Advertisement
০৫ মে ২০২৪

রোনাল্ডো একাই একশো

চেনা সেই গোল-উৎসব দেখতে দেখতে একপ্রকার অভ্যস্ত সবাই। হাত দুটো ছড়িয়ে দিয়ে লাফ। যারপর সেই হুঙ্কার। যেন বুঝিয়ে দেওয়া— আমিই সেরা।

হুঙ্কার: চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম পর্বে আলিয়াঞ্জ এরিনায় বায়ার্নের বিরুদ্ধে গোল করার পরে রোনাল্ডোর উৎসব। ছবি: এএফপি।

হুঙ্কার: চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম পর্বে আলিয়াঞ্জ এরিনায় বায়ার্নের বিরুদ্ধে গোল করার পরে রোনাল্ডোর উৎসব। ছবি: এএফপি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৪৪
Share: Save:

চেনা সেই গোল-উৎসব দেখতে দেখতে একপ্রকার অভ্যস্ত সবাই। হাত দুটো ছড়িয়ে দিয়ে লাফ। যারপর সেই হুঙ্কার। যেন বুঝিয়ে দেওয়া— আমিই সেরা।

বুধবার রাতে আলিয়াঞ্জ এরিনায় প্রত্যাবর্তন ঘটল সেই গোল-উৎসবের। কয়েক সপ্তাহ আগে পর্যন্ত প্রাক্তন রিয়াল মাদ্রিদ কোচ বার্ন়়ড শুস্টার তাঁকে কটাক্ষ করেছিলেন। বলেছিলেন, তাঁর মধ্যে আর ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা নেই। কিন্তু কী ভুলটাই না ভেবেছিলেন। কারণ ফুটবলারের নাম যখন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো তখন তাঁর মতো প্রতিভা আর কতদিনই বা শান্ত থাকেন।

রোনাল্ডোর সাম্প্রতিক ফর্ম খারাপ থাকলেও আবার সঠিক সময় গোল করে দলের ত্রাতা হয়ে উঠলেন তিনি। সি আর সেভেনের দুরন্ত পারফরম্যান্সের সৌজন্যে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে বায়ার্নকে ২-১ হারাল রিয়াল।

গোল-খরা কাটিয়ে আলিয়াঞ্জ এরিনা সাক্ষী থাকল রোনাল্ডো-ম্যাজিকের। কখনও ড্রিবল। কখনও আবার দূরপাল্লার শট। দিনের শেষে আবার প্রথম ফুটবলার হিসেবে ইউরোপিয়ান ক্লাব টুর্নামেন্টে একশো গোল করার নজিরও গড়লেন রোনাল্ডো।

কোয়ার্টার ফাইনাল ড্র হওয়ার পরে সবাই একপ্রকার ধরেই নিয়েছিল রিয়াল হয়তো পারবে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই শক্তিশালী বায়ার্ন দলের বিরুদ্ধে রিয়ালের জেতার সুযোগ নেই। কিন্তু সবাই হয়তো ভুলে গিয়েছিলেন রিয়ালে একজন রোনাল্ডো আছেন। যিনি নিমেষেই খেলার ছবি পাল্টে দিতে পারেন। বায়ার্ন ম্যাচে ঠিক যা হল। প্রথমার্ধের শেষে এক গোলে এগিয়ে ছিল বায়ার্ন। বিরতির ঠিক পরেই রোনাল্ডো সমতা ফেরান। আবার ৭৭ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোল করে জয় তুলে আনেন সি আর সেভেন। রোনাল্ডোকে ট্যাকল করেই জাভি মার্তিনেজ লাল কার্ড দেখেন। ম্যানুয়েল নয়্যার গোলে না থাকলে হয়তো হ্যাটট্রিকও করতে পারতেন রিয়াল তারকা।

রোনাল্ডোর বিরুদ্ধে বহু দিনের অভিযোগ, তিনি নাকি বড় ম্যাচে হারিয়ে যান। কিন্তু সতীর্থের প্রশংসায় পঞ্চমুখ মার্সেলো সে সব সমালোচনাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। বরং রোনাল্ডোর সমালোচকদের উদ্দেশে মার্সেলো বলছেন, ‘‘আমি জানি না কেন রোনাল্ডোকে কটাক্ষ করা হয়। ও সব সময় দলের জন্য ভাবে। অনুশীলনেও খুব খাটে।’’ মার্সেলো আরও বলছেন, ‘‘রোনাল্ডো জোড়া গোল করায় খুশি। কিন্তু গোল করার থেকেও ও বেশি খুশি রিয়াল জেতায়।’’

বায়ার্ন-রিয়াল ম্যাচ শেষে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট জুড়ে চলছিল রোনাল্ডো-বন্দনা। প্রাক্তন ইংল্যান্ড স্ট্রাইকার গ্যারি লিনেকার যেমন পোস্ট করেন, ‘‘রোনাল্ডো সত্যি একজন গোল মেশিন।’’ আবার জনৈক এক রিয়াল ভক্ত পোস্ট করেন, ‘‘রোনাল্ডো প্রমাণ করল কেন ও বিশ্বসেরা।’’

রোনাল্ডোর সেঞ্চুরিতে খুশি রিয়াল ম্যানেজার জিনেদিন জিদানও। যিনি জানিয়ে দিলেন দু’গোল করেও রোনাল্ডো সন্তুষ্ট ছিলেন না। জিদান বলছেন, ‘‘রোনাল্ডো একশোটা গোল করায় আমি খুশি। কিন্তু ও সন্তুষ্ট ছিল না। কারণ আরও গোল করতে পারত।’’

দুটো অ্যাওয়ে গোলের সুবিধে নিয়ে মাদ্রিদে ফিরলেও জিদান মনে করছেন এখনও বায়ার্ন এই টাইয়ে ভাল ভাবেই রয়েছে। ‘‘আরও একটা নব্বই মিনিট বাকি আছে। দ্বিতীয় লেগে বায়ার্ন কঠিন একটা চ্যালেঞ্জ দেবে,’’ বলেছেন জিদান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE