Advertisement
E-Paper

বিশ্বাস হচ্ছে না নতুন রানির, উইম্বলডন ট্রফি নিতে গিয়ে থমকালেন ক্রেচিকোভা!

উইম্বলডনের নতুন রানি বারবোরা ক্রেচিকোভার কাছে শনিবারটা আবেগের মধ্যে দিয়ে কাটল। ট্রফির দাবিদার জেসমিন পাওলিনিকে হারানোই শুধু নয়, তিনি কাঁদলেন প্রয়াত কোচ ইয়ানা নভোৎনাকে নিয়ে কথা বলতে গিয়েও।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৪ ২২:২৮
tennis

উইম্বলডন বিজয়ীর ট্রফি হাতে ক্রেচিকোভা। ছবি: রয়টার্স।

উইম্বলডন বিজয়ীর থালা (ভিনাস রোজ়ওয়াটার ডিশ) নেওয়ার জন্য দু’হাত বাড়িয়েছিলেন তিনি। আচমকাই একটু থমকালেন। কয়েক মুহূর্ত নিষ্পলকে তাকিয়ে রইলেন বিজয়ীর পুরস্কারের দিকে। বিশ্বাসই হচ্ছিল না এই ট্রফি জিতেছেন। ট্রফি হাতে নেওয়ার পর প্রথামতো ছবি তোলার সময়েও নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলেন না নিজের আবেগ। উইম্বলডনের নতুন রানি বারবোরা ক্রেচিকোভার কাছে শনিবারটা এমনই আবেগের মধ্যে দিয়ে কাটল। ট্রফির দাবিদার জেসমিন পাওলিনিকে হারানোই শুধু নয়, তিনি কাঁদলেন প্রয়াত কোচ ইয়ানা নভোৎনাকে নিয়ে কথা বলতে গিয়েও।

ট্রফি হাতে নিয়ে ক্রেচিকোভা বললেন, “কোনও কথা বলার অবস্থাতেই নেই। অবিশ্বাস্য লাগছে। আমার টেনিসজীবনের সেরা দিন। আমার জীবনের সেরা দিন। কী বলব বুঝতে পারছি না। দু’সপ্তাহ একটা ঘোরের মধ্যে কাটালাম।”

তবে গ্র্যান্ড স্ল্যাম ক্রেচিকোভার কাছে নতুন নয়। সাধারণত টেনিস খেলোয়াড়েরা প্রাধান্য দেন সিঙ্গলসকেই। কিন্তু ক্রেচিকোভার প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম এসেছে ডাবলসে। ২০১৮ সালে ফরাসি ওপেন এবং উইম্বলডনে ডাবলস জিতে চমকে দিয়েছিলেন। সেই শুরু। এর পর ডাবলসে আরও ছ’টি ট্রফি জিতেছেন। চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মধ্যে তিনটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম দু’বার করে জেতা হয়ে গিয়েছে। ২০২১ সালে ফরাসি ওপেন জিতেছিলেন সিঙ্গলসে। কিন্তু ডাবলস খেলা এখনও ছাড়েননি।

পূর্ব ইউরোপের ছোট দেশ চেক প্রজাতন্ত্র। সেখান থেকে এসে উইম্বলডনে চ্যাম্পিয়ন। কী ভাবে সম্ভব হল এই যাত্রা? ক্রেচিকোভা বললেন, “আমার মনে হয় দেশের কেউ ট্রফি জয়ের কথা কেউ বিশ্বাসই করবে না। আমি নিজেই বিশ্বাস করতে পারছি না। দু’সপ্তাহ আগে একটা কঠিন ম্যাচ খেলেছি। তিন ঘণ্টার কাছাকাছি লড়াই হয়েছিল। আমি চোট পেয়েছিলাম, অসুস্থ ছিলাম। মরসুমের শুরুটাই ভাল হয়নি। তার পরেও যে হাতে উইম্বলডনের ট্রফি হাতে সেন্টার কোর্টে দাঁড়িয়ে আছি এটা ভাবতেই অবিশ্বাস্য লাগছে।”

চেক প্রজাতন্ত্রের টেনিস খেলোয়াড় বলতে এত দিন মানুষ নাম জানতেন শুধু নভোৎনার। তাঁর খেলার ধরন খুব অল্প সময়ের মধ্যে গোটা বিশ্বের মন জয় করেছিল। সেই নভোৎনা ২০১৭ সালে জরায়ুর ক্যানসারে মারা যান। তাঁর আগে পর্যন্ত কোচিং করিয়েছেন ক্রেচিকোভাকে। নভোৎনা চলে যাওয়ার পর থেকেই টেনিসে সাফল্য শুরু ক্রেচিকোভার। জীবনের একমাত্র গ্র্যান্ড স্ল্যাম এই উইম্বলডনেই পেয়েছিলেন নভোৎনা। সেটা ১৯৯৮ সালে। ২৬ বছর পর গুরুদক্ষিণা দিতে পেরে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি ক্রেচিকোভা।

চেকিয়ার খেলোয়াড় বলছিলেন, “সে দিন ওঁর দরজায় কড়া নাড়ার কথা এখনও মনে আছে। ওটা আমার জীবন বদলে দিয়েছিল। সবে জুনিয়র শেষ করেছি। জানতাম না কী করব। পেশাদার টেনিস চালিয়ে যাব না কি পড়াশোনায় মন দেব? উনি আমাকে বলেছিলেন যে আমার মধ্যে প্রতিভা রয়েছে। অবশ্যই পেশাদার টেনিসে মন দেওয়া উচিত। মারা যাওয়ার আগেও বলেছিলেন আমি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিততে পারি। ২০২১ সালে প্যারিসে স্বপ্ন পূরণ করেছিলাম। তবে ১৯৯৮ সালে ইয়ানা যে ট্রফিটা জিতেছিল সেই ট্রফি আমিও এক দিন জিতব এটা কোনও দিন ভাবতে পারিনি।”

উল্লেখ্য, ২০২১ সালে ফরাসি ওপেন জেতার পরেও নভোৎনাকে নিয়ে কথা বলেছিলেন ক্রেচিকোভা। তিনি বলেছিলেন, “ইয়ানা নভোৎনা মারা যাওয়ার সময় আমাকে বলেছিল একটা গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিততে। আজ নিশ্চয়ই সে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমার অনুপ্রেরণা ছিল ও। খুব মিস করি ওকে। আশা করব ও যেখানেই আছে ভাল আছে।”

উইম্বলডন তো জেতা হয়ে গেল, এ বার কী করবেন? ক্রেচিকোভার জবাব, “জানি না। কোথাও একটা মনের ভিতরে মনে হচ্ছিল আমি জিতব। কিন্তু শেষ পয়েন্ট না পাওয়া পর্যন্ত বিশ্বাস হচ্ছিল না। আপাতত দলের সঙ্গে কথা বলব। গত দুটো মাস খুব পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে কেটেছে। আপাতত কাল বিশ্রাম নিয়ে বাকি পরে ভাবব।”

Barbora Krejcikova Wimbledon 2024 Tennis
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy