Advertisement
E-Paper

নির্বাচকদের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ লোঢা বৈঠকে

সুপ্রিম কোর্ট ও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যে লড়াইয়ে এ বার নয়া মোড়। নির্বাচকদের চারিত্রিক দুর্নীতি ও তাতে বোর্ডের সায় নিয়ে নাকি অভিযোগ তুলেছেন বিচারপতি আর এম লোঢা প্যানেলের সচিব। যে ঘটনা সবিস্তারে জানিয়ে ক্ষুব্ধ বিসিসিআই সচিব অজয় শিরকে বোর্ডের পদাধিকারীদের রিপোর্ট পাঠান।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৬ ০৩:২০

সুপ্রিম কোর্ট ও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যে লড়াইয়ে এ বার নয়া মোড়। নির্বাচকদের চারিত্রিক দুর্নীতি ও তাতে বোর্ডের সায় নিয়ে নাকি অভিযোগ তুলেছেন বিচারপতি আর এম লোঢা প্যানেলের সচিব। যে ঘটনা সবিস্তারে জানিয়ে ক্ষুব্ধ বিসিসিআই সচিব অজয় শিরকে বোর্ডের পদাধিকারীদের রিপোর্ট পাঠান। যে রিপোর্ট বুধবার মিডিয়ায় ফাঁস হয়ে যাওয়ায় ঝড় উঠল দেশের ক্রিকেট মহলে। এমনকী শোনা যাচ্ছে, যার জেরে পদত্যাগের হুমকিও নাকি দিয়েছেন কয়েকজন নির্বাচক।

অভিযোগে কী বলা হয়েছে?

৯ অগস্ট শিরকের সঙ্গে বৈঠকে লোঢা প্যানেলের সচিব গোপাল শঙ্করনারায়ণন নাকি অভিযোগ তোলেন নির্বাচকদের চরিত্র নিয়ে। শিরকে সে দিনের বৈঠক নিয়ে দেওয়া রিপোর্টে এই ঘটনার কথা উল্লেখ করেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘প্যানেল-সচিব সে দিন বৈঠকের শেষে অভিযোগ করেন, নির্বাচকরা নাকি তরুণ ক্রিকেটারদের দলে সুযোগ দেওয়ার পরিবর্তে তাদের মায়েদের সঙ্গে সহবাস করে থাকেন। তাঁর ধারণা, এটা নিয়মিত ঘটনা আর বিসিসিআই সব জেনেশুনেও এই ব্যাপারে মুখ ফিরিয়ে থাকে। নির্বাচকদের ঘৃণ্য ও নিম্নরুচিসম্পন্নও বলেছেন গোপাল।’’

রাতে লোঢা প্যানেলের পক্ষ থেকে অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করা হয়। এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘জাতীয় বা রাজ্যের নির্বাচকদের বিরুদ্ধে কোনও রকম অভিযোগ করা হয়নি। তাঁদের নিম্নরুচিসম্পন্ন বা ঘৃণ্যও বলা হয়নি। রাজ্যসংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে আমাদের কাছে নানা রকম অভিযোগ আসছিল। এবং এক রাজ্য নির্বাচকের বিরুদ্ধে টিমে প্লেয়ার নেওয়ার বদলে সহবাসের অভিযোগও উঠেছিল। সেই সব অভিযোগ নিয়ে বিসিসিআই কিছু করেছে কি না, আমরা সেটাই জানতে চেয়েছিলাম।’’

দু’পক্ষের লড়াইয়ে যা চলছে, তা নিয়ে আলোচনার জন্য ২৮ অগস্ট বোর্ডের সঙ্গে জরুরি বৈঠকও ডেকে দিল লোঢা প্যানেল। বোর্ডের বিরুদ্ধে নাকি ঝুরি ঝুরি অভিযোগ জমা পড়ছে প্যানেলের কাছে। সেগুলোরই ব্যাখ্যা চাওয়া হবে সে দিন ওই বৈঠকে।

লোঢা প্যানেলের প্রতিক্রিয়া রাতে পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু তার আগে দেশ জুড়ে নির্বাচক মহলে যথেষ্ট ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এক সর্বভারতীয় টিভি চ্যানেল দাবি করে, এক সিনিয়র নির্বাচক নাকি পদত্যাগের হুমকি দিয়েছেন। আর এক প্রাক্তন জাতীয় জুনিয়র নির্বাচক আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত এক প্যানেলের সচিবের মুখে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য মানায় না। তা ছাড়া তিনি কোনও নির্দিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন না। যা শুনছি, তাঁর অভিযোগ দেশের নির্বাচকদের বিরুদ্ধে।’’

শিরকে তাঁর রিপোর্টে জানিয়েছেন, ‘‘গোপাল শঙ্করনারায়ণন বৈঠকের শেষে অনেকক্ষণ ধরে এই নিয়ে কথা বলার পর প্যানেলের বিচারপতিরাই তাঁকে থামিয়ে দিতে বাধ্য হন। ‘এখানেই বিষয়টা শেষ করুন’, এই কথা বলে।’’ এই ব্যাপারে এ দিন গোপালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘আমাদের বৈঠকে কী কথাবার্তা হয়, তা সবই গোপনীয়। এ সব নিয়ে কথা বলার অধিকার আমার নেই। বোর্ডেরও কারও নেই।’’ অজয় শিরকে এই নিয়ে একটা কথা বলতেও রাজি হননি।

বুধবার প্যানেলের সঙ্গে যুক্ত এক সূত্র সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছে, ‘‘প্যানেলের কাছে (বোর্ডের বিরুদ্ধে) অনেক অভিযোগ জমা পড়েছে। সে জন্যই প্যানেল রবিবার এক জরুরি বৈঠক ডেকেছে।’’ কী ধরনের অভিযোগ, তা অবশ্য বলতে চাননি এই সূত্র। তবে বোর্ডের বার্ষিক সভা ডাকার প্রসঙ্গে এই বৈঠকে আলোচনা হবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। বোর্ড ২১ সেপ্টেম্বর বার্ষিক সভা ডাকলেও তা
আইনসিদ্ধ হবে কি না, সেই প্রশ্ন আছেই। রবিবারের বৈঠকে হয়তো বোর্ডকে সেটাই জানিয়ে দেবে লোঢা প্যানেল।

অক্টোবরের ১৫ তারিখের মধ্যে প্রধান ১১ সুপারিশ কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছে প্যানেল। তবে বোর্ড এখন রিভিউ পিটিশনের জবাবের অপেক্ষায় আছে। সেই রায় যত দিন না আসে, তত দিন পর্যন্ত রাজ্য সংস্থাগুলোকেও তাদের গঠনতন্ত্রে বদল আনার ব্যাপারে ধীরে চলো নীতি অবলম্বন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে গত ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে। এক বোর্ড কর্তার কথায়, ‘‘পরিস্থিতি যে রকম দ্রুত পাল্টাচ্ছে, তাতে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত সময়কেই দীর্ঘ সময় মনে হচ্ছে।’’ পঞ্চাশ দিনে এই যুদ্ধের গতিপথ কোন দিকে যাবে, কোথায় গিয়ে শেষ হবে, তা এখন কারও জানা নেই।

charge BCCI Selectors Lodha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy