Advertisement
E-Paper

নতুন নেমার ফুল ফোটাবে

জোসে রামিজোসে রামিরেজ ব্যারেটো, ইগর স্কিভরিন, স্টিফেন আবারোয়ি-দের সঙ্গে সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে জাতীয় লিগ জয়ী দলে ছিলাম আমিও। কিন্তু তারকাদের ভিড়ে হারিয়ে যেতাম।

দীপেন্দু বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৪:২৬

প্যারিস সঁ জরমঁ ৫ : সেল্টিক ০

মঙ্গলবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সেল্টিক-প্যারিস সঁ জরমঁ ম্যাচটা দেখতে দেখতে আমার নিজের ফুটবলার জীবনের কথা মনে পড়ছিল বার বার।

জোসে রামিরেজ ব্যারেটো, ইগর স্কিভরিন, স্টিফেন আবারোয়ি-দের সঙ্গে সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে জাতীয় লিগ জয়ী দলে ছিলাম আমিও। কিন্তু তারকাদের ভিড়ে হারিয়ে যেতাম। নিজেকে চেনানোর জন্যই তাই এর পরে ক্লাব বদলে চলে গিয়েছিলাম ইস্টবেঙ্গলে। যেখানে প্রতিভাবান জুনিয়র ফুটবলার হিসেবে থাকতে হয়নি। ইস্টবেঙ্গল শিবিরে একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে উঠেছিলাম।

জানি এই ফুটবল ব্রহ্মাণ্ডে নেমারের প্যারিস সঁ জরমঁ আর আমার মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলের দূরত্ব প্রায় সাত সমুদ্রের। তবু শুরুতে নিজের প্রসঙ্গ টানলাম এ জন্যই যে নেমারের রেকর্ড অর্থে প্যারিস সঁ জরমঁ-তে যাওয়ার কারণ যতটা না উপার্জন করা, তার চেয়েও বেশি নিজেকে অন্য উচ্চতায় তুলে নিয়ে যাওয়া। মেসির ছায়া থেকে বেরিয়ে এসে নিজের রাজ্যপাট বিস্তার করা প্যারিস সঁ জরমঁ-তে।

গত তিন বছরে বার্সেলোনায় নেমার বেশ কিছু স্মরণীয় ম্যাচ খেলেছে। কিন্তু সব সময়েই নেমার, সুয়ারেজকে ছাপিয়ে প্রচারের আলো গিয়ে পড়েছে মেসির উপরেই। নিজে অল্পস্বল্প ফুটবল খেলেছি বলেই জানি নবীন ফুটবলারদের নিজেকে চেনানোর এই তাগিদটার ব্যাপারে। মঙ্গলবার সেল্টিকের বিরুদ্ধে নেমারের ঠিক সেই তাগিদটাই বেরিয়ে আসতে দেখলাম।

আরও পড়ুন: ক্লাব জার্সিতে সেই জাদুকর

ঘাড়ের কাছে ডিফেন্ডার নিঃশ্বাস ফেলছে এই অবস্থায় নিজে গোল করল, কিলিয়ান এমবাপে-কে দিয়ে যে গোলটা করালো সেটার সময় মাঝমাঠে বলটা ধরে প্রথমে ডান দিকে ভেরাত্তি-কে পাস বাড়াল। তার পরে বল ছাড়়া দ্রুত উঠে এসে ভেরাত্তির ক্রস ঠিক হেড করে নামিয়ে দিল গোলের জন্য। কাভানিকে দিয়েও গোল করিয়ে ফেলেছিল প্রায়।

গোটা মাঠ জুড়ে সেল্টিকের বিরুদ্ধে নেমারকে খেলতে দেখলাম সচল মেশিনের মতো। ঠিক যে ভাবে বার্সেলোনায় গোটা মাঠ জুড়ে খেলে লিও মেসি, ঠিক সে ভাবেই। পিএসজি-র আক্রমণ ভাগের রিমোট কন্ট্রোলটাই যেন নেমারের হাতে। সেল্টিক মাঝমাঠে মঙ্গলবার রাতে পিএসজি-র স্ট্র্যাটেজি ছিল একটাই। বিপক্ষ গোলের সামনে গিয়ে যত পারো পাস খেলো। তা হলেই নড়বড়ে হবে সেল্টিক ডিফেন্স। ফাঁকফোকর পেলেই গোলে শট নাও। পুরো ম্যাচেই পিএসজি-র এই পাসিং ফুটবলটা শুরু হচ্ছিল নেমারের পা থেকেই। কখনও পাস খেলে খেলে বিপক্ষকে বিভ্রান্ত করছে। কখনও তিন চারটে পাস খেলতে খেলতেই গতি বাড়িয়ে উইংয়ে চলে যাচ্ছে। কখনও বা ঢুকে আসছে ‘ডাউন দ্য মিডল’। যা চোখের সুখ বাড়ায়।

ফুটবল কখনও-ই একজনের খেলা নয়। নেমারও তাঁর নতুন টিমে পেয়ে গিয়েছে কিলিয়ান এমবাপে এবং উরুগুয়ের এডিনসন কাভানির মতো দুই ফুটবলারকে। এখানেও সেই বার্সেলোনা প্রসঙ্গ উঠে আসছে। বার্সায় যেমন মেসি-নেমার-সুয়ারেজকে নিয়ে এমএনএস ত্রিফলা ডিফেন্ডারদের ঘুম কেড়েছিল, পিএসজি-তেও সে রকমই এমবাপে-নেমার-কাভানিকে নিয়ে এমএনসি ত্রিফলা অনেক তাবড় তাবড় ডিফেন্ডারের রাতের ঘুম কেড়ে নেবে বলেই আমার মঙ্গলবার রাতের ম্যাচ দেখে মনে হল।

ম্যাচেও পিএসজি-র পাঁচ গোলের মধ্যে তিন গোল হতেই স্কোরবোর্ডে নাম উঠে গিয়েছিল এই ত্রয়ী স্ট্রাইকারের। মাঠের মধ্যে যাদের নেতা সেই নেমার। ছ’মাস আগেও ক্যাম্প ন্যু-তে যা হতে দেখেছি মেসিকে ঘিরে। এ বার সেটাই হচ্ছে পিএসজি-তে। তবে মাঠের মধ্যে মেসির উচ্চতায় যেতে গেলে নেমারকে কিন্তু আরও খেলোয়াড়োচিত হতে হবে। সেল্টিকের বিরুদ্ধে ম্যাচ শেষ হওয়ার পর র‌্যালস্টনের বিরুদ্ধে হাত না মিলিয়ে যে আচরণ করতে দেখলাম নেমারকে তা কিন্তু লিও মেসি করে না।

Neymar Jr. PSG চ্যাম্পিয়ন্স লিগ Champions League Football
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy