানো হয়নি ক্লাবের পক্ষ থেকে। ক্লাব সূত্রের খবর, সামনের সপ্তাহে চলে আসবেন গুস্তাভো। ইস্টবেঙ্গল ইতিমধ্যেই সরকারি ভাবে পুরো টিমের নাম ঘোষণা করে দিয়েছে। অনুশীলন শুরু হয়ে গেলেও মোহনবাগান তা করতে পারেনি নানা সমস্যার জন্য। কলকাতা লিগে সবুজ-মেরুন জার্সিতে কোন কোম্পানির লোগো থাকবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
বাগানের ১২৫ বছরের অনুষ্ঠান যে দিনই হোক, ‘উত্তরের মোহনবাগান’ নামে সদস্য-সমর্থকদের একটি সংগঠন আহিরিটোলা থেকে একটি পদযাত্রার আয়োজন করেছে এ দিন। কোচ সঞ্জয় সেন, অধিনায়ক শিল্টন পাল, কাতসুমি-সহ পুরো মোহনবাগান টিম উপস্থিত থাকবে সেখানে। বহু প্রাক্তন ফুটবলারও হাঁটবেন ‘মোহনবাগানের জন্য হাঁটুন’ উৎসবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy