এশীয় ট্যুরে গত পৌনে দু’বছরে টানা ছ’টা টেস্ট হারায় মাইকেল ক্লার্কের অধিনায়কত্ব নিয়ে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে প্রশ্ন উঠছে। ৪ ডিসেম্বর ব্রিসবেনে অস্ট্রেলিয়ার তরফে ক্লার্কের টস করতে নামা নিয়ে তাই খচখচানি থাকছে। কিন্তু ওই দিন প্রথম টেস্টে টস করতে ভারতীয় ড্রেসিংরুম থেকে যে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি বেরোবেন না, সেটা এ দিনই চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়া সিরিজের প্রথম টেস্ট থেকে চোটের কারণে সরে গেলেন ধোনি। তাঁর বদলি অধিনায়ক বিরাট কোহলি। যার পরপরই জল্পনা শুরু হয়ে গেল এমএসডির চোট নিয়ে। এই চোটের জন্যই ধোনি চলতি শ্রীলঙ্কা ওয়ান ডে সিরিজে নেই। প্রথমে সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচে তাঁকে বিশ্রাম দেওয়া হয়। ভারত সিরিজ জিতে যাওয়ায় শেষ দু’টো নিয়মরক্ষা ম্যাচেও স্বভাবতই আহত ধোনিকে আর রাখা হয়নি। অস্ট্রেলিয়া সফরের কথা মাথায় রেখে খদ্ধিমান সাহাকেও দু’টো ম্যাচে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে ধবন, জাদেজা, ইশান্ত শর্মাকেও। দলে এলেন রোহিত, উথাপ্পা, বিনয় ও কেদার যাদব। ইডেনে তাই উথাপ্পা বা রায়ডুকে কিপিং করতে দেখা যাবে।
কিন্তু ধোনির চোট ঠিক কোথায়? প্রথম দিকে শোনা যাচ্ছিল, হাতে। কিন্তু এ দিন বোর্ড সচিব সঞ্জয় পটেল বলেছেন, “ধোনির ডান হাতের বুড়ো আঙুলে চোট। প্রথম টেস্টে খেলবে না। প্রথম টেস্টের দলে উনিশ জনকে রাখা হয়েছে। ধোনির ব্যাকআপ তৃতীয় কিপার নমন ওঝা উনিশতম ক্রিকেটার। যে প্রথম টেস্টের পর ফিরে আসবে।” এই ঘোষণার পরেই অস্ট্রেলীয় মিডিয়া ধোনি নিয়ে সিদ্ধান্তকে ‘আশ্চর্যজনক’ বলতে শুর করে। ‘ফক্স স্পোর্টস’-এর কথায়, “মুদগল রিপোর্ট সুপ্রিম কোর্টে জমা পড়ার সময়ই ধোনির অস্ট্রেলিয়া সফরের গোড়ায় না আসার ব্যাপারটা যেমন বিরাট তেমনই আশ্চর্যের।” অস্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজে ভারতীয় দলে নতুন মুখ দু’জন। কর্নাটকের ওপেনার কেএল রাহুল এবং উত্তরপ্রদেশের লেগস্পিনার কর্ণ শর্মা। এই দুই তরুণের অন্তর্ভুক্তি যতটা প্রত্যাশিত, ততটাই অপ্রত্যাশিত ’১৫ বিশ্বকাপের মাসকয়েক আগে অস্ট্রেলিয়াতেই টেস্ট সিরিজের গোড়ার দিকে ধোনির সরে যাওয়া। বিশেষ করে যেখানে বিদেশ সফরের প্রথম টেস্ট সিরিজের গতিপ্রকৃতি নির্ধারণ করে দেয়।
সুনীল গাওস্কর অবশ্য ধোনি-ইস্যুতেও আম-মনোভাবের উল্টো দিকে। একটি নিউজ চ্যানেলে গাওস্কর এ দিন বলেছেন, “ধোনি হয়তো এই অবস্থায় ম্যাচ প্র্যাকটিস ছাড়া ব্রিসবেন টেস্ট খেলতে চাইছে না। আমার তো মনে হয়, ও অস্ট্রেলিয়া সিরিজের বাকিটা ভাল ভাবে খেলতে চায় বলেই প্রথম টেস্টে বিশ্রাম নিল।” গাওস্করের একটাই খচখচানি যে, ব্রিসবেনে প্রথম আর অ্যাডিলেডে দ্বিতীয় টেস্টের মাঝে মাত্র চার দিনের ব্যবধান। “বোর্ড কী করে নিশ্চিত হচ্ছে যে, যেখানে ধোনির পক্ষে প্রথম টেস্ট খেলা সম্ভব নয়, সেখানে তার চার দিন পরেই ও ম্যাচ ফিট হয়ে দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে পারবে!”
তবে গাওস্কর বলেছেন, “ধোনি যত দিন চায়, তত দিন ওকেই ক্যাপ্টেন রাখা উচিত। কারণ ও খুব ভাল ক্যাপ্টেন।” বরং কোহলির উপর এখনই নেতৃত্বের বোঝা চাপানোর পক্ষে নন গাওস্কর। “বিরাট প্রতিটা ম্যাচেই ভাইস ক্যাপ্টেন্সি করে। সহ-অধিনায়কও তো বোলার পরিবর্তন, ফিল্ডিং সাজানো নিয়ে ভাবে। ভবিষ্যতের ক্যাপ্টেন হিসেবে ও তৈরি হয়েই থাকছে। এখনই ব্যাটিংয়ের সঙ্গে ক্যাপ্টেন্সির বোঝা কোহলির উপর চাপানো উচিত নয়।”
অস্ট্রেলিয়া সফরের টেস্ট দল: ধোনি (অধিনায়ক), কোহলি (সহ-অধিনায়ক), ধবন, বিজয়, রাহুল, পূজারা, রাহানে, রোহিত, রায়না, ঋদ্ধিমান, অশ্বিন, কর্ণ শর্মা, জাডেজা, ভুবনেশ্বর, শামি, ইশান্ত, উমেশ, অ্যারন ও নমন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy