Advertisement
E-Paper

বিপক্ষের রক্ষণাত্মক রণকৌশল ভাবাচ্ছে আমনাদের

ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে ঢুকেই পেয়েছিলেন, ময়দানে তাঁর অভিন্নহৃদয় বন্ধু সুকল্যাণ ঘোষ দস্তিদারের প্রয়াণের খবরটা। ভারাক্রান্ত মেজাজে তাই আমনা-কিংশুকদের নিয়ে মহমেডান ম্যাচের মহড়া দিচ্ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সুভাষ ভৌমিক।

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:৩২
মহড়া: অনুশীলনে সতীর্থদের নির্দেশ আকোস্তার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

মহড়া: অনুশীলনে সতীর্থদের নির্দেশ আকোস্তার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে ঢুকেই পেয়েছিলেন, ময়দানে তাঁর অভিন্নহৃদয় বন্ধু সুকল্যাণ ঘোষ দস্তিদারের প্রয়াণের খবরটা। ভারাক্রান্ত মেজাজে তাই আমনা-কিংশুকদের নিয়ে মহমেডান ম্যাচের মহড়া দিচ্ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সুভাষ ভৌমিক। অনুশীলন সেরেই প্রয়াত বন্ধুর বাড়ি যাওয়ার পথে লাল-হলুদ শিবিরের ‘মিজো ব্রিগেড’ (ব্রেন্ডন, ডানমাউইয়া, চুলোভা)-কে দেখে হঠাৎ চেনা মেজাজে সুভাষ। গাড়ির ভিতর হাত ঢুকিয়ে ধরলেন ডানমাউইয়ার চুলের মুঠি। লাল-হলুদের ১৭ নম্বর জার্সিধারী ফুটবলারের মাথা দু’বার ঝাঁকিয়ে বলে গেলেন, ‘‘মনে থাকবে তো কাল জেতার কথা...।’’ বলেই হনহনিয়ে হাঁটা দিলেন গাড়ির দিকে।

চব্বিশ ঘণ্টা পরেই কলকাতা প্রিমিয়ার লিগে ইস্টবেঙ্গলের মুখোমুখি মহমেডান। গত দু’-তিন দশকে বড় দলের জৌলুস অনেকটাই ফিকে মহমেডানের। এ বারের কলকাতা লিগেও এই মুহূর্তে প্রসেনজিৎ পাল, বাজি আর্মান্দরা সাত ম্যাচের পরে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে রয়েছে ছয় নম্বরে। কিন্তু তা সত্ত্বেও মহমেডানকে হাল্কা ভাবে নেওয়ার প্রশ্ন নেই ইস্টবেঙ্গলে। কোচ বাস্তব রায় বলেই দিলেন, ‘‘যে অবস্থাই হোক, মহমেডান বড় দল। বেশ কিছু তরুণ প্রতিভা রয়েছে ওদের দলে। তারা আমাদের বিরুদ্ধে জ্বলে উঠে নিজেদের প্রমাণ করতে চাইবে। মঙ্গলবারই হয়তো ওরা মরসুমের সেরা ম্যাচটা খেলতে পারে। ম্যাচটা যে ভাবেই হোক জিততে হবে।’’

নয় ম্যাচের পরে লিগে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইস্টবেঙ্গলের পয়েন্ট ২০। এ দিন টালিগঞ্জকে হারিয়ে সমসংখ্যক ম্যাচের পরে পিয়ারলেসের পয়েন্ট ১৯। রহিম নবিরা নিঃশ্বাস ফেলছেন ইস্টবেঙ্গলের ঘাড়ে। এই জায়গা থেকে পয়েন্ট নষ্ট করা মানেই লিগের সাপলুডোয় আরও নিচে নামার হাতছানি। যা কাম্য নয় লাল-হলুদ জার্সিধারীদের কাছে।

মরসুমের শুরুতে যে ইস্টবেঙ্গল টানা ন’বার লিগ জয়ের জন্য তরতরিয়ে এগোচ্ছিল, সেই দলই হঠাৎ ধাক্কা খেয়েছে পর পর দুই ম্যাচে পাঁচ পয়েন্ট হারিয়ে। প্রথমে মোহনবাগানের সঙ্গে ড্র, তার পরে পিয়ারলেসের কাছে হার। কোস্টা রিকার বিশ্বকাপার ডিফেন্ডার জনি আকোস্তা মাঠে নামার পরেও দুই ম্যাচে চার গোল হজম। ফলে লিগের দৌড়ে কিছুটা সুবিধাজনক জায়গায় প্রতিবেশী চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব মোহনবাগান।

যদিও ইস্টবেঙ্গল কোচ আত্মবিশ্বাসী সুরে বলছেন, ‘‘কে বলল, লিগের ফয়সালা হয়ে গিয়েছে? আমরা শেষ দিন পর্যন্ত টানা ন’বার লিগ জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। এখনও সুযোগ রয়েছে। আমাদের সব ম্যাচ জিততে হবে। তার পরে দেখা যাবে কী হয়! ড্রেসিংরুমে এটাই বললাম ছেলেদের।’’

তবে শেষ দুই ম্যাচে চার গোল খাওয়ায় দলের মনোবলে যে কিছুটা হলেও চিঁড় ধরেছে তা মানছেন বাস্তব। বলছেন, ‘‘আত্মবিশ্বাস আর মনোবলটা কিছুটা কমেছে বলেই তো এই ম্যাচটা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’

শেষ দুই ম্যাচেই দেখা গিয়েছে, ইস্টবেঙ্গল রক্ষণে দুই স্টপার ও সাইড ব্যাকের মধ্যে দূরত্ব মাঝেমাঝেই বেড়ে যাচ্ছে। সাইডব্যাকরা ওভারল্যাপে গিয়ে নামতে সময় নিচ্ছেন। সেই জায়গা ভরাট করতে যাচ্ছেন না উইং হাফরা। এ দিন সকালে ইস্টবেঙ্গল মাঠে এই ভুলত্রুটি সারানোর অনুশীলনই করালেন সুভাষ ভৌমিক। অনুশীলন থেকে আভাস মিলছে, লেফ্ট ব্যাকে চুলোভার জায়গায় আসছেন ফানাই। স্টপারে আকোস্তার সঙ্গে কিংশুক দেবনাথ ও মেহতাব সিংহের মধ্যে যে কোনও একজন। রাইটব্যাক সামাদ। দুই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের মধ্যে কাশিম আইদারা খেলবেন। সঙ্গে প্রকাশ সরকার ও সঞ্চয়ন সমাদ্দারের মধ্যে একজন। সেটা কে তা ঠিক হবে মঙ্গলবার সকালে। তবে লাল-হলুদ শিবিরের পক্ষে সুখবর, চোখের সংক্রমণ সারিয়ে খেলবেন মহম্মদ আল আমনা। মাঝমাঠে তাঁর সঙ্গে দুই প্রান্ত ধরে আক্রমণ গড়বেন সুরাবুদ্দিন মল্লিক ও ডানমাউইয়া। ফরোয়ার্ডে জবি জাস্টিন।

ইস্টবেঙ্গল শিবির চিন্তিত মহমেডান টিডি রঘু নন্দীর অতি-রক্ষণাত্মক রণকৌশল নিয়ে। অতীতে বহু বার ছোট দলের কোচ হিসেবে লিগের ম্যাচে মাঝ মাঠে লোক বাড়িয়ে বড় দলের পয়েন্ট কেড়েছেন রঘু। মঙ্গলবারও টিডি হিসেবে তাঁর জীবনের প্রথম বড় ম্যাচে সেই রণকৌশলেই যদি পয়েন্ট কেড়ে নেন ইস্টবেঙ্গলের কাছ থেকে? উত্তরে আমনা বলছেন, ‘‘বিপক্ষ কী করবে তা নিয়ে না ভেবে আমাদের ম্যাচটা জিততে হবে। এই জায়গা থেকেও লিগটা জেতা সম্ভব।’’

মঙ্গলবার কলকাতা প্রিমিয়ার লিগ: ইস্টবেঙ্গল বনাম মহমেডান (যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন, ৪-৩০)। সরাসরি

সাধনা নিউজে।

মোহনবাগানে বিভ্রান্তি: এক দিকে নতুন স্পনসরকে পাশে পেয়ে এ মরসুমের দলগঠন করে ফেলল ইস্টবেঙ্গল। অন্য দিকে, কবে সই হবে সে বিষয়ে কোনও ধারণাই নেই মোহনবাগানে চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের। মোহনবাগানের ক্রিকেট সচিব থাকা সত্ত্বেও এ মরসুমে দলগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয় অঞ্জন মিত্র অনুগামী কর্তা শৈলেন্দ্রনাথ ঘোষকে। যা আরও বিভ্রান্ত করে তুলেছে ক্রিকেটারদের।

পেসার সৌরভ মণ্ডল, ওপেনার বিবেক সিংহদের এখনও জানানোই হয়নি কবে সই করতে হবে। ১৫ সেপ্টেম্বর দল বদলের শেষ দিন। মোহনবাগানে দলগঠনের সমস্যা এতটাই বেড়েছে যে, ময়দানের অনেকেই ঠাট্টা করে বলছেন, এ বার দু’টি দল নামাবে মোহনবাগান। ‘এ’ ও ‘বি’ দল। ক্রিকেট সচিব সম্রাট ভৌমিক যাঁদের সঙ্গে ক্লাবের চুক্তি করে রেখেছেন, তাঁদের অনেকেই শৈলেনবাবুর দলের তালিকায় ছিলেন না। ছিল না বাংলার অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারির নামও। এ ছাড়াও রাখা হয়েছিল কালীঘাটে সই করা ক্রিকেটার হীরক সেনগুপ্তকে। দলগঠনের দায়িত্বে থাকা শৈলেনের পুত্র অর্ঘ্য ঘোষ এ দিন বলেন, ‘‘ক্লাবের সচিব আমাদের দলগঠনের দায়িত্ব দিয়েছেন। সেই চিঠি আমাদের কাছে রয়েছে। সুতরাং এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে, আমরাই মোহনবাগানের দলগঠনের

দায়িত্বে রয়েছি।’’

Football East Bengal CFL Calcutta Football League
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy