Advertisement
১১ মে ২০২৪

এখান থেকে আরও ভয়ঙ্কর হবে নাদাল

ফরাসি ওপেনে জেতার পর থেকে নাদালকে দারুণ তরতাজা লাগছে। মনে হচ্ছে নতুন নাদালকে দেখছি। ঘাস যত শুকনো হবে, কোর্ট যত গতি হারাবে, নাদাল তত ভয়ঙ্কর হবে। ও খুব শক্তিশালী।

টুর্নামেন্ট যত এগোচ্ছে তত ছন্দে দেখাচ্ছে নাদালকে। ফাইল চিত্র

টুর্নামেন্ট যত এগোচ্ছে তত ছন্দে দেখাচ্ছে নাদালকে। ফাইল চিত্র

বরিস বেকার
শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৭ ০৪:৪১
Share: Save:

একটা সপ্তাহের দুরন্ত টেনিস দেখার পরে এই রবিবারটা একটু ফিরে তাকানোর দিন। আর সেটা করতে গিয়ে মনে হচ্ছে, এ বারের উইম্বলডনে টাইম মেশিনে চেপে সেই ২০০৯ সালে ফিরে যাইনি তো?

রাফায়ের নাদালকে দারুণ ফিট দেখাচ্ছে। আর যে ভাবে খেলছে তাতে আগামী রবিবারের ফাইনালে ওকে দেখতে না পাওয়ার কারণ দেখছি না। রজার ফেডেরারও ভাল ছন্দে। কিন্তু ও নিজেকে পুরোপুরি মেলে ধরছে না। নিশ্চিত করছে, যাতে পরের সপ্তাহে লড়াই করার মতো ক্ষমতা ওর হাঁটু আর শরীরে থাকে। এই দু’জনের ঠিক পিছনে আছে নোভাক জকোভিচ এবং অ্যান্ডি মারে। আমি নিশ্চিত, ২০০৯-১০ সালে এই কলামটা লিখলে, ঠিক এ কথাগুলোই লিখতাম!

উইম্বলডনের প্রথম সপ্তাহে স্ট্যান ওয়ারিঙ্কার হারটা ছাড়া আর কোনও অঘটন ঘটেনি। তবে এত চোট-আঘাত আর ওয়াকওভারের বহর দেখে একটু খারাপই লাগছে। এটিপি-র নিজস্ব নিয়ম আছে ওদের টুর্নামেন্টে এ ধরনের ঘটনা আটকানোর জন্য। কিন্তু আইটিএফ এখনও সেই নিয়ম ওদের টুর্নামেন্টে চালু করেনি। ঘটনা হল, আপনি যদি কোনও মতে গ্র্যান্ড স্ল্যামের প্রথম রাউন্ডে নামতে পারেন, তা হলে হেরে গেলেও ৩৫ হাজার পাউন্ড পাবেন। যেটা অনেক। আর খেলোয়াড়রাও কোনও নিয়ম ভাঙছে না। তাই মনে হচ্ছে, ওরা কোনও মতে প্রথম রাউন্ডে নেমে পড়তে চাইছে। মনে হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র ওপেন থেকে নিয়মে কিছু বদল দেখতে পারব।

এ বারের টুর্নামেন্টে ফিরে আসি। ফরাসি ওপেনে জেতার পর থেকে নাদালকে দারুণ তরতাজা লাগছে। মনে হচ্ছে নতুন নাদালকে দেখছি। ঘাস যত শুকনো হবে, কোর্ট যত গতি হারাবে, নাদাল তত ভয়ঙ্কর হবে। ও খুব শক্তিশালী। ধারাবাহিক ভাবে ভাল সার্ভ করছে আর বছর দশেক আগে যে ভাবে বল তাড়া করত কোর্টে, সেটাই এখন করছে। আমি আগেই লিখেছিলাম, প্রথম সপ্তাহটা টিকে গেলে নাদাল কিন্তু চ্যাম্পিয়নের দাবিদার হয়ে উঠবে। নাদাল শুধু টিকেই যায়নি, দেখে মনে হচ্ছে জীবনের সেরা ফর্মে আছে।

মারেকে অবশ্য প্রথম সপ্তাহে ভালই লড়াই করতে হয়েছে। ফাবিও ফগনিনি-র সঙ্গে ম্যাচটা দারুণ জমে গিয়েছিল। দর্শক সমর্থনটাও খুব ভাল পাচ্ছে মারে। যেটাকে ও কাজে লাগাচ্ছে। বছরের শুরুর দিকে মারের কোমরের চোট নিয়ে অনেক কথা হচ্ছিল। এখন দেখে মনে হচ্ছে, চোটটা আর ভোগাচ্ছে না। ওর ফোরহ্যান্ড আর পা— দু’টোই শক্তিশালী হয়েছে। ট্রফি সহজে হাতছাড়া করবে না মারে।

আর যাকে দেখে মনে হচ্ছে, পুরনো টাচটা ফিরে পেয়েছে, সে হল জকোভিচ। আন্দ্রে আগাসির নজরদারিতে প্রথম সপ্তাহটা নিখুঁত টেনিস খেলেছে ও। দেখে মনে হচ্ছে, প্রাক্তন চ্যাম্পিয়নের মধ্যে ফোকাস আর এনার্জিটা ফিরিয়ে এনেছে আগাসি। সেই হুঙ্কার আর মুষ্টিবদ্ধ হাত শূন্যে ছুড়ে দেওয়ার ছবি আবার দেখা যাচ্ছে। তবে এখান থেকে কিন্তু জকোভিচের রাস্তাটা আরও কঠিন।

এ বার দর্শকদের আর এক প্রিয় তারকার ওপর চোখ রাখা যাক। ফেডেরার। ওকে দেখে মনে হচ্ছে, নিজেকে একটু গুটিয়ে রাখছে। টুর্নামেন্টের শেষ দিনটা পর্যন্ত এনার্জি এবং শক্তি বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছে ফেডেরার। ওর একটা সুবিধে, প্রথম সপ্তাহে খুব একটা কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়নি। এখন প্রশ্নটা হচ্ছে, তরুণ প্রজন্মকে টপকে ফেডেরার এগিয়ে যেতে পারবে কি না?

মেয়েদের টেনিসে ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কার কথা আলাদা করে বলতেই হবে। মাত্র ছ’মাস আগে মা হয়েছে আজারেঙ্কা। আর তার পরে কোর্টে নেমে এ রকম পারফর্ম্যান্স এক কথায় অবিশ্বাস্য। আমরা ভেবেছিলাম সেরিনা উইলিয়ামস অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতে একটা অভাবনীয় কীর্তি করেছে। এ তো সেই ঘটনাকেও টপকে যাচ্ছে।

ছেলেদের মতো মেয়েদের বিভাগেও বিশেষ কোনও অঘটন ঘটেনি। বাছাইরা মোটামুটি সবাই লড়াইয়ে আছে। তবে এখান থেকে ফেভারিট বাছা খুব কঠিন। আগামী সপ্তাহটা যে মেয়ে ভাল খেলবে, সে-ই ট্রফি নিয়ে যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE