Advertisement
E-Paper

বার্সেলোনা শব্দটা শুনলেই খেপে যেতেন কার্লোস স্যার

মোহনবাগান এবং ইউনাইটেডের হয়ে আই লিগ খেলা সৌভিক চক্রবর্তী তিন বছর খেলছেন দিল্লি ডায়নামোসে। এ বার নিয়ে তিন বার আইএসএলে তিনি ঘর করেছেন তিন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন কিংবদন্তির সঙ্গে। সেই বিরল অভিজ্ঞতার কথা জানালেন আনন্দবাজার-কে....মোহনবাগান এবং ইউনাইটেডের হয়ে আই লিগ খেলা সৌভিক চক্রবর্তী তিন বছর খেলছেন দিল্লি ডায়নামোসে। এ বার নিয়ে তিন বার আইএসএলে তিনি ঘর করেছেন তিন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন কিংবদন্তির সঙ্গে। সেই বিরল অভিজ্ঞতার কথা জানালেন আনন্দবাজার-কে....

সোহম দে

শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:১৬

আলেসান্দ্রো দেল পিয়েরো

(২০০৬ বিশ্বকাপজয়ী)

আইএসএল ২০১৪

কানাঘুষো শুনছিলাম দিল্লি কোনও বড় মাপের প্লেয়ার আনছে। সেটা যে দেল পিয়েরো, প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারিনি। একটু নার্ভাসও ছিলাম এত বড় ফুটবলারের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগ করার কথা ভেবে। মনে আছে ২০০৬ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে জার্মানির বিরুদ্ধে দেল পিয়েরোর সেই অসাধারণ গোল। বাইরে থেকে দেল পিয়েরোকে খুব রাগী মনে হতে পারে। কিন্তু একসঙ্গে খেলার সুবাদে বলতে পারি এত বড় মাপের ফুটবলার হয়েও ও কিন্তু মাটির মানুষ।

অনুশীলনে ভুল হলেই ধরিয়ে দিতেন। কী ভাবে আরও নিঁখুত শট বা ফিনিশ করা যায় দেখিয়ে দিতেন। দেল পিয়েরো ডায়েটের ক্ষেত্রে খুব কঠোর। ফ্যাট জাতীয় খাবার একদম খান না। অলিভ অয়েলে রান্না করা খাবার খেতেন। ইতালিয়ান হওয়ায় পাস্তা খেতে ভালবাসতেন। আমি একটু বেশি মশলাদার খাবার খেতে ভালবাসি। কিন্তু বেশি তেল জাতীয় কিছু খেতে দেখলেই বকাঝকা করতেন। বারবার বলতেন, ‘‘পেশাদার ফুটবলে থাকতে গেলে বুঝেসুঝে খেতে হবে।’’ আজও মনে আছে নর্থইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে ম্যাচে আমি লাল কার্ড দেখেছিলাম। ড্রেসিংরুমে বসে আছি। মন খারাপ। দেল পিয়েরো ড্রেসিংরুমে ঢুকেই আমাকে বললেন, ‘‘লাল কার্ড তো হতেই পারে। তার জন্য মন খারাপ করার কিছু নেই।’’ যে কোনও মেন্টরের মতোই ছিল তার উদ্বুদ্ধ করার ব্যাপারটা। চলে যাওয়ার আগে আমাকে কথা দিয়েছিলেন জার্সি দিয়ে যাবেন। সেই সই করা জার্সি আজও আলমারিতে রাখা আছে।

রবের্তো কার্লোস

(২০০২ বিশ্বকাপজয়ী)

আইএসএল ২০১৫

কার্লোস স্যারকে কোচ হিসেবেও পেয়েছিলাম বলে সব সময় নিজেকে সৌভাগ্যবান বলে মনে করি। প্রথমেই বলে রাখি কার্লোস স্যার কিন্তু পুরো ‘প্র্যাঙ্কস্টার।’। মানে সব সময় হাসিঠাট্টা করতে ভালবাসতেন। প্লেয়ারদের খ্যাপানো ছিল তাঁর আনন্দের জায়গা। ট্রেনিং গ্রাউন্ডের আবহটাই ছিল বেশ মজার। কিন্তু ম্যাচের সময় আবার আদ্যন্ত সিরিয়াস। কার্লোস স্যার অত বেশি রাগ করতেন না। কোনও জিনিস ঠিক ভাবে না হলেও সেটা বুঝিয়ে বলতেন। চিৎকার করতেন না। কিন্তু একটা শব্দ অবশ্যই তাঁকে রাগিয়ে দিত— বার্সেলোনা। এগারো বছর রিয়াল মাদ্রিদে খেলেছেন তাই সেটা হওয়া স্বাভাবিক। আমি বার্সেলোনা সমর্থক। শিনগার্ড দুটোতেও বার্সা লেখা। সেটা দেখলেই বলতেন, ‘‘বার্সাকে কেন সমর্থন করো। রিয়ালই সেরা ক্লাব।’’ আইএসএল চলাকালীন লা লিগায় এল ক্লাসিকো ছিল। বার্সেলোনা বনাম রিয়াল মাদ্রিদ। আমার পছন্দের ক্লাব ৪-০ জিতেছিল। পরের দিন কার্লোস স্যারের মাথা গরম। বারবার বলছেন, ‘‘বার্সেলোনা জিতেছে তো কী হয়েছে। রিয়াল অনেক বেশি ট্রফি জিতেছে।’’ ডায়েট বলতে গ্রিলড চিকেন আর স্যালাড খেতে ভালবাসতেন। আর সেই ফ্রি-কিক?

অবিশ্বাসের চোখে তাকিয়ে থাকতাম যখন দেখতাম কার্লোস স্যার যে সাইড দিয়ে বল ঢোকানোর কথা বলতেন, সেখান দিয়ে গোলে ঢোকাতেন। গোলার মতো ফ্রি-কিক মারতেন। টিভিতে যা দেখেছিলাম অবিকল এক গতিতে। কিছু দিন আগেও হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠিয়েছিলাম যে আমি আবার দিল্লিতে সই করেছি। তাতেও রিপ্লাই এসেছিল, ‘‘অল দ্য বেস্ট।’’

জিয়ানলুকা জামব্রোতা

(২০০৬ বিশ্বকাপজয়ী)

আইএসএল ২০১৬

কার্লোস স্যারের থেকে একদম উল্টো ধরনের কোচ। খুব শান্ত স্বভাবের। নিজের জগতেই থাকতে ভালবাসেন। মাথায় যেন আগের থেকেই ছকে নামেন ঠিক কী ভাবে অনুশীলন করাবেন। খুব ট্যাকটিকাল প্র্যাকটিস করান। ইংল্যান্ডে প্রাক্ মরসুমে অনুশীলন করতে গিয়েছিলাম। সব সময় আগেভাগেই বিপক্ষের খুঁটিনাটি নিয়ে বলতেন। জামব্রোতা স্যারের সবচেয়ে বড় গুণ হচ্ছে সতীর্থদের জন্য সময় বের করেন। আজ ফ্রান্সেস্কো তোত্তির জন্মদিন। যার সঙ্গে জামব্রোতা ইতালির ২০০৬ বিশ্বকাপ দলে ছিলেন। তোত্তির জন্য সময় করে খুব সুন্দর একটা ভিডিও মেসেজ তৈরি করেছেন। আশা করছি জামব্রোতা স্যারের সঙ্গে এ বার ট্রফিটাও জিতব।

Souvik Chakraborty ISL Roberto Carlos
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy