Advertisement
E-Paper

সাইয়ের আবাসিক শিবিরে ডাক রাজিবুল-বিশালের

স্থানীয় মির্জাপুর হাজি সুলেমান হাইস্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ে সে। পড়াশোনার পাশাপাশি ফুটবল মাঠেও নিয়মিত দেখা যায় তাকে। তবে দরিদ্র পরিবার থেকে আসা রাজিবুলের খেলাধুলো চালাতে গিয়ে পদে পদে প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। রাজিবুলের কথায়, ‘‘বাবা হাওড়ায় জিনিসপত্র ফেরি করেন। মা বিড়ি বাঁধেন। বাড়ির যাবতীয় কাজকর্ম আমাকেই করতে হয়।’’ 

আব্দুল হাসিম

শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৯ ০৫:৪০
বিশাল শেখ ও রাজিবুল ইসলাম।

বিশাল শেখ ও রাজিবুল ইসলাম।

ছোট্ট এক চালার টালির ঘর। কালিমাখা দেওয়ালে টাঙানো বুটজোড়া। কাদামাখা। আর তা নিয়েই আপাতত আশায় বুক বেঁধেছে বেলডাঙার প্রত্যন্ত সরুলিয়া গ্রামের রাজিবুল ইসলাম। সম্প্রতি সাইয়ের (স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া) সল্টলেক কেন্দ্রে অনূর্ধ্ব ১৫ বছর বয়সীদের দীর্ঘমেয়াদি আবাসিক প্রশিক্ষণ শিবিরের বাছাই তালিকায় স্থান পেয়েছে সে। আগামী সোমবার মেডিক্যাল টেস্ট। ওই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারলেই সাইয়ে থেকে ফুটবল শেখার সুযোগ পাবে সে। ভাঙা টালির বাড়িতে আপাতত ঢুকে পড়েছে এক টুকরো চাঁদের আলো।

স্থানীয় মির্জাপুর হাজি সুলেমান হাইস্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ে সে। পড়াশোনার পাশাপাশি ফুটবল মাঠেও নিয়মিত দেখা যায় তাকে। তবে দরিদ্র পরিবার থেকে আসা রাজিবুলের খেলাধুলো চালাতে গিয়ে পদে পদে প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। রাজিবুলের কথায়, ‘‘বাবা হাওড়ায় জিনিসপত্র ফেরি করেন। মা বিড়ি বাঁধেন। বাড়ির যাবতীয় কাজকর্ম আমাকেই করতে হয়।’’

গত চার বছর ধরে স্থানীয় ‘ বড়ুয়া যুবক সঙ্ঘে’র ফুটবল অ্যাকাডেমিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফুটবল অনুশীলন করে আসছে সে। ওই ক্লাবের এক কর্মকর্তা শুক্রবার জানালেন, সম্প্রতি সাইয়ের প্রতিনিধিরা প্রাথমিক বাছাইপর্ব করতে এসেছিলেন। সেখানে রাজিবুলের খেলা তাঁদের পছন্দ হয়ে যায়। গত ১২ তারিখ সল্টলেকে আরেক প্রস্ত বাছাইপর্ব ছিল। সেখানেও সুযোগ পেয়েছে সে। মেডিক্যাল টেস্টে খরচ দেড় হাজার টাকা। রাজিবুলের অ্যাকাডেমি সেই খরচ দিচ্ছে।

অন্যদিকে, বহরমপুরের রাধারঘাটের বাসিন্দা বিশাল শেখও জেলা থেকে সাইয়ের প্রশিক্ষণ শিবিরে জায়গা করে নিয়েছে। শারীরিক প্রতিকূলতাকে জয় করেই সে এতদূর পৌঁছতে পেরেছে বলে জানালেন তার বাবা নান্টু শেখ। ছোটবেলা থেকে মামার বাড়িতেই বড় হয়েছে বিশাল। তার বাড়ি লালবাগের মোতিঝিল রোডে। গোয়ালজান হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র বিশাল। ছেলে সাইয়ে প্রশিক্ষণের সুযোগ পেতে চলায় তৃপ্তির হাসি বাবার মুখে। নান্টু শেখ বললেন, ‘‘ছোটবেলায় গুল কয়লার টুকরো ওর চোখে ঢুকে গিয়েছিল। তারপর ধীরে ধীরে চোখে কালো আস্তরণ পড়তে শুরু করলে অস্ত্রোপচার পর্যন্ত করাতে হয়েছিল। ছেলেকে বারবার ফুটবল খেলতে বারণ করেছি। ও শোনেনি। এতদিন পর মনে হচ্ছে, ছেলেকে বারণ করে ভুলই করেছি।’’

ছোট থেকেই করুণাশঙ্কর ভট্টাচার্য ফুটবল অ্যাকাডেমিতে অনুশীলন করছে বিশাল। ওই অ্যাকাডেমির সম্পাদক জগন্ময় চক্রবর্তী এদিন বললেন, ‘‘নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসেছে বিশাল। বাবা শ্রমিকের কাজ করেন। ওকে নিয়ে ওর পরিবারের অনেক স্বপ্ন। আশাকরি, সোমবার মেডিক্যাল টেস্টেও জেলার দুই কিশোর উত্তীর্ণ হবে।’’

Football SAI Sports Authority of India
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy