Advertisement
০৫ মে ২০২৪

শ্রীলঙ্কায় ডাইভিংয়ে সোনা হুগলির মৌপ্রিয়ার

কলম্বোয় দক্ষিণ এশিয়ান অ্যাকোয়াটিক চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের মুখ উজ্জ্বল করল হুগলির মৌপ্রিয়া মিত্র। প্ল্যাটফর্ম ডাইভিং এবং স্প্রিং বোর্ড বিভাগে পদক জিতেছে সে। প্ল্যাটফর্ম ডাইভিং-এ সোনা এবং ৩ মিটার স্প্রিং বোর্ড-এ রুপো পেয়েছে মৌপ্রিয়া।

মৌপ্রিয়া মিত্র। ঘরে ফেরার পর।—নিজস্ব চিত্র।

মৌপ্রিয়া মিত্র। ঘরে ফেরার পর।—নিজস্ব চিত্র।

প্রকাশ পাল
ব্যান্ডেল শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৬ ০২:৪৭
Share: Save:

কলম্বোয় দক্ষিণ এশিয়ান অ্যাকোয়াটিক চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের মুখ উজ্জ্বল করল হুগলির মৌপ্রিয়া মিত্র। প্ল্যাটফর্ম ডাইভিং এবং স্প্রিং বোর্ড বিভাগে পদক জিতেছে সে। প্ল্যাটফর্ম ডাইভিং-এ সোনা এবং ৩ মিটার স্প্রিং বোর্ড-এ রুপো পেয়েছে মৌপ্রিয়া।

গত ১৮ থেকে ২৩ অক্টোবর কলম্বোয় এই চ্যাম্পিয়নশিপে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করে হুগলি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির পড়ুয়া মৌপ্রিয়া। সার্ক ভুক্ত সাতটি দেশের প্রতিযোগীরা অংশ নিয়েছিল। জীবনে প্রথমবার আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় নেমেই মেয়ের এমন সাফল্যে বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন থেকে কোচ সকলেই খুশি।

কোচ সুখেন্দু দাস বলেন, ‘‘ওর কোচ এবং মেন্টর হিসেবে আমি গর্বিত। আরও অনেক সাফল্য ওর জন্য অপেক্ষা করছে।’’ সুইমিং ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট তথা রাজ্য সাঁতার সংস্থার সভাপতি রামানুজ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মৌপ্রিয়া ভীষণ প্রতিভাবান। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ পেলে আরও অনেক দূর যাবে।’’ তিনি জানান, জাতীয় স্তরের পারফর্ম্যান্স দেখেই মৌপ্রিয়াকে ভারতীয় দলে সুযোগ দেওয়া হয়। দেশ থেকে মোট ১২ জন ডাইভার কলম্বোয় গিয়েছিল।

গত দু’বছর ধরে রাজ্য এবং জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় একের পর এক সাফল্য এনেছে মৌপ্রিয়া। চলতি বছরেই বেঙ্গালুরুতে জুনিয়র ন্যাশনাল অ্যাকোয়াটিক মিটে হাইবোর্ডে প্রথম, ৩ মিটার স্প্রিংবোর্ডে দ্বিতীয় এবং এক মিটার স্প্রিংবোর্ডে তৃতীয় স্থান পায় সে। ২০১৫য় পুনেতে একই প্রতিযোগিতায় এক মিটার স্প্রিংবোর্ডে দ্বিতীয় স্থান পেয়েছিল সে। অংশ নিয়েছে সিনিয়র ন্যাশনালেও। গত ২ বছর ধরে রাজ্যে সিনিয়র গ্রুপ ডাইভিংয়ে প্রথম। জাতীয় স্কুল গেমসেও সাফল্য রয়েছে মৌপ্রিয়ার ঝুলিতে।

শ্রীলঙ্কা থেকে গত মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর ব্যান্ডেলের মানসপুরে বাড়ি ফিরেছে মেয়েটি। বাবা ভাস্কর মিত্র ব্যবসায়ী। তাঁর কথায়, ‘‘মেয়ে আগে জিমন্যাস্টিক করত। পা ভেঙে যাওয়ায় তাতে ইতি টানতে হয়। বছর তিনেক আগে ডাইভিং শুরু করে।’’ মা শুভ্রাদেবী জানান, গত কয়েক বছর ধরে মেয়ে চুঁচুড়া সুইমিং ক্লাবে বাংলা দলের প্রশিক্ষক সুখেন্দু দাসের কাছে ডাইভিংয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। কলকাতার হেদুয়ায় সেন্ট্রাল সুইমিং ক্লাবে তারকনাথ হাইত এবং নিমাই ভৌমিকের তত্ত্বাবধানেও অনুশীলন করে সে।

জীবনে প্রথম আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় এমন সাফল্যে কেমন লাগছে মৌপ্রিয়ার ?

চুঁচুড়া সুইমিং ক্লাবের ছাত্রীটির উত্তর, ‘‘এত বড় প্রতিযোগিতায় পদক পেয়ে খুব ভাল লাগছে। এখনও আরও বেশি অনুশীলন করতে চাই। দেশের হয়ে অলিম্পিকে নামার ইচ্ছা রয়েছে। তবে মন দিয়ে পড়াশোনাটাও করতে চাই।’’

তবে ক্লাবের কর্মকর্তাদের আক্ষেপ, ক্লাবে ডাইভিংয়ের পরিকাঠামো ভাল নয়। আধুনিক মানের ডাইভিং বোর্ড নেই। উন্নত মানের পুল নেই। ভাঙাচোরা পরিকাঠামোর মধ্যে অনুশীলন করেই নিজেকে প্রমাণ করেছে মৌপ্রিয়া। ক্লাবের সভাপতি অসীম দত্ত বা যুগ্ম সম্পাদক প্রদীপকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়দের দাবি, উন্নতমানের পরিকাঠামো পেলে মৌপ্রিয়ার মতো আরও অনেক প্রতিভা তুলে আনা সম্ভব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Moupriya Gold Medal diving
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE