Advertisement
E-Paper

মোহনবাগানকে আটকালেন ক্রোমা

গত বছর আই লিগের মাঝপথে হঠাৎই ক্রোমাকে ছেঁটে ফেলেছিল শঙ্করলাল চক্রবর্তীর মোহনবাগান। ফেলে দিয়েছিল বাতিলের খাতায়।  সেই দলের বিরুদ্ধে খেলতে নামলে জেদ তো থাকবেই। সেই তাগিদের ঝড়টাই আছড়ে পড়ল এ দিন পালতোলা নৌকায়।

রতন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৮ ০৪:৪৫
নায়ক: মোহনবাগানের রক্ষণ ভেঙে এগোচ্ছেন ক্রোমা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

নায়ক: মোহনবাগানের রক্ষণ ভেঙে এগোচ্ছেন ক্রোমা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

তাঁর করা শেষ মুহূর্তের গোলে হঠাৎই নিস্তব্ধ হয়ে গেল সবুজ-মেরুন গ্যালারি।

আবিরের ধোঁয়া, পতাকা ওড়ানোর উচ্ছ্বাসে জল ঢেলে দেওয়ার পর আনসুমানা ক্রোমা যা বললেন তা শুনলে অবশ্য অবাক হতে হল। ‘‘গোলটা করে আমার দুঃখ হচ্ছিল। মোহনবাগান বড় ক্লাব। ওখানে আমি খেলেছি। কিন্তু পিয়ারলেসের প্রতিও তো আমার দায়বদ্ধতা আছে।’’ লাইবিরিয়ার স্ট্রাইকারের কথা শুনে বোঝাই যাচ্ছিল, পুরানো ক্লাবকে আটকে দিয়ে কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দিতেই এ সব বলছেন। বলতে তিনি পারেনই, আজ তো তাঁরই দিন!

গত বছর আই লিগের মাঝপথে হঠাৎই ক্রোমাকে ছেঁটে ফেলেছিল শঙ্করলাল চক্রবর্তীর মোহনবাগান। ফেলে দিয়েছিল বাতিলের খাতায়। সেই দলের বিরুদ্ধে খেলতে নামলে জেদ তো থাকবেই। সেই তাগিদের ঝড়টাই আছড়ে পড়ল এ দিন পালতোলা নৌকায়। অতিরিক্ত সময়ের শুরুতেই। ছোট্ট একটা শরীরী দোলায় মোহনবাগানের বিদেশি স্টপার কিংগসলে ওবুনেমেনেকে ছিটকে দিয়ে গোল করে গেলেন ক্রোমা। সুভাষ ভৌমিকের দল একটা ম্যাচ ড্র করে সামান্য পিছিয়ে পড়েছিল। মোহনবাগান পয়েন্ট নষ্ট করার পর ইস্টবেঙ্গলে তাই উচ্ছ্বাস।

কলকাতা প্রিমিয়ার লিগ

মোহনবাগান ১ পিয়ারলেস ১

ম্যাচের শুরু থেকেই ক্রোমা চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন কিছু করে দেখানোর। তাঁর পায়ে ভাল ড্রিবল আছে। কাদার মাঠেও বল নিয়ে ক্ষিপ্রতার সঙ্গে চুটকি ড্রিবল করায় ওস্তাদ। পাড়ায় পাড়ায় নিয়মিত ‘খেপ’ খেলে বেড়ান ক্রোমা। সেখানে এই গুণের জন্যই তাঁর কদর। সল্টলেকের একটি মাঠে পনেরোই অগস্টও ‘খেপ’ খেলেছেন বলে খবর। ক্রোমার কাছে এ দিনের কাদায় ভর্তি মাঠ ছিল তাই আদর্শ জায়গা। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েই বারবার পুরনো ক্লাবের গোল মুখে হানা দিচ্ছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত সফলও হয়েছেন।

এমনিতে এ বারের মোহনবাগান এখনও অপরাজিত থাকলেও তাদের রক্ষণের হাল খুবই খারাপ। চার ম্যাচে তিন গোল গোল খেয়েছেন কিংগসলে-অরিজিৎ বাগুইরা। মাঝমাঠও থিতু হতে পারেনি। আসলে প্রথম একাদশই এখনও তৈরি করতে পারেনি মোহনবাগান। পুরো দলটাই নির্ভর করছে দুই বিদেশি ফরোয়ার্ড দিপান্দা ডিকা আর হেনরি কিসেক্কার উপর। দু’জনেই দু’টো করে গোল করে ফেলেছেন ইতিমধ্যেই। এ দিনও হেনরির গোলেই এগিয়ে গিয়েছিল মোহনবাগান। কিন্তু গোল করে তা তো ধরে রাখতে হবে! এ জন্য কোচেদের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকা দরকার। সেটা কি শঙ্করলালের ছিল? মনে হয় না। দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝি এগিয়ে যাওয়ার পর রক্ষণ সংগঠন আরও আঁটশাঁট করার দিকে মনই দেননি তিনি। তবে এটাও ঘটনা যে, ডিকা এবং হেনরি প্রথমার্ধে অন্তত তিনটি গোলের সুযোগ নষ্ট করেছেন। সহজ সুযোগ নষ্ট করেছেন আজহারউদ্দিনও। দ্বিতীয়ার্ধে বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যের পিয়ারলেসও দু’টি গোলের সুযোগ পেয়েছিল। ম্যাচ শেষে শঙ্করলাল বলছিলেন, ‘‘গোল নষ্ট এবং আত্মতুষ্টির জন্যই আমরা জিততে পারিনি।’’ মোহনবাগানকে আগে কলকাতা লিগ জিতিয়েছিলেন বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য। সেই বিশ্বজিৎ এ দিন বসেছিলেন পিয়ারলেসের রিজার্ভ বেঞ্চে। ‘‘ম্যাচটা আমাদের দু’তিন গোলে জেতা উচিত ছিল।’’ ম্যাচ শেষে দাবি করলেন তিনি। যা শুনে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েননি শঙ্করলাল। বলে দিয়েছেন, ‘‘উনি তো বড় কোচ। বাড়ি গিয়ে আর একবার খেলাটা দেখুন, তা হলে বুঝতে পারবেন কাদের জেতা উচিত ছিল!’’

এ দিন ম্যাচ শেষ দেখা যায়, রিজার্ভ বেঞ্চ থেকে মোহনবাগান অধিনায়ক শিল্টন পাল তেড়ে যাচ্ছেন পিয়ারলেস গোলকিপার সন্দীপ পালের দিকে। একজন মাঠ কর্মীকেও দেখা যায় শিল্টনের সঙ্গী হতে। সন্দীপ গ্যালারির দিকে তাকিয়ে দৃষ্টিকটু আচরণ করেন বলে অভিযোগ। বোঝাই যাচ্ছিল, মরসুমের প্রথম বার পয়েন্ট নষ্ট করে কোচের মতো পুরো দলই বেশ চাপে। এ সব তারই বহিঃপ্রকাশ।

Football CFL Calcutta Football League Mohun bagan Peerless Kromah
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy