Advertisement
E-Paper

কবাডি খেলেই কোটিপতি সিদ্ধার্থেরা

প্রথম জন পুণেরি পল্টনের নীতিন তোমার। উত্তরপ্রদেশের ছেলে এক মরসুম খেলেও গিয়েছেন প্রো-কবাডি লিগে কলকাতার দল বেঙ্গল ওয়ারিয়র্সের হয়ে। অপর জন সিদ্ধার্থ দেশাই।

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:৪৪
আকর্ষণ: কৃষক পরিবারের ছেলে সিদ্ধার্থও এখন তারকা। ফাইল চিত্র

আকর্ষণ: কৃষক পরিবারের ছেলে সিদ্ধার্থও এখন তারকা। ফাইল চিত্র

পরিবারের আর্থিক অনটন প্রবল ছিল এক সময়ে। কী ভাবে সংসার চালাবেন সেটা এক সময়ে চিন্তা ছিল ওদের কাছে। কিন্তু প্রো-কবাডি লিগ পাল্টে দিয়েছে ওঁদের দু’জনের পরিবারের জীবনযাত্রাই। সংসারে সচ্ছলতা, বৈভব বেড়ে গিয়েছে কবাডি খেলেই।

প্রথম জন পুণেরি পল্টনের নীতিন তোমার। উত্তরপ্রদেশের ছেলে এক মরসুম খেলেও গিয়েছেন প্রো-কবাডি লিগে কলকাতার দল বেঙ্গল ওয়ারিয়র্সের হয়ে। অপর জন সিদ্ধার্থ দেশাই। লিগে তাঁর অভিষেক গত বছর হয়েছিল মুম্বইয়ের দল ইউ মুম্বার হয়ে। এ বার জার্সি বদলে চলে গিয়েছেন হায়দরাবাদের দল তেলুগু টাইটান্সে।

দু’জনেই আক্রমণ ভাগের খেলোয়াড়। কবাডির পরিভাষায় ‘রেইডার’। প্রো-কবাডি লিগে দু’জনেই এ বার কোটিপতিও হয়েছেন। তবে সিদ্ধার্থ এ বারের লিগে সবচেয়ে বেশি উপার্জনকারী খেলোয়াড়। নিলামে তেলুগু টাইটান্স তাঁকে কিনেছে ১ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা দিয়ে। আর তার পরেই রয়েছেন নীতিন। গত মরসুমে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের জন্য এ বার তাঁর দাম বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা।

কবাডি খেলে কোটিপতি খেলোয়াড় হওয়ার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে নীতিন বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশের গ্রামে আমাদের ছোট্ট দোকান এক সময়ে ঠিকমতো চলত না। এ বার নিলামের দিন বাড়িতে ফোন করে কোটিপতি হয়েছি বলতেই বাবা কেঁদে ফেলেন আনন্দে।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘বাবা জিতেন্দ্র তোমার কুস্তির পালোয়ান ছিলেন। কিন্তু সে ভাবে সফল হতে পারেননি। চাইতেন আমি যেন বড় কুস্তিগির হয়ে নাম করি। কিন্তু আমি নিজের ইচ্ছাতেই কবাডিতে এসেছি। নিজের লক্ষ্যে সফলও হয়েছি। ভাবিনি কবাডি খেলেই একদিন বিএমডব্লিউ গাড়ির মালিক হব বা ভারতের বড় শহরের সাত তারা হোটেলে পরিবার নিয়ে ছুটি কাটাতে পারব। ’’

এ বারের লিগের আর এক কোটিপতি সিদ্ধার্থ বলেন, ‘‘বাবা সিরিশ দেশাই কোলাপুরে চাষ করতেন। এ বার নিলামের দিনে আমি মুম্বইয়ে ছিলাম বন্ধুদের বাড়িতে। নিলামে আমার দর যখন প্রায় দেড় কোটির কাছাকাছি গিয়ে থামল, তখন গ্রামে ঢাক-ঢোল বাজিয়ে উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছে।’’ যোগ করেন, ‘‘প্রো-কবাডি লিগ আমার পরিবারের জীবনযাত্রাই আজ পাল্টে দিয়েছে। মাঝে মাঝে মনে হয়, স্বপ্ন দেখছি না তো!’’

সিদ্ধার্থ গত বছরই হায়দরাবাদে জাতীয় প্রতিযোগিতার পরে প্রো-কবাডির নতুন খেলোয়াড় বাছাই শিবিরে ডাক পেয়েছিলেন। সেখান থেকে ইউ মুম্বায় সুযোগ পান অভিনেতা জন আব্রাহামের এই ভক্ত। প্রথম ম্যাচেই ‘সুপার টেন’-সহ ১৫ রেইড পয়েন্ট’ সংগ্রহ করে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন ছয় ফুট দুই ইঞ্চি উচ্চতার এই খেলোয়াড়। তার পরে চার ম্যাচে ৫০ ‘রেইড পয়েন্ট’ সংগ্রহ করে নজির গড়েন। গতি, ক্ষিপ্রতা, শক্তির জন্যই তাঁর কদর কবাডি লিগে। যে প্রসঙ্গে সিদ্ধার্থ বলেন, ‘‘পুণেতে পাঁচ বছর খেলা শিখেছি। দিনে পাঁচ ঘণ্টা অনুশীলন করি। এখন তার সুফল পাচ্ছি। কোটিপতি হওয়ার পরে নতুন এসইউভি গাড়ি কিনলাম। বিয়ে করেছি। কোলাপুর শহরে বাড়ি কিনে পরিবার নিয়ে উঠে আসব এই শীতেই।’’

নীতিন তিন বছর আগে ভারতের হয়ে কবাডি বিশ্বকাপ জয় করেছিলেন। প্রো-কবাডি লিগে তাঁর বিশেষত্ব আক্রমণের সময়ে চকিতে গতি বাড়িয়ে ক্ষিপ্রতার সঙ্গে বিপক্ষকে স্পর্শ করে পয়েন্ট তুলে আনা। গত বছর ১১ ম্যাচে ১০২ পয়েন্ট তুলেছিলেন। এ বারেও ছন্দে খেলছেন পুণেরি পল্টনের হয়ে। তাঁর কথায়, ‘‘আমার পরিবারের দারিদ্র্যের কালো মেঘ সরিয়ে দিয়েছে প্রো-কবাডি। এক সময় বর্ষায় খুব সমস্যা হত গ্রামের বাড়িতে। কবাডি খেলার সৌজন্যেই সেই বাড়ি ছেড়ে গোরক্ষপুরে বিলাসবহুল বাংলোতে উঠে এসেছি।’’

Pro Kabaddi League Siddharth Desai PKL Nitin tomar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy