আইসিসির বর্ষসেরা উদীয়মান ক্রিকেটার তিনিই। চোটের জন্য অনেকদিনই মাঠের বাইরে ছিলেন। যে ক’দিন খেলেছেন সেটাই আইসিসির কাছে যথেষ্ট ছিল তাঁকেই উদীয়মান ক্রিকেটার অব দি ইয়ার হিসেবে বেছে নিতে। ২০১৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৬ সালের ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অনুষ্ঠিত ম্যাচগুলোর পারফরমেন্সের উপর নির্ভর করেই আইসিসির বর্ষসেরাদের বেছে নেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে তিনটি ওয়ানডে ম্যাচে আট উইকেট এবং ১০টি টি২০ ম্যাচে ১৯ উইকেট ছিল তাঁর ঝুলিতে। বর্ষসেরা উদীয়মান ক্রিকেটার হওয়ার সুসংবাদটা বৃহস্পতিবার নিউজিল্যান্ডের ওয়েঙ্গেরিতে বসেই পেলেন তিনি।
পেশাদার ক্রিকেট জীবন মাত্র ২০ মাসের। এই সময়েই একটার পর একটা কৃতিত্বে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন বাঁ হাতি কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান। গত বছরের এপ্রিলে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি২০ ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক অভিষেকেই নিজের জাত চিনিয়েছেন তিনি। আফ্রিদি, মহম্মদ হাফিজকে শিকারের মধ্যে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া এই ছেলে ওয়ানডে অভিষেকও প্রমাণ করেছেন। সেখানে তিন ম্যাচের সিরিজে ১৩ উইকেট নিয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন। ২০১৫ সালে ন’ওয়ানডে ম্যাচে ২৬ উইকেট নিয়ে আইসিসির বর্ষসেরা ওয়ানডে দলে জায়গা পাওয়া মুস্তাফিজুর রহমান এ বছরেও ক্রিকেট বিশ্বে আলোচনার কেন্দ্রেই ছিলেন।
আরও খবর: ওয়ান ডে দলে জায়গা পেতে ফিটনেস পরীক্ষা দিতে হবে মুস্তাফিজুরকে
ইডেন গার্ডেন্সে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এই বাঁ হাতি কাটার মাস্টারের বোলিং (৫/২২)। ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত টি২০র সেরা। মাত্র ৩ ম্যাচে ৯ উইকেট এমন বিস্ময় বোলিংয়ে টি২০ বিশ্বকাপ সেরা একাদশেও আইসিসি রেখেছে মুস্তাফিজুরকে। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ( আইপিএল) দল সানরাইজার্স হায়দারাবাদ নিলামে ১ কোটি ৪০ লাখে তাঁকে কিনে নিয়েছিল। মুস্তাফিজুরের ১৭ উইকেটেই প্রথমবার আইপিএলের ট্রফি জিতেছে সানরাইজার্স। বছরের প্রথম সাতমাস আলোচনায় থাকা এই বাঁ হাতি কাটার মাস্টার কাউন্টি ক্রিকেটের দল সাসেক্সের হয়ে খেলতে গিয়েও ছিলেন আলোচনায়। কাউন্টির অভিষেকেই চার উইকেট। এর পরই চোট তার পর অস্ত্রোপচার।
ক্রিকেটহীন পাঁচ মাস কাটিয়েও বছর শেষে বাংলাদেশকে উঠিয়ে এনেছেন অন্য উচ্চতায়। ২০১৫ সালে তার দূর্দান্ত বোলিংয়ে ভারত, দক্ষিন আফ্রিকা এবং জিম্বাবোয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতে ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে সাতে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। সেই মুস্তাফিজুরই ২০১৬ সালের শেষে আইসিসির বর্ষসেরার তালিকায় নিজের নাম তুলে দেশকে গর্বিত করেছেন। বাংলাদেশের তিনিই প্রথম ক্রিকেটার যাঁর হাতে উঠল এই পুরষ্কার। খুশি মুস্তাফিজুর বলেন, ‘‘এটাই এ বছর আমার সেরা উপহার। এই পুরস্কার আগামী বছরগুলোতে আমাকে আরও ভাল খেলতে উৎসাহ দেবে। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে সবার আগে আইসিসির কোন পুরষ্কার জিততে পারায় আমি গর্বিত। নিজের সেরাটা দিতে তৈরি আমি।’’