Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

সুনীলের ফোনের আগেই তৈরি প্রীতম

প্রীতমের পজিশনে খেলা রাহুল বেকে-কেও ডেকেছেন ভারতের নতুন বিশ্বকাপার কোচ। রাহুল এ বার আইএসএলে প্রীতমের মতোই ভাল খেলেছেন। সেটা কি চাপে রেখেছে এটিকের ফুটবলারকে?

 প্রতিজ্ঞ: গত পাঁচ বছর ভারতীয় দলে অপরিহার্য  রাইট ব্যাক হয়ে উঠেছেন প্রীতম (ডান দিকে)। ফাইল চিত্র

প্রতিজ্ঞ: গত পাঁচ বছর ভারতীয় দলে অপরিহার্য রাইট ব্যাক হয়ে উঠেছেন প্রীতম (ডান দিকে)। ফাইল চিত্র

রতন চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৯ ০৪:০৯
Share: Save:

স্টিভন কনস্ট্যান্টাইনের জমানায় গত পাঁচ বছর তিনি ছিলেন জাতীয় দলের অপরিহার্য রাইট ব্যাক। সাফ কাপ বা এএফসি এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ, রক্ষণের অন্যতম স্তম্ভ হিসাবে তাঁকে দেখা গিয়েছে সুনীল ছেত্রীদের দলে।

ইগর স্তিমাচের নতুন দলে প্রথম একাদশে তিনি থাকবেন কি না, তা জানেন না প্রীতম কোটাল। কিংস কাপের শিবিরে ক্রোয়েশিয়ার নতুন কোচের তালিকায় নিজের নাম দেখার পর উত্তরপাড়ার ফুটবলার বলে দিলেন, ‘‘স্টিভন স্যার এক রকম ফর্মেশনে খেলাতেন। নতুন কোচ কী ভাবে খেলাবেন জানি না। কিন্তু আমাকে প্রথম একাদশের জায়গাটা ধরে রাখতে হবে। এটাই আমার কাছে চ্যালেঞ্জ। নিজেকে তৈরি রাখছি। প্রথম দলে ঢুকতে হলে লড়তে হয়। সেটা মাথায় রাখছি।’’

প্রীতমের পজিশনে খেলা রাহুল বেকে-কেও ডেকেছেন ভারতের নতুন বিশ্বকাপার কোচ। রাহুল এ বার আইএসএলে প্রীতমের মতোই ভাল খেলেছেন। সেটা কি চাপে রেখেছে এটিকের ফুটবলারকে? প্রীতম মানতে চান না। ‘‘এর আগেও এ রকম চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি বহুবার হয়েছি। যারা শিবিরে ডাক পায়, তারা যোগ্যতার জন্যই পায়। এর আগে রিনো অ্যান্টো বা নিশুকুমারও ছিল দলে। ওদের সঙ্গে লড়াই করেই দলে নিজের জায়গাটা ধরে রেখেছি।’’

দিল্লি ডায়ানামোজ থেকে গত বছর মরসুমের মাঝপথে এটিকেতে সই করেছেন প্রীতম। পরের মরসুমেও খেলবেন কলকাতার জার্সি পরে। হোসে মোলিনার কোচিংয়ে যে দলকে দ্বিতীয়বার ট্রফি দিয়েছিলেন প্রীতম।

মোহনবাগানে চার বছর খেলেছেন। তেরো বছর পর সঞ্জয় সেনের দলের আই লিগ জেতার অন্যতম কারিগর ছিলেন তিনি। কলকাতার দুই প্রধান এ বারও আইএসএলে না খেলায় আফসোস আছে তাঁর। ‘‘যদি ইস্টবেঙ্গল বা মোহনবাগান খেলত তা হলে প্রস্তাব দিলে আমি খেলতাম। তবে আইএসএলের ক্লাবগুলোর মতো ফুটবলারদের সুযোগ-সুবিধা পেলেই। সেরা সময়ে যদি খেলে টাকা রোজগার না করি, তা হলে পরে কী করব। ভবিষ্যতের কথাও তো ভাবতে হবে।’’ ছোটবেলার ক্লাব নেতাজি ব্রিগেড থেকে অনুশীলন করে বাড়ি ফিরে বললেন প্রীতম।

দেশের হয়ে টানা নিজের জায়গাটা ধরে রাখার পিছনে রসায়ন কী? দেশের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার মনে করেন আইএসএলে খেলার অভিজ্ঞতা। ‘‘আইএসএলে ভাল বিদেশি কোচ ও ফুটবলারদের সঙ্গে না খেললে যে উন্নতিটা করেছি সেটা হত না। এখন দেশের জার্সিতে জাপান বা কাতারের বিরুদ্ধে নামার সময় ভয় পাই না। কারণ আইএসএলে তো বিশ্বকাপার ফুটবলার বা কোচেদের প্রশিক্ষণে খেলেছি।’’ অকপট স্বীকারোক্তি দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা ফুটবলারের।

বাংলার ফুটবলার হলেও কলকাতার কোনও ক্লাব থেকে উঠে আসেননি প্রীতম। তাঁকে সবাই চিনেছেন পৈলান অ্যারোজের হয়ে খেলার সময়। গোয়ায় ফেডারেশনের এলিট অ্যাকাডেমিতে আর্থার পাপাস এবং কলিন টোলের কাছে তাঁর বেড়ে ওঠা। দেশের বয়সভিত্তিক জুনিয়র দলে খেলেছেন নিয়মিত। তার পর সেখান থেকে পৈলান অ্যারোজের জার্সিতে নামেন আই লিগে। তারপর প্রীতম সই করেন মোহনবাগানে। আইএসএল শুরু হওয়ার পর নাম লেখান পুণেতে। সেখানে দু’বছর কাটিয়ে এটিকে, দিল্লিতে খেলে আবার ফিরেছেন কলকাতার দলে।

আপাতত এটিকে নিয়ে ভাবছেন না তিনি। বলছিলেন, ‘‘সুনীলভাই (ছেত্রী) ফোন করেছিল। নিজেকে ফিট রাখতে বলেছে। আমি তো সুপার কাপ শেষ হওয়ার পর দিন দশেক বিশ্রাম নেওয়ার পরই অনুশীলন শুরু করেছি। কিংস কাপের প্রথম ম্যাচ যাদের সঙ্গে খেলতে হবে তাদের সঙ্গে কোনওদিন খেলিনি। এই দলের প্রথম একাদশে ঢুকতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE