বিদেশিদের নিয়ে চিন্তায় মর্গ্যান-সঞ্জয়।
দরজায় কড়া নাড়তে শুরু করে দিয়েছে আই লিগ। আগামী শনি, রবিবারেই মাঠে নেমে পড়বে কলকাতার দুই প্রধান। তার আগে মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গলে দুই সমস্যা ভাবাচ্ছে দুই অভিজ্ঞ কোচকে।
মোহনবাগানের সঞ্জয় সেনের সমস্যা যখন সনি নর্ডি-সহ পাঁচ গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলারকে এখনও না পাওয়া, ঠিক তেমনই ইস্টবেঙ্গল কোচ ট্রেভর জেমস মর্গ্যানও চাতকের মতো তাকিয়ে টিমে পজিটিভ স্ট্রাইকারের জন্য।
মিডিয়ার সামনে দুই কোচই হাসিমুখে এই সব সমস্যা ফুৎকারে উড়িয়ে দিচ্ছেন। বলছেন, ‘‘টিমে প্রচুর ফুটবলার। বিকল্প খুঁজে পেতে অসুবিধা হবে না।’’ কিন্তু সূত্রের খবর, ভিতরে ভিতরে সঞ্জয় এবং মর্গ্যান দু’জনেই চিন্তিত প্রথম ম্যাচের আগে টিম গঠন নিয়ে। আই লিগে ইস্টবেঙ্গলের প্রথম ম্যাচ আগামী শনিবার। বারাসতে যে ম্যাচে মর্গ্যানের টিমের প্রতিপক্ষ আইজল এফসি। বাগান নামছে ঠিক তার এক দিন পর। রবিবার। রবীন্দ্র সরোবরে সেই ম্যাচে এ বারই আই লিগে ফেরা গোয়ার চার্চিল ব্রাদাসের্র বিরুদ্ধে খেলবেন কাতসুমিরা।
বাগান কোচ যদিও বলছেন, ‘‘চলতি সপ্তাহেই পুরো টিম দেখে নিতে পারব। বুধবারের মধ্যে ছেলেরা সব প্র্যাকটিসে নেমে পড়বে। তার আগে কিছু বলব না।’’
ইস্টবেঙ্গল কোচ যদিও সঞ্জয়ের মতো খোলামেলা নন। কিছুটা রক্ষণাত্মক ভঙ্গীতে তাঁর মন্তব্য, ‘‘কিছু পরিকল্পনা তো রয়েছেই। কিন্তু তা মিডিয়ার সঙ্গে আলোচনা করতে চাইছি না।’’
কিন্তু ঘটনা হচ্ছে এখনও পর্যন্ত বাগান প্র্যাকটিসে যোগ দেননি দুই বিদেশি সনি, এডুয়ার্ডো-সহ তিন ভারতীয় ফুটবলার জেজে, আনাস এবং বিক্রমজিৎ। এদের মধ্যে শেষ জনের বিকল্প হিসেবে শেহনাজ, প্রণয়, সৌভিক চক্রবর্তীরা রয়েছেন। কিন্তু বাকি চার জনই বাগানের রক্ষণ, মিডফিল্ড এবং আক্রমণ ভাগের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। সোমবার অনুশীলনে যোগ দেওয়ার কথা আনাসের। সেক্ষেত্রে প্রথম ম্যাচের আগে টিম গড়তে গিয়ে এই চার জনের মধ্যে কাকে ম্যাচ ফিট অবস্থায় পাওয়া যাবে, সেটাই বড় চিন্তা বাগান টিম ম্যানেজমেন্টের। গত দুই মরসুমে দেখা গিয়েছে বাগান কোচ সঞ্জয় সেন সর্বদাই প্রথম একাদশ গড়তে গিয়ে নামের চেয়ে প্লেয়ারের ফিটনেসকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। এ বারও যদি সেই নীতি নিয়ে তিনি চলেন তা হলে বুধবার দলের সঙ্গে অনুশীলনে নেমে রবিবার সনি নর্ডি চার্চিলের বিরুদ্ধে প্রথম একাদশে থাকেন কি না সেই প্রশ্নই এখন ঘোরাফেরা করছে গঙ্গাপারের তাঁবুতে।
বাগান কোচ সঞ্জয় সেন এ দিন অবশ্য এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে গিয়ে ঝাঁঝালো গলায় তাঁর সেই কড়া মনোভাবই প্রকাশ করে ফেললেন। ‘‘যারা নেই তাদের নিয়ে আমি ভাবছি না। গত বছরও তো সনিকে প্রথম ম্যাচে খেলাইনি। ওরা আগে আসুক। তার পর পরিস্থিতি বুঝে ঠিক করব প্রথম ম্যাচের টিম।।’’ ফলে প্রথম ম্যাচে চার্চিলের বিরুদ্ধে সনি-জেজে শুরু থেকে খেলবেন কি না তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
বাগানে যখন প্রথম একাদশ গড়া নিয়ে নানা চুলচেরা বিশ্লেষণ, ইস্টবেঙ্গল কোচ তখন খুঁজছেন প্রথম টিমে একজন পজিটিভ স্ট্রাইকার। রফিক পজিটিভ স্ট্রাইকার নন। তাঁকে দিয়ে বড়জোর কাজ চালিয়ে নেওয়া যায়। আর ওয়েডসন উইঙ্গারের ভূমিকাতেই বেশি স্বচ্ছন্দ। তা হলে গোল করার লোকটি কোথায় ইস্টবেঙ্গলে?
এখনও পর্যন্ত মর্গ্যানের অনুশীলনে পজিটিভ স্ট্রাইকার বলতে যাঁকে দেখা যাচ্ছে তিনি হলেন কেরলের পি.সুহের। ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর স্ট্রাইকার উইলিস প্লাজা কবে আসবেন তা নিয়ে এখনও অন্ধকারে ইস্টবেঙ্গল কোচ। লাল-হলুদ ফুটবল সচিব সন্তোষ ভট্টাচার্য অবশ্য এ দিন বলে দিলেন, ‘‘সোমবার বুকেনিয়ার ভিসার সমস্যা মিটে যাবে। মঙ্গলবার উইলিস প্লাজাও ভিসা পেয়ে যাবে।’’
মর্গ্যান অবশ্য কর্তাদের আশ্বাসে কান দিচ্ছেন না। বরং বলে দিয়েছেন, ‘‘উইলিস প্লাজা খেলার মধ্যেই রয়েছে বলে শুনেছি। এক সপ্তাহ আগেই নাকি ম্যাচ খেলেছে। আগে আসুক। ও যদি খেলার মতো অবস্থায় থাকে তা হলে প্রথম ম্যাচে স্ট্রাইকার পজিশন নিয়ে চিন্তা থাকবে না। তবে নামের চেয়ে ফর্মটাই বেশি গুরুত্ব পাবে আমার টিমে।’’
শিলিগুড়িতে প্রদর্শনী ম্যাচ খেলতে গিয়ে ৪-৩-৩ ছকে ওয়েডসনকে উইং থেকে সরিয়ে নিয়ে এসে দুই স্ট্রাইকারের পিছনে খেলিয়েছিলেন মর্গ্যান। বিকল্প হিসেবে তাই ওয়েডসনকে নিয়ে এই গেমপ্ল্যানও আপাতত পকেটে রাখছেন সাহেব কোচ। তবে বুকেনিয়া প্রথম ম্যাচ খেলতে পারবেন কি না তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই লাল-হলুদে। কারণ উগান্ডার এই স্টপারকে ভালমতো নীরিক্ষণ না করেই নামিয়ে দেওয়ার পক্ষপাতী নন ইস্টবেঙ্গল কোচ। সেক্ষেত্রে আইজলের বিরুদ্ধে লাল-হলুদ সেন্ট্রাল ডিফেন্সে আনোয়ারের সঙ্গে গুরবিন্দরকেই দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা জোরালো হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy