স্নাযুর রোগে আক্রান্ত প্রাক্তন নেদারল্যান্ডস ফুটবলার রিকসেন ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে ম্যাচ শেষে রোনাল্ডো।
একই রাতে স্বস্তি ও চিন্তায় জিনেদিন জিদান।
স্বস্তি, কারণ রিয়াল মাদ্রিদ ৫-১ জিতেছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ গ্রুপে শীর্ষে বসে আছে দল। শেষ ষোলোয় প্রায় উঠে গিয়েছে রিয়াল।
চিন্তা, কারণ দল পাঁচ গোলে জিতলেও ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর নাম নেই গোলদাতার তালিকায়। চোটের থেকে ফেরার পর হঠাৎ করেই গোলের সামনে ধারাবাহিকতা হারিয়েছেন সিআর সেভেন।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দুর্বল লেগিয়া ওয়ারস-কে হারাতে কোনও সমস্যা হবে না রিয়ালের, সেটা পরিষ্কারই ছিল। কিন্তু রিয়াল-ভক্তদের আশা ছিল, সিআর সেভেনের হ্যাটট্রিকটাও সঙ্গে হবে ‘আইসিং অন দ্য কেক।’
দ্বিতীয় স্বপ্নটা স্বপ্নই থেকে গেল। রিয়াল যতই গোলের মালা পরাক, রোনাল্ডোর তাতে কোনও অবদান ছিল না। নিজের একশোতম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ গোল পেতে এখনও অপেক্ষা করতে হবে সিআর সেভেনকে। যদিও জিদান মুখে কিছু বলতে চাইছেন না রোনাল্ডোর সাময়িক গোল খরা নিয়ে। রিয়ালের ফরাসি কোচের মতে, গোল না করলেও সতীর্থদের সাহায্য তো করলেন পর্তুগিজ মহাতারকা। ‘‘আমার তো মনে হয় রোনাল্ডো দারুণ খেলেছে। সব সময় সবাইকে পাস বাড়িয়েছে। সাহায্য করেছে সতীর্থদের। আজকে গোল পায়নি
ঠিকই। কিন্তু চার দিন বাদে আবার ম্যাচ আছে রিয়ালের। সেখানে ঠিক গোল করবে রোনাল্ডো।’’
সিআর সেভেনের গোলশূন্য রাতে বাকিরা শূন্যস্থানটা ভাল করে পূর্ণ করলেন। গ্যারেথ বেলের গোলে ১-০ এগোয় রিয়াল। মার্সেলো ও জোদলোউইকের(আত্মঘাতী) গোলের সৌজন্যে ম্যাচ এক তরফা লড়াইয়ে পরিণত করে রোনাল্ডোর দল। দানিলোর খারাপ ট্যাকলে পেনাল্টি পায় লেগিয়া। স্পটকিক থেকে গোল করেন লেগিয়ার রাদোভিক। কিন্তু তাতেও ম্যাচে কোনও লড়াই ফেরেনি। বিরতির পরে লুকাস ও আলভারো মোরাতার গোলে ৫-১ জেতে জিদানের দল। ম্যাচের আগে আবার পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে লেগিয়া সমর্থকরা।
দু’ম্যাচে এগারো গোল। রিয়াল যেন রিয়ালের মেজাজেই। জিদান বলছেন, ‘‘দলের এই খেলায় আমি খুশি। গোলগুলো খুব ভাল ছিল। পারফরম্যান্সের বিচারেও আমরা বিপক্ষকে কোনও সুযোগ দিইনি।’’
মাঠে গোল না পেলেও মাঠের বাইরে অবশ্য প্রমাণ পাওয়া গেল রোনাল্ডোর উদারতার। নার্ভের রোগে আক্রান্ত নেদারল্যান্ডসের প্রাক্তন ফুটবলার ফের্নান্দো রিকসেন তাঁর পরিবার-সহ উপস্থিত ছিলেন রিয়ালের ঘরের মাঠ বের্নাবাওয়ে। ম্যাচ শেষে এরিকসেনকে নিজের জার্সি উপহার দেন রোনাল্ডো। এরিকসেনের স্ত্রী ও মেয়ের সঙ্গে ছবিও তোলেন সিআর সেভেন।
গোল করে বেলের রিকভারি সেশন। ছবি: টুইটার।
বের্নাবাও এ রকম অসংখ্য স্মরণীয় রাতের সাক্ষী থেকেছে। কিন্তু ইংল্যান্ডের কিঙ্গ পাওয়ার স্টেডিয়ামের কাছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ছিল অলীক সেই স্বপ্ন। কিন্তু এই মরসুমে ইংল্যান্ডের সেই স্টেডিয়ামও এক টুকরো রূপকথার স্বাদ পেয়েছে। প্রিমিয়ার লিগের টেবলে লেস্টারের অবস্থা নিম্নগামী হলেও ইউরোপীয় যুদ্ধে এখনও অপরাজিত থাকল ক্লদিও র্যানিয়েরির দল। মঙ্গলবার রাতে কোপেনহ্যাগেনকে ১-০ হারাল লেস্টার। ম্যাচের একমাত্র গোল করলেন রিহাদ মাহরেজ।
ক্লাবের ইতিহাসে নিজেদের প্রথম মরসুমে তিন ম্যাচে টানা তিনটে জয় পেল লেস্টার। আর একটা ম্যাচ জিতলে নকআউটেও পৌছে যাবে র্যানিয়েরির দল। দল জিতলেও অবশ্য খুশি ছিলেন না ক্লাবের ইতালীয় কোচ। র্যানিয়েরির রাগ, ইউরোপের এই ফর্ম প্রিমিয়ার লিগে কেন দেখাতে পাচ্ছে না লেস্টার। ‘‘আজকের জয়ে আমি খুশি। কিন্তু প্রিমিয়ার লিগের কথা ভাবলে রাগ হয়,’’ বলছেন প্রিমিয়ার লিগজয়ী কোচ। ইপিএলে লেস্টার ফর্ম নিয়ে রীতিমতো চিন্তিত র্যানিয়ের। যিনি যোগ করেন, ‘‘আমার প্রথম লক্ষ্য লিগে ভাল পজিশনে শেষ করা। মাঝে মাঝে এ রকম হয় নতুন কোনও টুর্নামেন্টে খেললে সেটাকেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে বসে ফুটবলাররা।’’
অন্য ম্যাচে আবার লিয়ঁকে ১-০ হারাল জুভেন্তাস। গোল করলেন জুয়ান কুয়াদ্রাদো। ম্যাচে আবার পেনাল্টি বাঁচান জুভেন্তাসের কিংবদন্তি গোলকিপার জিয়ানলুইগি বুফন। স্পোর্টিং লিসবনকে ২-১ হারাল বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। গোল করলেন পিয়ের এমেরিক অবামেয়াং ও জুলিয়ান উইগল। বেয়ার লেভারকুসেন-এর বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচে ০-০ ড্র করল টটেনহ্যাম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy