Advertisement
E-Paper

সুখী নাইট সংসারে এখন ‘বিগ ম্যানের’ ভাংড়া থেকে গল্ফে মর্কেলের মস্তানি

আন্দ্রে রাসেল যে ডিজে ব্র্যাভোর চ্যাম্পিয়ন গানটার সঙ্গে মারাত্মক নাচেন, সবাই জানে। দেখেছে। ক্যারিবিয়ান সংস্কৃতি মেনে কেকেআরের জামাইকানের গান-বাজনার প্রতি টান বহু দিনের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৬ ০৩:৪৬
ক্রিকেট থেকে ছুটি পেয়ে গল্ফে। বৃহস্পতিবার আরসিজিসি-তে ইউসুফ পাঠান ও নারিন। ছবি : উৎপল সরকার

ক্রিকেট থেকে ছুটি পেয়ে গল্ফে। বৃহস্পতিবার আরসিজিসি-তে ইউসুফ পাঠান ও নারিন। ছবি : উৎপল সরকার

আন্দ্রে রাসেল যে ডিজে ব্র্যাভোর চ্যাম্পিয়ন গানটার সঙ্গে মারাত্মক নাচেন, সবাই জানে। দেখেছে। ক্যারিবিয়ান সংস্কৃতি মেনে কেকেআরের জামাইকানের গান-বাজনার প্রতি টান বহু দিনের। সোলো গেয়েছেন। অ্যালবামও বেরিয়েছে। রঙিন ক্রিকেট-ব্যক্তিত্ব বলতে যা বোঝায়, মাসল-রাসেল ঠিক তাই।

কিন্তু তাই বলে দালের মেহেন্দি? ভাংড়ার সঙ্গে তুখোড় নাচ?

বিস্মিত হয়ে লাভ নেই। আন্দ্রে রাসেল সেটাও পারেন। খুব ভাল পারেন!

বুধবার ইডেনে কিংগস ইলেভেন পঞ্জাবকে একা হাতে শেষ করে তাই তো করলেন কেকেআর অলরাউন্ডার! ভাঙড়া নাচলেন। দালের মেহেন্দির বিখ্যাত ‘তুনাক তুনাক তুন’ গানের সঙ্গে!

ঘরের মাঠে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় পর্বে নেমে মহানাটকীয় জয় তুলে নেওয়া, সংসারে প্রথম বার টিম মালিকের উপস্থিতি, কেকেআর-পার্টির মেজাজ যে অন্যান্য দিনের চেয়ে একটু অন্য রকম হবে, আন্দাজ করা গিয়েছিল। তা মিলেও গেল। পঞ্জাব-বধ করে পঞ্জাবি নাচ দিয়েই জয়ের উৎসবে নেমে পড়ল কেকেআর। ইউসুফ পাঠান, মণীশ পাণ্ডে, সুনীল নারিন থেকে কার্ল ক্রো পর্যন্ত! কেউ হোটেল লবিতে, কেউ রুমে ঢোকার আগে। কিন্তু আন্দ্রে রাসেল? নাহ্, তাঁর সমতুল্য নাকি কাউকে আর পাওয়া যায়নি।

কখনও টুপি পরে। কখনও খুলে। কখনও নিখাদ ভারতীয় স্টাইলে। কখনও তাতে ক্যারিবিয়ান আদল মিশিয়ে। কখনও হোটেল লবিতে। কখনও ডান্স ফ্লোরে। পঞ্জাব বধের পর ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার প্রতি মুহূর্তে নাকি বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, শুধু ক্রিকেট নয়। ক্রিকেটের বাইরেও তিনি সুপারম্যান।

ব়ৃহস্পতিবার সকালে রয়্যাল ক্যালকাটা গল্ফ ক্লাবে গল্ফ খেলতে-খেলতে কেকেআর সিইও বেঙ্কি মাইসোর বলছিলেন যে, রাসেলকে সবাই সুপারম্যান নামে ডাকাডাকি করছে। কিন্তু ক্যারিবিয়ানের মতো অত সহজ-সরল লোক নাকি খুব কম আছে। ‘‘আমার কাছে ও সিম্পল ম্যান। তবে হ্যাঁ, নাম আমিও দিয়েছি। কখনও ডাকি বিগ ম্যান। কখনও চ্যাম্পিয়ন। আসলে কিছু করুক না করুক, আন্দ্রের মাঠে থাকাটাই একটা বড় ব্যাপার। ওটাই বিপক্ষকে বার্তা ছেড়ে রাখে। আমরাও আশ্বস্ত হয়ে ভাবতে পারি যে, ঠিক আছে। আন্দ্রে এখনও আছে।’’

শোনা গেল, কেকেআরের তরফ থেকে গেমচেঞ্জারের পুরস্কারও তুলে নিয়ে গিয়েছেন রাসেল। এটা কেকেআর সংস্কৃতির একটা অঙ্গ যে, প্রথাগত ম্যান অব দ্য ম্যাচের বাইরে গিয়ে টিমের পক্ষ থেকেও গেমচেঞ্জারকে একটা পুরস্কার দেওয়া। ম্যাচের সেরাকেই যে সেটা দিতে হবে, তার কোনও মানে নেই। কেউ একটা ভাল ক্যাচ ধরলে, একটা ভাল রান আউট করলেও টিমের পক্ষ থেকে ওটা পেতে পারেন। কিন্তু বুধবার রাতে রাসেলের বাইরে সেই পুরস্কারের আর কোনও দাবিদারই পাওয়া যায়নি।

গল্ফে নারিন।

সম্ভবও ছিল না। সুনীল নারিন চোট পেয়ে পঞ্জাব ম্যাচে খেলতে পারেননি। বেঙ্গালুরুতে আরসিবি ম্যাচের আগে ওয়ার্ম আপের সময় স্পিনিং ফিঙ্গারে লাগে নারিনের। সে দিন খেলে দিলেও কলকাতায় নামতে পারেননি কেকেআরের স্পিন-মায়েস্ত্রো। কেকেআরের হেড কোচ জাক কালিস বলছিলেন, ‘‘আশা করছি রবিবার ওকে পেয়ে যাব।’’ কিন্তু তিনি না পারলেও অসুবিধে হবে কি? গত তিন-চার ম্যাচ ধরে রাসেল যে বোলিংটা শুরু করেছেন, দেখে তো পুরনো সেই নারিন লাগছে!

কালিস বলে গেলেন, রাসেলের ওই শেষ ওভার টিমের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে দিল। ‘‘গত কয়েক বছর ধরেই ও দুর্ধর্ষ খেলছে। ডেথে যে আন্দ্রে কতটা বিধ্বংসী হতে পারে, তার উদাহরণ এই প্রথম নয়। আগেও আমরা দেখেছি,’’ বলছিলেন কিংবদন্তি অলরাউন্ডার। এবং বৃহস্পতিবার গোটা দিনের নাইট-মনোভাব দেখলে মনে হবে, সত্যিই রাসেল-প্রভাব পড়েছে টিমে।

এ দিন ‘নাইট গল্ফ’ আয়োজন করা হয়েছিল আরসিজিসিতে। যা আদতে চ্যারিটি উদ্যোগ। যেখানে শুধু কালিস নন, বিকেলের দিকে নারিন থেকে শুরু করে ইউসুফ পাঠান— অনেককেই দেখা গেল। কেকেআরে উইকেটকিপিং কোচ হিসেবে যোগ দেওয়া মার্ক বাউচার, তিনিও ছিলেন। রাসেলকে দেখা যায়নি। কিন্তু গোটা টিমের মননে যেন তাঁর অদৃশ্য দানবীয় মনোভাব বিচরণ করল। মর্নি মর্কেল যেমন। বিকেলে খেলা শেষ। অথচ দুপুর থেকে কেকেআর কর্তাদের বলতে শুরু করলেন, বন্ধুরা পুরস্কার-টুরস্কার সব তৈরি রাখো। আমি কিন্তু সব বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি!

শুধু একটাই যা খচখচানি। গত বারও এতটাই দুর্দান্ত দেখাচ্ছিল কেকেআরকে। কিন্তু শেষ ল্যাপে পৌঁছে আর হয়নি। কালিস সেটা নিয়ে টিমকে আগাম সতর্কও করছেন। এ দিন বললেন, ‘‘আমরা টেবল শীর্ষে, খুব ভাল জায়গায় আছি। নেগেটিভটা হল, গত বারও আমরা এ রকমই এগোচ্ছিলাম। কিন্তু পরের দিকে রিল্যাক্সড হয়ে যাই।’’ কালিস যা হিসেব দিলেন তাতে আর দু’টো। আর দু’টো ম্যাচ জিতলে কেকেআরের প্লে অফ চলে যাওয়া নিশ্চিত। সব মিলিয়ে আটটা জিতলেই চলবে। দুপুরে কেকেআরের কেউ কেউ বললেন, ম্যাজিক ফিগারটা ন’টা হবে। লিগ টেবলের যা অবস্থা, আটটা জয়ে প্লে অফ নিশ্চিত বলা যাবে না।

মানে শেষ পাঁচটার মধ্যে তিনটে জয়, ব্যস।

Yusuf Pathan Golf Sunil Narine IPL 2016
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy