Advertisement
E-Paper

পদক এলে অনেক কিছুর জবাব দিতে চান সানিয়া

অ্যান্ডি মারে বলেছেন, যাদের কাছে হারলাম তারা বিশ্বের অন্যতম সেরা ডাবলস টিম। এটা কি তারিফ হিসাবে দেখছেন? সদ্য অলিম্পিক্স মিক্সড ডাবলসের ফাইনালে ওঠা ভারতীয় টেনিস-রানি কোর্টের আগ্রাসী মেজাজটাই বজায় রেখে যেন ধারালো ফোরহ্যান্ডে ওড়ালেন প্রশ্নকর্তা সাংবাদিককে।

রতন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৬ ০৩:০৭
পদকের কাছে সানিয়া-বোপান্না। ছবি: পিটিআই।

পদকের কাছে সানিয়া-বোপান্না। ছবি: পিটিআই।

অ্যান্ডি মারে বলেছেন, যাদের কাছে হারলাম তারা বিশ্বের অন্যতম সেরা ডাবলস টিম। এটা কি তারিফ হিসাবে দেখছেন?

সদ্য অলিম্পিক্স মিক্সড ডাবলসের ফাইনালে ওঠা ভারতীয় টেনিস-রানি কোর্টের আগ্রাসী মেজাজটাই বজায় রেখে যেন ধারালো ফোরহ্যান্ডে ওড়ালেন প্রশ্নকর্তা সাংবাদিককে। ‘‘ও তো বলবেই! আমিও বিশ্বের এক নম্বর এটা ভুলে যাবেন না। সিঙ্গলসের পারফরম্যান্সটাও দেখে নেবেন। কী খেলেছি, কী কী জিতেছি?’’ সপাট পাল্টা। যা বোধহয় একমাত্র সানিয়া মির্জার পক্ষেই সম্ভব!

কিছুক্ষণ আগেই বারহার তিন নম্বর কোর্টে বিশ্বের দু’নম্বর অ্যান্ডি মারে আর হেদার ওয়াটসনের ব্রিটেনকে ছিটকে দিয়ে এসেছেন সানিয়া আর রোহন বোপান্না। জিতেছেন ৬-৪, ৬-৪। অনেকেই ভাবতে পারেননি, এ রকম শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে এত সহজে জয় আসবে। প্রশ্নটা ছিল সেখান থেকেই। তবে সানিয়া জানালেন, মারেদের বিরুদ্ধে জেতার হোমওয়ার্কটা করেই নেমেছিলেন কোর্টে। ‘‘ওদের নানা ভিডিও দেখে একটা গেমপ্ল্যান তৈরি করেছিলাম আমরা। সেটা ছিল, অ্যান্ডিকে যতটা সম্ভব খেলার বাইরে রেখে সবচেয়ে অস্বস্তিকর শটগুলো মারতে বাধ্য করা। তাতে আমরা সফল,’’ বলে দিলেন সানিয়া।

সানিয়া-বোপান্না একমত, শুক্রবার রাতের পর থেকে সামনের রাস্তা আরও কঠিন। সেমিফাইনালে প্রতিপক্ষ ভেনাস উইলিয়ামস আর ভারতীয় বংশোদ্ভূত রাজীব রামের মার্কিন জুটি। তবে সানিয়া-বোপান্নাকে আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছে। সানিয়া বলে দিলেন, ‘‘আমরা এখনও অনেক উন্নতি করতে পারি। অ্যান্ডির মতো চ্যাম্পিয়নকে হারিয়ে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। পরের লড়াই আবার দু’জন অসাধারণ চ্যাম্পিয়নের বিরুদ্ধে। তাই এই জয়ের সব আবেগ ভুলে গিয়ে আবার কোর্টে নেমে সেরাটা দিতে হবে। তার জন্য নিজেদের তাজা রাখা খুব জরুরি।’’

সানিয়া এ দিন ছিলেন দারুণ ফর্মে। বিশেষ করে মারের বিষ মাখানো সার্ভিসগুলো রিটার্ন করার ক্ষেত্রে হায়দরাবাদি মেয়ে ছিলেন অনবদ্য। যাঁর কথায়, ‘‘মিক্সড ডাবলসে অবধারিত ভাবে মেয়েদেরই বেশি আক্রমণ করা হয়। তাই জানতাম ওরা আমাকেই টার্গেট করবে। তা ছাড়া ছেলেদের সার্ভিস সবসময়েই অনেক বেশি শক্তিশালী। আর এ তো মারে। তবে আমি তৈরি ছিলাম। আজ রিটার্নগুলো খুব ভাল হয়েছে।’’

বোপান্নার ফার্স্ট সার্ভিসের সমস্যা অবশ্য রয়ে গেল এ দিনও। যিনি জুটির ভাল খেলার কৃতিত্ব অনেকটাই দিলেন সানিয়াকে। বললেন, ‘‘সানিয়া রিটার্নগুলো ভাল মারায় নেটে আমার কাজ সহজ হয়ে যায়। সানিয়া দারুণ আগ্রাসী প্লেয়ার বলে কোর্টে ওর সঙ্গে তাল মেলানোও সহজ হচ্ছে।’’ আর বেশ দৃঢ় গলাতেই বলে গেলেন, ‘‘সেমিফাইনালে আমাদের জেতার সম্ভাবনা যথেষ্ট।’’

শ্যুটিং থেকে শুরু করে তিরন্দাজি। সর্বত্র— হতাশা। তার মধ্যে সানিয়া-বোপান্না যেন মুক্তির আলো। একশো কুড়ি কোটির দেশকে পদকের স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছেন। রিও আসার আগে মনে হয়েছিল, ভারতীয় টেনিস যে রকম বিতর্কে জর্জরিত, তাতে যদি একটা ব্রোঞ্জ আসে সেটাই বড় ব্যাপার হবে। কিন্তু সানিয়া-বোপান্না যে ফর্মে, সোনা বা রুপো পেলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। পরিস্থিতি যা, ভেনাস-রাজীব রামকে হারাতে পারলেই ফাইনালে যাবেন সানিয়ারা। এই জুটির পক্ষে সব সম্ভব। ভারতীয় শিবিরের মেজাজটা হল, বড় কোনও অঘটন না ঘটলে রিওয় পদক-খরা টেনিস কোর্টই কাটাবে।

অলিম্পিক্সের এই মঞ্চ তো যথেষ্ট সঙ্গও দিচ্ছে সানিয়াদের। মিক্সড ডাবলসে সেরা দুই বাছাই হেরেছে, তিন নম্বর নাদাল-মুগুরুজা নাম তুলে নিয়েছেন। ফলে চতুর্থ বাছাই ভারতীয় জুটিরই রমরমা। মারেও ম্যাচে নেমেছিলেন দেড় ঘণ্টা আগে সিঙ্গলস কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে আসার ক্লান্তি নিয়ে।

সানিয়া-রোহন অবশ্য বলছেন, জেতার আসল কারণটা তাঁদের কোর্টের বোঝাপড়া। সানিয়া তো বলেই দিলেন, ‘‘অনেকেই বলছেন, আমরা নাকি কখনও একসঙ্গে খেলি না, একসঙ্গে অনুশীলন করি না। খেলা দেখে কী মনে হচ্ছে? আমরা কিন্তু পদকের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছি। পদক পেলে অনেক কিছুর জবাব দেওয়া যাবে।’’

Rio Olympics sania mirza rohan bopanna
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy