পিএসজি ৫ : আন্ডারলেখ্ট ০
অপ্রতিরোধ্য প্যারিস সঁ জারমাঁ (পিএসজি)। দুরন্ত হ্যাটট্রিক করে নায়ক লেভিন কুরজাওয়া।
অ্যান্ডারলেখ্ট-কে পাঁচ গোলে চূর্ণ করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোয় পৌঁছে হ্যালোইন উৎসবে মাতলেন নেমার দ্য সিলভা স্যান্টোস (জুনিয়র), দানি আলভেস-রা।
মঙ্গলবার রাতে ঘরের মাঠে অ্যান্ডারলেখ্টের বিরুদ্ধে ম্যাচের ৩০ মিনিটে পিএসজি-কে এগিয়ে দেন মার্কো ভেরাত্তি। প্রথমার্ধের একেবারে শেষ মুহূর্তে গোল করেন নেমার। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই অন্য ছবি। পিএসজি-র আক্রমণাত্মক ফুটবলের সামনে ভেঙে পড়ে অ্যান্ডারলেখ্টের যাবতীয় প্রতিরোধ। কিন্তু এদিনসন কাভানি, কিলিয়ান এমবাপে, নেমার-দের ছাপিয়ে নাটকীয় উত্থান ডিফেন্ডার কুরজাওয়া-র। ৫২ মিনিটে প্রথম গোল করেন তিনি। হ্যাটট্রিক সম্পূর্ণ করেন ৭৮ মিনিটে। মাত্র ২৬ মিনিটে তিন গোল! চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে তিনিই প্রথম ডিফেন্ডার হিসেবে হ্যাটট্রিকের কীর্তি গড়লেন। ম্যাচের পর উচ্ছ্বসিত কুরজাওয়া বলেছেন, ‘‘সতীর্থদের ধন্যবাদ। ওদের জন্যই হ্যাটট্রিক করতে পেরেছি। এই গোল আমার আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করবে।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘৫-০ স্কোরলাইন প্রমাণ করছে, আমরা কতটা ভাল খেলেছি।’’
পিএসজি ম্যানেজার উনাই এমরে-র কাছে পাঁচ গোলে জয়ের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোয় যোগ্যতা অর্জন করা। ম্যাচের পর সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেছেন, ‘‘সব চেয়ে আনন্দের হল, শেষ ষোলোয় যোগ্যতা অর্জন করতে পেরেছি। প্রথম থেকেই আমাদের লক্ষ্য ছিল, শীর্ষে থেকে গ্রুপের খেলা শেষ করা। আমরা সেই লক্ষ্যের দিকেই এগিয়ে চলেছি।’’
অ্যান্ডারলেখ্টের বিরুদ্ধে পাঁচ গোলে দুরন্ত জয়ের পর পিএসজি ম্যানেজার একেবারেই বাড়তি উচ্ছ্বাস দেখাননি। ব্যতিক্রম নেমার-রা। চুলে সবুজ রং। মুখে সাদা রং। হাতে তাস। ডানদিকের কোমরে পিস্তল। হলিউডের জনপ্রিয় সিনেমা ‘সুইসাইড স্কোয়্যাড’-এর চরিত্র জোকারের সাজে নেমারে সঙ্গী দানি আলভেস। ব্রাজিলীয় তারকার হাতে ধরা সরু লাঠির উপর মানুষের মাথার খুলি। ছিলেন ভেরাত্তিও। ভৌতিক পোশাকেই বোন রাফায়েল্লা ও সতীর্থদের সঙ্গে সারা রাত হ্যালোইন পার্টি করলেন ব্রাজিলের ‘ওয়ান্ডার বয়’। তারপর নিজেই সেই ছবি পোস্ট করেন ইনস্টাগ্রামে।
উৎসবের আবহে চমক দিলেন দানি আলভেস-ও। জানালেন, এগারো বছর আগে লিভারপুলে তাঁর খেলার সম্ভাবনা তৈরি হওয়ার কথা। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তা ভেস্তে গিয়েছিল। সেই সময় লিভারপুলের ম্যানেজার ছিলেন রাফায়েল বেনিতেস। ব্রাজিলীয় তারকা বলেছেন, ‘‘কী কারণে শেষ মুহূর্তে সমস্ত কিছু ভেস্তে গিয়েছিল, তা বলতে পারব না। সেই সময় আমি ওদের সঙ্গে আর্থিক ব্যাপার নিয়ে আলোচনা করার মতো জায়গায় ছিলাম না।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি আমার জীবনে আরও কয়েকবার ঘটেছে। চেলসি ও রিয়াল মাদ্রিদের চুক্তিতে সই করার পরিবর্তে বার্সেলোনায় গিয়েছিলাম। জীবনের এই সমস্ত দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা থেকে বই লিখতে পারি আমি।’’
পিএসজি-র আর এক ডিফেন্ডার থিয়াগো সিলভার মতে কঠোর পরিশ্রমই সাফল্যের নেপথ্যে। তিনি বলেছেন, ‘‘পরিশ্রমের পুরস্কার পেলাম আমরা। দলের প্রত্যেকে দুর্দান্ত খেলেছে। মাঠে নেমে নিজেদের উজাড় করে দিয়েছে। আমরা একটা দল হিসেবে খেলেছি।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘আমরা প্রমাণ করতে পেরেছি, পিএসজি এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দল। আমাদের এই ভাবেই এগিয়ে যেতে হবে।’’