ছবি: পিটিআই।
একটা অপেক্ষার অবসান হলেও আর একটা অপেক্ষা থাকছে। সচিন তেন্ডুলকরের খেলাধুলো নিয়ে ভবিষ্যত্ পরিকল্পনা জানার অপেক্ষা। যার ইঙ্গিত রয়েছে, কিন্তু পুরোপুরি প্রকাশ পাচ্ছে না।
বুধবার ভারতীয় কিংবদন্তি ক্রিকেটারের আত্মজীবনী প্রকাশ হওয়ার পর থেকে বহু অজানা তথ্য উঠে আসছে মাস্টার-ব্লাস্টারের লেখায়। এখনও যা নিয়ে ক্রিকেটমহলে চর্চা তুঙ্গে। পাশাপাশি খেলাধুলোর সঙ্গে জড়িয়ে থাকতে সচিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একটি প্রস্তাবের কথা জানিয়েছেন, এ রকমও ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে তাঁর কথায়। তবে পরিকল্পনাটা ঠিক কী তার আন্দাজ দেননি সচিন।
এ দিন ইংল্যান্ডে তাঁর আত্মজীবনী প্রকাশ অনুষ্ঠানে সচিন বলে দেন, “আমি খেলোয়াড় ছিলাম, চিরকাল খেলোয়াড়ই থাকব। সম্প্রতি আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে আমি খেলা নিয়ে একটা প্রস্তাব দিয়েছি। উনি প্রস্তাবটা বিবেচনা করছেন।”
কে বলবে টগবগে আত্মবিশ্বাসের এই সচিনই অভিষেক সফরে নিজের উপরই আস্থা হারিয়ে ফেলেছিলেন! আত্মজীবনীতে সচিন সে রকমই লিখেছেন। “টেস্ট ক্রিকেটে আমার প্রথম ইনিংসের পর ওয়াসিম আর ওয়াকারের আক্রমণের সামনে নিজেকে সমুদ্রে ভেসে থাকা মানুষ মনে হয়েছিল। নিজের উপর ক্রমশ আস্থা কমছিল। নিজেকেই প্রশ্ন করছিলাম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার মতো উপযুক্ত হয়ে উঠতে পারব তো?”
বইটির তৃতীয় অধ্যায়ে এই প্রসঙ্গে সঙ্গে সচিন আরও লিখেছেন, “সেটা পাকিস্তান সফর ছিল বলে নিজের উপর সন্দেহটা আরও চেপে বসতে লেগেছিল। বিপক্ষে ইমরান খান, ওয়াসিম আক্রম, ওয়াকার ইউনিসের মতো ফাস্ট বোলার আর সঙ্গে মুস্তাক আমেদ আর আব্দুল কাদিরের মতো লেগ স্পিনার! অভিষেক ম্যাচে এক থেকে বড় পরীক্ষা আর কী হতে পারত আমার!”
কেমন ছিল টেস্টে সচিনের অভ্যর্থনাটা? “ওয়াসিমের ওভারের তৃতীয় বলের মুখোমুখি হলাম। দুরন্ত একটা বাউন্সার দিয়ে স্বাগত জানানো হল আমাকে। ওয়াসিমের বোলিং নিয়ে যা হোমওয়ার্ক করেছিলাম তাতে মনে হচ্ছিল পরের বলটা ইয়র্কার হবে। কিন্তু পরের বলটা বাউন্সার। পাঁচ আর ছ’নম্বর বলটাও বাউন্সার ছিল। ওভার শেষে নিজেকে নিজেই বললাম টেস্ট ক্রিকেটে স্বাগত।”
গোটা কেরিয়ারে সচিনের চোট-আঘাতের জন্য তাঁর ভারী ব্যাট ব্যবহার করার অভ্যাস কতটা দায়ী সে ব্যাপারে চর্চা কম হয়নি। সত্যিই কি হাল্কা ব্যাটে খেলতে তাঁর অস্বস্তি হত? এ ব্যাপারে সচিন কিন্তু সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, “বেশ ভারী ব্যাটই ব্যবহার করতাম। অবশ্য বেশ কয়েক বার আমাকে হাল্কা ব্যাট নিয়ে খেলার উত্সাহ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কখনই আমি হাল্কা ব্যাটে স্বচ্ছন্দ ছিলাম না। আমার ব্যাটের সুইংটাই তো ব্যাটের ওজনের উপর নির্ভর করত।”
উঠতি ক্রিকেটারদের জন্য পরামর্শও রয়েছে সচিনের। বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা কোরো না। “যতক্ষণ তুমি স্বচ্ছন্দবোধ করছ, ততক্ষণ কোথায় খেলছ, বিপক্ষে কে, সেটা বড় ব্যাপার নয়। তাই টেকনিক্যাল পরিবর্তনে সতর্ক থাকতে হয়।”
উদ্বোধনেই দেড় লক্ষ
ব্যাটের মতো সচিন তেন্ডুলকরের কলমেও রেকর্ড। ভারতীয় মহাতারকার আত্মজীবনী আগাম বায়নার দিক থেকে সমস্ত রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে। এমনটাই দাবি সচিনের বইয়ের প্রকাশক সংস্থার। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশক সংস্থাটি জানিয়েছে উদ্বোধনের দিন দেড় লক্ষেরও বেশি চাহিদা থাকার ব্যাপারটা সব রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে। যা এখনকার কয়েকজন বিশ্বখ্যাত লেখকদের বইয়ের চাহিদার থেকেও বেশি। প্রকাশক সংস্থার এক কর্তা বলেন, “ব্যাটের মতো মাস্টার-ব্লাস্টারের কলমও রেকর্ড করে ফেলবে তাতে আশ্চর্যের কিছু নেই। অভিষেকেই দেড় লক্ষের চাহিদা দেখে দারুণ লাগছে। এ তো সবে শুরু।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy